ফুটবল

মেসিদের ম্যাচ দেখতে অফিসে মিথ্যা বলায় চাকরি গেল তরুণীর

বুয়েনোস আইরেস, ২৫ মার্চ – প্রিয় দল আর্জেন্টিনার খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন। তবে অফিসে মিথ্যা বলে ছুটি নিয়েছিলেন হুইলেন বারবিয়েরি নামের তরুণী। অবশেষে এর খেসারতও দিতে হয়েছে ২১ বছর বয়সীকে। শেষমেষ চাকরিটাই হারালেন তিনি।

কাতার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা বিশ্বজয়ের পর গতকাল প্রথমবারের মতো মাঠে নামে। ঘরের মাঠ মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে পানামার মুখোমুখি হন লিওনেল মেসিরা। ম্যাচে ২-০ গোলে জয়ও পায় আলবিসেলেস্তারা।

এ ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন সান্তা ফে শহরের পৌরসভার অন্তর্গত ইভা পেরন হেলথ সেন্টারে কাজ হুইলেন বারবিয়েরি। তবে অসুস্থতার ভুয়া কাগজ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভুলটা করে ফেলেন সংবাদমাধ্যমে আবেগের আতিশয্যে সত্য কথাটা বলে। তিনি আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’–এর সঙ্গে কথা বলার সময় অসুস্থতার মিথ্যা অজুহাত দেখানোর কথা জানিয়ে দেন বারবিয়েরি। এরপরই মূলত চাকরি শেষ।

মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে বেলা সাড়ে তিনটা নাগাদ বারবিয়েরিকে টিওয়াইসি স্পোর্টস মুঠোফোনের অনুষ্ঠানে দেখা যায়। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, (ম্যাচ দেখতে) কী ফেলে এসেছেন? হুইলেন বারবিয়েরি কোনো রাখঢাক না রেখেই স্প্যানিশ ভাষায় বলেন, ‘লাবুরো।’ বাংলায় এর অর্থ হলো ‘কাজ’।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘রোলিকে শুভেচ্ছা। তিনি আমার বস। হয়তো এখন আমাকে টিভিতে দেখছেন। একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট তিনি পেয়েছেন। কিন্তু আমি ভালো আছি। ডায়রিয়া হয়েছিল কিন্তু নিশ্চিত থাকুন এটা ঠিক হয়ে যাবে।’ বারবিয়েরির বস রোলির পুরো নাম রোলি সান্তাক্রোচ্চে। তার আরেকটি পরিচয়, তিনি সান্তা ফে শহরের মেয়র।

মুখে হাসি নিয়ে বারবিয়েরি বলেন, ‘জাদুবলে আমি বন্ধুদের নিয়ে মনুমেন্তালে উপস্থিত হতে পেরেছি। রোলি, শপথ করে বলছি, দ্বিগুণ কাজ করে দেব। শুধু আমাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া উপভোগ করতে দাও।’

এরপর সঞ্চালক তার কাছে জানতে চান, যদি চাকরি চলে যায় তাহলে! পাল্টা উত্তরে তিনি বলেন, ‘সেটা কাল দেখা যাবে। আজ তো আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন!’

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্য ক্লারিন জানিয়েছে, বারবিয়েরি পরের দিনই চাকরি থেকে ছাঁটাই হওয়ার চিঠি পেয়েছেন।

এ নিয়ে আর্জেন্টিনার রেডিও অনুষ্ঠান ‘তোদোস এন লা ওচো’য় হাজির হয়ে সেই নারীকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা নিয়ে কথা বলেছেন সান্তা ফে শহরের মেয়র রোলি সান্তাক্রোচ্চে। তিনি বলেন,‘আনুষ্ঠানিকভাবে সে এখন আর পৌরসভার অধীনে কাজ করে না। কী ঘটেছে তা জানার পর দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে আমাদের সঙ্গে আর কাজ করবে না, এটা কষ্টের। সে আমার ব্যক্তিগত সচিবের বোন। করোনা মহামারির সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। আমার অধীনেই পৌরসভায় ঢুকেছিল।’

চাকরি থেকে ছাঁটাইয়ের ব্যাখ্যাও দিয়ে সান্তা ফে মেয়র বলেন, ‘তাদের প্রজন্মকে বোঝা খুব কঠিন। আমারও খারাপ লাগছে। কিন্তু সে এমন ভুল করেছে যে জন্য খেসারত দিতেই হবে।’

যদিও সেই তরুণী পরে ইনস্টাগ্রামে ক্ষমা চেয়েছেন মেয়রের কাছে, ‘ফুনেসের (সান্তা ফে) মেয়রের কাছে ক্ষমা চাইছি। ক্যামেরার সামনে মজা করেছিলাম। বুঝতে পারিনি ঘটনা এত দূর গড়াবে।’

তবে সংবাদমাধ্যম ‘লা ক্যাপিটাল’ মেয়েটির ইনস্টাগ্রাম স্টোরির সূত্র মারফত জানায়, আর্জেন্টিনা-পানামা ম্যাচ দেখতে যাওয়ার অনুমতি নিয়েছিলেন বারবিয়েরি। এক সহকর্মীর সঙ্গে কাজের দিন নাকি পাল্টে নেন, ‘আমি বিতর্ক তৈরি করতে চাই না। আমি জানি, এই বাজারে চাকরি পাওয়া কত কঠিন!’

সূত্র: আমাদের সময়
আইএ/ ২৫ মার্চ ২০২৩

Back to top button