জাতীয়

খাদ্যদ্রব্য নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করলে ৫ বছর কারাদণ্ড

ঢাকা, ১০ এপ্রিল – খাদ্য উৎপাদন ও মজুদ প্রতিরোধে নতুন একটি আইন করতে যাচ্ছে সরকার।

‘খাদ্যদ্রব্য ও উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩’ নামে এ আইনে শাস্তি হিসেবে রয়েছে জেল ও জরিমানা।

আইনের অধীনে বিচারিক কার্যক্রমের জন্য ‘খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত’ গঠন করা হবে। খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হচ্ছে। এ আইনের খসড়া তৈরি করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১০ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভা কক্ষে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আইনের খসড়া নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সার-সংক্ষেপে বলা হয়, সামরিক শাসনমলের জারি করা অধ্যাদেশগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ‘দ্য ফুড গ্রেইন সাপ্লাই প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯’ এবং ‘ফুড স্পেশাল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৬’- দুটো আইনকে একসঙ্গে করেও নতুন আইন করা হচ্ছে।

খাদ্যদ্রব্য ও উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ করতে আইনটি করা হচ্ছে।

এর আগে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২২’ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। দুটো আইন একসঙ্গে করেও নতুন আইনটি আনা হয়েছে। খাদ্যদ্রব্যেও উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধে একটি নতুন যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় বলে সার-সংক্ষেপে বলা হয়।

খসড়ায় বলা হয়, বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কিছু না থাকলে এ আইনের অধীন শ্রমিক বলতে খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণনে নিযুক্ত বা কোনো পরিবহন যান হতে নামানো কিংবা উঠানো, সরকারি অথবা বেসরকারি গুদামে খামালীকরণ, ডাম্পিং, স্তূপীকরণ কিংবা এতদ সংশ্লিষ্ট যে কোনো কাজে মজুরির বিনিময়ে নিয়োজিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা থাকবেন।

আইনের খসড়ায় বিভিন্ন ধরনের শাস্তিরও বিধান রাখা হয়েছে। বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় ও বিক্রয় সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের ক্ষেত্রে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদপ্তরেও প্রদত্ত বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হয়েছে- এ রূপ চিহ্নযুক্ত সিল ব্যতীত সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয় করলে তা একটি অপরাধ এবং এজন্য তিনি অনুর্ধ্ব দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

বিভ্রান্তি সৃষ্টি সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড বিষয়ে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে তা একটি অপরাধ হবে এবং সেজন্য তিনি অনুর্ধ্ব পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ১৫ লাখ টাকার অর্থদণ্ড ভোগ করবেন।

এ আইনের অধীনে কোম্পানি অপরাধ করলে বা অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা থাকলে কোম্পানির প্রত্যেক প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সচিব, অংশীদার, কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্টরা উক্ত অপরাধে সংঘটন করেছেন মর্মে গণ্য হবে।

খাদ্যদ্রব্যের মজুদ বলতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ব্যক্তি, সংস্থা, ব্যবসায়ী কর্তৃক গুদাম, দোকান, গৃহ, লাইটার, কোস্টার, যেকোনো যানে বা যেকোনো স্থানে বা আঙিনায় খাদ্যদ্রব্য জমা, স্তূপিকৃত করে রাখাকে বোঝানো হবে।

খাদ্যদ্রব্য বলতে, যে কোনো প্রকার দানাদার খাদ্যশস্য যেমন, চাল, ধান, গম ইত্যাদি; ভোজ্য তেল যেমন- সয়াবিন, পামওয়েল, সরিষা, সানফ্লাওয়ার ওয়েল, অলিভ অয়েল, সরিষার তেল এবং অন্যান্য সব প্রকার ভোজ্য তেল; খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতের কাঁচামাল, পেঁয়াজ, লবণ, চিনি, ডাল, প্রক্রিয়াজাতকৃত যে কোনো খাদ্যদ্রব্য এবং অন্যান্য প্রচলিত আইনে সংজ্ঞায়িত খাদ্য।

জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বলতে, যেসব কার্যকলাপ জনগণের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা, রোগ নিয়ন্ত্রণ, সুস্বাস্থ্য, পুষ্টি, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি বজায় রাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হয়।

সূত্র: বাংলানিউজ
এম ইউ/১০ এপ্রিল ২০২৩

Back to top button