সুপ্রিম কোর্ট বারে ভাঙচুর : খোকন-কাজলসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঢাকা, ০৯ এপ্রিল – সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) ইফতার ও দোয়া মাহফিলে হামলা, ভাঙচুর হুমকি ও প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০/৬০ জন বিএনপিপন্থি আইনজীবীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (৯ এপ্রিল) শাহবাগ থানায় এজাহার দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হাসান। মামলার কপি হাতে রয়েছে।
মামলায় বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থীর নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়।
অভিযোগ রয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির উত্তর ও দক্ষিণ হলে আয়োজিত এ ইফতার মাহফিলে টেবিল ও চেয়ার ভাঙচুর করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ছাড়া অন্যরা হলেন-ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজি মো. কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহাদিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি, অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ, ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দীকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছোটন, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির রকি, অ্যাডভোকেট ফয়সাল সিদ্দীকি, অ্যাডভোকেট সফিউল আলম সপু, অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম সুজন, ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমদ রানজিব, অ্যাডভোকেট মো. ইসাসহ আরও ৫০/৬০ জন আইনজীবী ও কয়েকজন বহিরাগত হঠাৎ সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান এবং জামায়াতের নাম নিয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিলসহ প্রথম সমিতির ২ নম্বর হল রুম পরবর্তীত ১ নম্বর হল রুম প্রবেশ করে ইফতার অনুষ্ঠানের প্রধান বিচারপতির নাম সম্বলিত সব ব্যানার ছিড়ে ফেলে। এবং আইনজীবী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত আসনের চেয়ার টেবিল ভেঙে ও কাপড় ওপরে ফেলে সমস্ত সমিতি ভবন একটি অরাজক অবস্থার সষ্টি করে।
এসময় উপরোক্ত আসামিদের বেআইনী কর্মকাণ্ডে বাধা দিত গেলে তারা সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট পানু খান ও অ্যাডভোকেট মো. শাহনওয়াজসহ অন্যান্য আইনজীবীদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে আহত করে।
অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম ১২ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট নূর আলম সিদ্দীকী সোহাগ প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করতে গেলে ভিকটিম হাত দিয়ে ঠেকানোর সময় তার ডান হাত মারাত্মক রক্তাক্ত হয়। তখন উপরোক্ত আসামিরা সাধারণ আইনজীবীদের ইফতার অনুষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করে এবং ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের সুপ্রিম কার্টের আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সমিতির আমন্ত্রণে ইফতার অনুষ্ঠান যোগদানর জন্য সমিতির নিচ তলার সিঁড়ি দিয় ২য় তলায় ওঠার সময় আসামিরা তাকে গালাগাল করে এবং ৭ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর আসামির নির্দশে তার দিকে পানি ভর্তি বোতল ছুঁড়ে মারে সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নসহ ফৌজদারী অপরাধ করে।
সমিতির সাধারণ আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন উপরোক্ত আসামিরা যেকোনো সময় সংগঠিত হয়ে আরও বড় কোনো অঘটন ঘটিয় সাধারণ আইনজীবীদের পেশাগত এ পবিত্র স্থানে ব্যাপক জান-মালের ক্ষয়ক্ষতিসহ যে কোনো ধরনের বড় ক্ষতি করতে পারে।
ঘটনার পর ইফতার শেষ করে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ায় এবং পর দিন শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সমিতির অফিস বন্ধ থাকায় সমিতির নির্বাচিত নেতা ও সিনিয়র সদস্যরা এ ঘটনা সম্পর্কে আলাচনা করে এ মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ০৯ এপ্রিল ২০২৩