জাতীয়

মাঝরাতেও টিসিবির পণ্য নিতে শত শত মানুষের ভিড়

ঢাকা, ২৪ মার্চ – দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস। রমজানকে ঘিরে নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে। বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। এ অবস্থায় সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু করেছে সরকার। টিসিবির সরবরাহকারীর মাধ্যমে ফ্যামিলি কার্ড দিয়ে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। তাই কিছুটা সাশ্রয়ের আশায় টিসিবির পণ্য পেতে রাতেও সরবরাহ গুদামের সামনে ভিড় করতে দেখা গেছে শত শত মানুষকে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাত ১১টার দিকে রামপুরা ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে টিসিবির একটি পণ্য সরবরাহ পয়েন্টে এমন চিত্র দেখা যায়।

এদিন ওই ওয়ার্ডে টিসিবির ডিলারের পণ্য আসে রাত সাড়ে ৮টায়। সেটা জেনে যান ওই এলাকার কিছু ফ্যামিলি কার্ডধারী ক্রেতা। এরপর একে অন্যকে জানিয়েছেন মোবাইলে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সেখানে শত শত ক্রেতার লাইন পড়ে যায়। বাধ্য হয়ে রাত সাড়ে ৯টায় পণ্য বিক্রি শুরু করেন ডিলার।

সারাদেশে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে নিত্যপণ্য বিক্রি শুরু করেছে সরকার। তবে ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে বিশৃঙ্খলার কারণে টিসিবির সরবরাহকারীর মাধ্যমে ফ্যামিলি কার্ড দিয়ে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। ফ্যামিলি কার্ড নিয়েও সরবরাহকারীর দোকানের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে নিম্নআয়ের মানুষদের। সময়-অসময়ে তারা পণ্য পেতে ধরনা দিচ্ছেন।

এদিন সেখানে শত শত মানুষের লাইনে পুরুষের থেকে নারীর সংখ্যাই বেশি দেখা যায়। তারাবি নামাজ শেষে আশপাশের এলাকা থেকে পুরুষরা আসছেন। যে পরিমাণ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছেন তাতে সেহরি পর্যন্ত টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চালাতে হতে পারে বলে জানান ডিলারের কর্মচারীরা।

লাইনে দাঁড়ানো আবদুল আজিজ নামের এক ক্রেতা বলেন, মোবাইলে এক প্রতিবেশী পণ্য দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে এসেছি। পণ্য নিতে পারলে চিন্তা শেষ। বাজারে যে দাম তাতে কয়েকদিন ধরে অল্প অল্প করে কিনে সংসার চালাচ্ছি।

লাভলি বেগম নামে একজন বলেন, রোজা শুরু হয়েছে। ছোলা, খেজুর লাগবে। তাই রাতেই আসলাম। পরে পাই কিনা তার তো ঠিক নেই।

তবে অনেকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে অপেক্ষার পর ফিরে যান। শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকালেও পণ্য দেওয়া হবে বলে ডিলার তাদের আশ্বস্ত করেন।

টিসিবি ডিলার আমিনুল ইসলাম বলেন, মানুষের চাপে বাধ্য হয়ে বিক্রি শুরু করেছি। বৃহস্পতিবার বরাদ্দ পেতে সন্ধ্যা হয়েছে। স্পটে এসেছি সাড়ে ৮টায়। দোকানে পণ্য আনার পরেই শত শত মানুষের ভিড় করেছে। তাদের দাবি, যত রাতই হোক পণ্য দিতে হবে।

রমজান মাস উপলক্ষে টিসিবি ৫৭০ টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে তেল, ডাল, চিনি, খেজুর, ছোলা রয়েছে।

পবিত্র রমজান উপলক্ষে গত ৯ মার্চ থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রি শুরু করছে সংস্থাটি। এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্নআয়ের পরিবারের মধ্যে দুই পর্বে চলবে এ কার্যক্রম। প্রথম পর্বের কার্যক্রম শুরু হয়েছে ওই দিন (বৃহস্পতিবার)।

ডিলারদের দোকান/নির্ধারিত স্থায়ী স্থাপনা থেকে সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ও তাদের নির্ধারিত তারিখ ও সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী এ বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

একজন কার্ডধারী একবারে দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, চিনি, ছোলা এবং এক কেজি খেজুর কিনতে পারছেন। কার্ডধারীরা প্রতি কেজি চিনি ৬০ টাকা, খেজুর ১০০ টাকা, মসুর ডাল ৭০ টাকা, ছোলা ৫০ টাকা এবং সয়াবিন তেল ১১০ টাকা লিটারে কিনছেন।

সূত্র: জাগো নিউজ
এম ইউ/২৪ মার্চ ২০২৩

Back to top button