জাতীয়

বঙ্গবাজারের পোড়া টাকা বদলে দিতে যা বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ঢাকা, ০৯ এপ্রিল – টাকার অর্ধেক পুড়ে গেলে সেই টাকা পুরোপুরি বাতিল। ওই টাকা পরিবর্তন করে নতুন টাকা দেবে না বাংলাদেশ ব্যাংক।

অর্ধেকের কম পুড়লে সেই টাকার অবশিষ্টাংশের আনুপাতিক হারে টাকা ফেরত দেবে। এক্ষেত্রে নোট পবির্তন সম্পর্কিত নীতি অনুসরণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে অনেক ব্যবসায়ীর নগদ টাকা পুড়ে গেছে। একজন ব্যবসায়ী টাকা পরিবর্তনের জন্য আইন মেনে আবেদনও করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, এ সম্পর্কিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন আছে, সেটাই অনুসরণ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত টাকার মালিক পোড়া টাকাসহ আবেদন করলে বাংলাদেশ ব্যাংক গাইডলাইন অনুসরণ করে টাকা পরিবর্তন করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।

’বাংলাদেশ ব্যাংক নোট রিফান্ড রিকুইজিশন-২০১২’ গাইডলাইনে ছেঁড়া ও পোড়া টাকার বদল সম্পর্কিত নির্দেশনা আছে। নির্দেশনার ১১ ধারাতে বলা হয়েছে, কোনো টাকার কমপক্ষে ৫১ শতাংশ অবশিষ্ট থাকলে তার মালিক আনুপাতিক হারে ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। এ জন্য তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি জিডি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্রসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি বিভাগে আবেদন করতে হবে।

পোড়া টাকার ৫১ থেকে ৭৫ শতাংশ অবশিষ্ট থাকলে মালিক পুড়ে যাওয়ার টাকার ৫০ শতাংশ পাবেন। আর ৭৬ থেকে ৯০ শতাংশ অবশিষ্ট থাকলে পাবেন ৭৫ শতাংশ। টাকার ৫০ শতাংশ পুড়লেই মালিক টাকা পরিবর্তন করতে পারবেন না; পুরো টাকা বাতিল বলে গণ্য হবে।

পুড়ে যাওয়া টাকা রিফান্ড বা ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকার মালিকের আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি বিভাগের প্রধানের নেতৃত্বে চার সদস্য কমিটি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

ছেঁড়া টাকার ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। তবে ছেঁড়া টাকার ক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের কোনো তদন্ত কমিটি বা পর্যালোচনার প্রয়োজন হয় না। কোনো টাকার টাকার ৫১ শতাংশ বা বেশি অবশিষ্ট থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি বিভাগে জমা দিলে বিভাগ থেকেই আনুপাতিক হারে বদল করা হয়। ’বাংলাদেশ ব্যাংক নোট রিফান্ড রিকুইজিশন-২০১২’ গাইডলাইনের ৯ ধারায় বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

পোড়া টাকা রিফান্ড করার ক্ষেত্রে এই নীতিমালা ২০১২ সাল থেকে অনুসরণ করা হয়। পোড়া টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে এর কোনো ব্যত্যয় হয়নি। বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের টাকা বদলে দেওয়ার ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। তবে অর্ধেক বা অর্ধেকের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত টাকার মালিক তথ্য-প্রমাণসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বরারবর আবেদন করলে টাকা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় আসতে পারে বলে জানিয়েছে অন্য একটি সূত্র। তবে এটা প্রায় অসম্ভব।

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় পাঁচ হাজার দোকান মালামাল ও নগদ টাকাসহ পুড়ে গেছে। আগের দিন দোকানে বিক্রি করে ক্যাশ বাক্সে টাকা রেখে যান কোনো কোনো দোকান মালিত। পরের দিন দোকানে আসার আগেই আগুনের লেলিহান শিখায় সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। দেখা গেছে, একজন ক্যাশবাক্স থেকে পোড়া টাকার বান্ডিল নিয়ে অঝোরে কাঁদছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একজন পোড়া টাকা পরিবর্তন করার জন্য টাকার অংশসহ প্রয়োজনীয় ফর্মালিটি মেনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি বিভাগে আবেদন করেছেন। কারেন্সি বিভাগ আবেদনটি গ্রহণ করে পরবর্তি শুনানির জন্য বৈঠকের দিন ধার্য করেছে। বৈঠকে ’বাংলাদেশ ব্যাংক নোট রিফান্ড রিকুইজিশন-২০১২’ নীতিমালা অনুসরণ করা হবে। অন্য কেউ আবেদন করলে তার ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। পোড়া টাকার অবশিষ্ট ৫১ শতাংশ বা তার বেশি হলে আনুপাতিক হারে টাকা ফেরত পাবেন।

সূত্র: বাংলানিউজ
এম ইউ/০৯ এপ্রিল ২০২৩

Back to top button