ক্রিকেট

পোস্টারবয় সাকিবের জন্মদিন আজ

ঢাকা, ২৪ মার্চ – মাগুরার ফায়সাল, ড্রেসিংরুমের ময়না আর বাংলাদেশের সাকিব। ক্রিকেটার হিসেবে যে যাত্রা শুরুই হত না নাম্বার সেভেন্টি ফাইভের। সাকিবের পছন্দ ছিল ফুটবল। খেলতেনও তা। পাড়ায় একদিন ক্রিকেট খেলতে গিয়ে একজন আম্পায়ারের চোখে পড়েন। সেখান থেকে বিকেএসপি-বয়সভিত্তিক হয়ে জাতীয় দলে ডাক পান ২০০৬ সালে। ওই যে শুরু। সাকিব ছুটেছেন নিজস্ব গতিতে। ২০০৯ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে অলরাউন্ডার র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে উঠে আসেন সাকিব। টেস্টেও নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করে সেরা অলরাউন্ডারের আসন দখল করেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই সেরা অলরাউন্ডার হন তিনি। যা ক্রিকেট বিশ্বে একমাত্র ও বিস্ময়কর ঘটনা।

শুক্রবার (২৪ মার্চ) বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসানের জন্মদিন। জীবনের ৩৫ বসন্ত পার করে ৩৬ বছর বয়সে পা দিলেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।

সাকিব আল হাসান-সব্যসাচী এক ক্রিকেটার, যার রেকর্ডবুকের এক একটি পাতা বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক একটি ইতিহাস। পরিসংখ্যান কিংবা দলের জয়ে অবদান, সবকিছুতেই সাকিব অনন্য, অবিশ্বাস্য! শুধু কি মাঠে? সাকিব মাঠে যেমন বুক চিতিয়ে লড়তে জানেন, মাঠের বাইরেও। তিনি দিন-দুনিয়ার তোয়াক্কা করেন না। কে কি ভাবল, তাতে থোড়াই কেয়ার। তিনি কী ভাবছেন, সেটিই সাকিবের কাছে বড়।

মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে, তিনি সবর্দাই থাকতে চান পাদপ্রদীপের আলোয়। কখনও অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়ে পান প্রশংসা, কখনওবা কোনো ভক্তের মোবাইল ভেঙে বা হুটহাট কারো বিরুদ্ধে মুখ খুলে কুড়ান সমালোচনা। সাকিব তো এমনই। আর দশজন মানুষের থেকে আলাদা।

বাংলাদেশের অনেক জয়ের মহানায়ক এই সাকিব। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। এমন অনেক রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি যে রেকর্ড বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারই আগে করতে পারেনি। তাছাড়া ক্যারিয়ারের অনেকটা সময়ই কাটিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনো বা ব্যাট হাতে আবার কখনো বোলিং দিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেন সাকিব। শুধু তাই নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেও সাকিব দারুণ খেলেছেন। আইপিএল, বিপিএল, বিগ ব্যাশ, সিপিএল, কাউন্টি ক্রিকেট থেকে শুরু করে বিশ্বের নামকরা সকল ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেই সাকিবের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। সাকিবের আগে বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারই এত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ পায়নি। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক বড় প্রাপ্তি সাকিব।

ওয়ানডের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে লাল বলের টেস্ট ক্রিকেটেও অলরাউন্ডারের শীর্ষস্থান দখল করেন সাকিব। এরপর টি-টোয়েন্টিতে। ২০১৫ সালে বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই শীর্ষ অলরাউন্ডার হওয়ার কীর্তি গড়েন সাকিব।

বর্তমানে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডারের র‍্যাঙ্কিংয়ে সবার শীর্ষে আছেন সাকিব। টেস্টে আছেন তিন নম্বরে। ১৭ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২৩০টি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। তাতে ৩৭ গড়ে তার রান ৭০৮৬ আর বল হাতে উইকেট ৩০১টি। টেস্টে ৬৫ ম্যাচে তার রান ৪৩৬৫। এই ফরম্যাটে সাকিবের উইকেট ২৩১টি। ফরম্যাটটিতে এক ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ১৯ বার। দেশের জার্সিতে সাকিব টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ১১২টি। তাতে ২৩ গড়ে সাকিবের রান ২২৮১। আর বল হাতে নিয়েছেন ১৩১ উইকেট। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই বল ও ব্যাট হাতে ধারাবাহিক পারফর্ম করা এমন ক্রিকেটার ক্রিকেটের ইতিহাসে বিরল।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২৪ মার্চ ২০২৩

Back to top button