জাতীয়

মৌলবাদী অপশক্তিকে একটি রাজনৈতিক দল পৃষ্ঠপোষকতা দেয়: তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা, ০৭ ডিসেম্বর- দেশে মৌলবাদী অপশক্তিকে একটি রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী পৃষ্ঠপোষকতা দেয় বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, তাদের একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় বলেই তারা বিভিন্ন সময় ফণা তোলার অপচেষ্টা করে।

এদের কোনো ভাবেই ফণা তুলতে দেওয়া যাবে না। তবে বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদী অপশক্তির স্থান হবে না।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানও উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর হলো এতে করে কি মৌলবাদীদের উত্থান হচ্ছে কি না জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃত পক্ষে মৌলবাদী গোষ্ঠী বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা বিভিন্ন সময় ফণা তোলার চেষ্টা করে। এদের কোনো ভাবেই ফণা তুলতে দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর আঘাত হেনেছে, যারা ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে, এরা তাদের অনুসারী। যারা ফতোয়া দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা সব কাফের, নারীরা হচ্ছে গণিমতের মাল তাদের ভোগ করা যাবে, এ ফতোয়া যারা দিয়েছিল তাদের অনুসারী হলো আজকে যারা ভাস্কর্য নিয়ে ফতোয়া দেন। তারা যে ফতোয়া দেয় সে অনুযায়ী তাদের ছবিওতো রাখার নিয়ম নেই, ছবি তুলতে পারবে না, তাদের বাবা-মারও ছবি রাখতে পারবেন না। সেটাতো তারা বর্জন করছেন না। মূল কথা হচ্ছে এ সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, মৌলবাদী অপশক্তি ঘাপটি মেরে বসে থাকে সময় সময় ফণা তোলার চেষ্টা করে। এ অপশক্তিকে পরাভুত করে বাংলাদেশ রচিত হয়েছে। সুতরাং স্বাধীন বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের রক্তের স্রোতের বিনিময়ে যে দেশ রচিত হয়েছে। সেখানে এ মৌলবাদী অপশক্তির কোনো স্থান হবে না।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের বিষয়ে আদালতে একটি মামলা হয়েছে তাদের শাস্তি দিতে আইনের আওতায় আনা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথমতো এ মৌলবাদী গোষ্ঠী অপশক্তি যারা দেশকে মধ্যযুগে নিয়ে যেতে চায়, তারা এ ধরনের ফণা তোলার অপচেষ্টা করতে পারতো না। যদি তাদের রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা না করা হতো। তাদের একটি দল একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। অথচ সেই দলের প্রতিষ্ঠাতারও দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাস্কর্য আছে। সেজন্য তারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। তারা যদি এ পৃষ্ঠপোষকতা না পেতো তাহলে তাদের পক্ষে মাঝে-মধ্যে এরকম ফণা তোলার অপচেষ্টা করা সম্ভব হতো না। আর যে মামলার কথা বলছেন মামলা হওয়া মানেই আইনের আওতায় আনা।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন দেশে গণতন্ত্র নির্বাসিত ও দেশকে কারাগার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা অতিতে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল, যাদের জন্ম অগণতান্ত্রিকভাবে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তারা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন গণতন্ত্রমনা মানুষ ও দেশের মানুষ হাসে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম তাদেরই একজন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়েছেন। আর যে সমস্ত রাজনীতিবিদ সে সময় ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট নিতে সমবেত হয়েছিলেন আমি যথেষ্ট সম্মান রেখে বলছি তাদের মধ্যে একজন হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব। তারা হচ্ছেন দল ছুট, রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া রাজনীতিবিদ। তারা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন মানুষের মুখে হাসি পায়। প্রকৃত পক্ষে বিএনপিতে কোনো গণতন্ত্র নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হচ্ছেন হত্যা, দুর্নীতির অভিযোগে সাজা প্রাপ্ত আসামি।

আরও পড়ুন- ঢাকা-শিলিগুড়ি রুটে ট্রেন চলবে ২৬ মার্চ থেকে : রেলমন্ত্রী

তিনি বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছে দুর্নীতিবাজরা যাতে তাদের দলের সর্বোচ্চ থেকে শুরু করে সব জায়গায় সুযোগ পায়। সে দল যখন এ ধরনের কথা বলে তখন লোকের মুখে হাসি পায়। আর দেশে পরিপূর্ণ বাক স্বাধীনতা ও অবাধ গণতন্ত্রের চর্চা আছে বলেই মির্জা ফখরুল ইসলামরা প্রতিদিন এ ধরনের বিশদগার করতে পারে।

ভাসানচড়ে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা আত্মঘাতী হবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন সে বিষয়টি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে এতে সমগ্র দেশের মানুষসহ রোহিঙ্গারাও স্বাগত জানিয়েছে। যে সমস্ত রোহিঙ্গা সেখানে গেছেন তারা অত্যন্ত খুশি হয়ে বলেছেন দেশে ফেরত না যাওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকতে চায়।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির এ বক্তব্যের পর মনে হয় রোহিঙ্গারা ভালো থাকুক সেটা তারা চায় না। কারণ ভাসানচরে যে সুব্যবস্থা আছে সে ব্যবস্থা ইউরোপের শরণার্থী শিবিরেও নেই। আসলে বিএনপি রোহিঙ্গাদের মঙ্গল চায় কি না সেটা নিয়ে সন্দেহ হয়। প্রকৃতপক্ষে রোহিঙ্গা ইস্যুটা টিকে থাকুক সেটা তারা চায়। কারণ বিএনপি সময় সময় এদের নিয়ে কথা বলে। বিএনপির সময় যে রোহিঙ্গারা এদেশে এসেছিল তারা এখনও আছে। তাদের সেদিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া আহ্বান জানাচ্ছি।

সূত্র: বাংলা নিউজ
আডি/ ০৭ ডিসেম্বর

Back to top button