টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে স্পি‌রিট পানে ৪ জ‌নের মৃত্যু

টাঙ্গাইল, ২৪ মার্চ – টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে স্পিরিট পানে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আরো দুইজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের পালিমা বাজারের জনসেবা হোমিও ফার্মেসি থেকে গত ১৮ মার্চ (শনিবার) রাতে অ্যালকোহল জাতীয় ‘স্পিরিট’ পান করায় বিভিন্ন সময়ে তারা মারা যান।

মৃতরা হ‌লেন- উপ‌জেলার পালিমা গ্রামের মৃত ছামান আলীর ছেলে ফারুক মিয়া (৩৫), কুচুটি গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে জুলহাস মিয়া (৪২), একই গ্রা‌মের মৃত বক্কর আলীর ছেলে আমছের আলী (৫০) ও তারাপদ কর্মকার। এছাড়া অসুস্থ‌্য হ‌য়ে‌ছেন বিলপালিমা গ্রামের মুক্তার আলীর ছেলে মেহেদী ও কুচুটি গ্রামের জুয়েল।

এদিকে স্পিরিট পান করে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ও শোক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, শুধু নারান্দিয়া নয়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা মাদকে ছেয়ে গেছে। এতে যুবসমাজ ধ্বংসের পথে। এ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

জানা যায়, ১৮ মার্চ রাতে স্পিরিট পান করে অসুস্থ হওয়ায় ৫ জনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার রাত ও রোববার (১৯ মার্চ) সকালের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রোববার রাত ২টার দিকে পালিমা গ্রামের মৃত ছামান আলীর ছেলে ফারুক মিয়া (৩৫) ও সোমবার (২০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুচুটি গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে জুলহাস মিয়া (৪২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুচুটি গ্রামের মৃত বক্কর আলীর ছেলে আমছের আলী (৫০) নিজ বাড়িতে মারা যান। এ ছাড়া সম্প্রতি তারাপদ কর্মকার নামের আরেক ব্যক্তি স্পিরিট পান করে মারা গেছেন।

এ ঘটনায় অসুস্থরা হচ্ছেন বিলপালিমা গ্রামের মুক্তার আলীর ছেলে মেহেদী ও কুচুটি গ্রামের জুয়েল। এর মধ্যে মেহেদীকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনার পর থেকে পালিমা বাজারের জনসেবা হোমিও ফার্মেসি বন্ধ করে দোকানের মালিক-কর্মচারীরা পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান জানান, নিহত জুলহাস, আমছের আলী, ফারুকসহ পাঁচজন শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে পালিমা বাসস্ট্যান্ডের জনসেবা হোমিও ফার্মেসি থেকে অ্যালকোহল জাতীয় স্পিরিট কিনে পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন ও বাড়িতে এসে একজন মারা গেছেন। মেহেদী নামে একজনকে ঢাকার একটি হাসপাতালে স্থানান্তর (রেফার্ড) করা হয়েছে। সম্প্রতি আরো একজন স্পিরিট খেয়ে মারা গেছেন।

নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে পালিমা বাসস্ট্যান্ডের জনসেবা হোমিও ফার্মেসি থেকে অ্যালকোহল জাতীয় স্পিরিট বেচাকেনা হচ্ছে। ফার্মেসিতে অবৈধ স্পিরিট বিক্রি বন্ধের জন্য জনসেবা ফার্মেসির মালিক সামাদকে আগেও নিষেধ করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় নারান্দিয়া বাজারের ব্যবসায়ী বিবেক মোদক দীর্ঘদিন যাবৎ মদ ও স্পিরিট বিক্রি করে আসছেন। এর আগেও তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন।’

কালিহাতী থানার নারান্দিয়া বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই মিন্টু চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘আজ শুক্রবার দুপুরে নারান্দিয়া বাজারের কালিমন্দিরের পাশের একটি মুদি দোকান থেকে অবৈধ মদ বিক্রির সময় বিবেক মোদক নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

কালিহাতী থানার ওসি মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, স্পিরিট পান করে নিহত হওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। থানায় কেউ অভিযোগও করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২৪ মার্চ ২০২৩

Back to top button