ইসলাম

তারাবিহ নামাজ না পড়লে রোজা হবে কি?

আরবি ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘রাহাতুন’ অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। তারাবিহ নামাজ পড়াকালে প্রতি দুই রাকাত বা চার রাকাত পরপর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই ‘তারাবিহ’। দীর্ঘ নামাজের কঠোর পরিশ্রম লাঘবের জন্য প্রতি দুই রাকাত, বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করে দোয়া ও তসবিহ পাঠ করতে হয় বলে এ নামাজকে ‘সালাতুত তারাবিহ’ বা তারাবিহ নামাজ বলা হয়।

মাহে রমজানে রাত্রিকালে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বেতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে ‘তারাবিহ নামাজ’ বলা হয়।

রোজার প্রয়োজনীয় মাসলা-মাসায়েল জানা সবারই জরুরি। তবে রোজা নিয়ে এখনো অনেক মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। যেমন তারাবি না পড়লে কি রোজা হবে?

রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট তারাবিহ নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

অপরদিকে রমজানের পুরো মাস মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকার নাম হলো রোজা, যা মুসলমানদের জন্য ফরজ।

এখন প্রশ্ন হলো, তারাবির নামাজ না পড়লে রোজা হবে কি না। অনেকে মনে করেন, তারাবির নামাজ না পড়লে রোজা হবে না। আসলে বিষয়টি ঠিক নয়। তারাবির নামাজ কোনো কারণে কেউ পড়তে না পারলে অনেকে মনে করেন, তারাবি যেহেতু পড়তে পারলাম না, তাহলে রোজা রেখে লাভ নেই। বিষয়টি একদমই ঠিক নয়।

কেননা, তারাবির নামাজ হলো সুন্নতে মুয়াক্কাদা, যা পালনে বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু রোজা রাখায় আছে। রোজা রাখা ফরজ, যা অবশ্যই পালনীয়। তারাবির নামাজ রাসুল (সা.) পড়েছেন। তার ধারাবাহিকতায় এই নামাজ মুসলমানরা পড়ে আসছেন। হজরত ওমর ফারুক (রা.) থেকে এখন অবধি ২০ রাকাত তারাবির নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় হয়ে আসছে। বাংলাদেশের সব মসজিদেই ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়া হয়।

কিন্তু যদি কেউ তারাবির নামাজ পড়তে না পারার জন্য পরবর্তী সময়ে রোজা না রাখেন, তাহলে তিনি অনেক বড় ভুল করবেন। কেননা, তারাবি হচ্ছে সুন্নত আর রোজা ফরজ। ফরজ মানে অবশ্যপালনীয়। তাই রোজার সঙ্গে তারাবির কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু রোজা রেখে তারাবির নামাজ পড়লে তাতে অধিক সওয়াব পাওয়া যাবে।

রমজান মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। তাই এ মাসে তারাবির নামাজের মাধ্যমে পবিত্র কোরআন খতম দেওয়া হয়। আপনি যদি রমজানের পুরো মাস ধারাবাহিকভাবে তারাবির নামাজ পড়তে পারেন, তাহলে আপনি পবিত্র কোরআন খতম দেওয়ার সওয়াবও পেয়ে যাবেন। কিন্তু যদি কেউ তারাবির নামাজ পড়তে না পারেন, তাতে সমস্যা নেই।

আইএ

Back to top button