পাবনা

চিনিকলে আখ মাড়াই চালু রাখার আহ্বান শ্রমিকদের

পাবনা, ০৫ ডিসেম্বর- লোকসানের নামে ছয়টি চিনিকলের আখ মাড়াই বন্ধ করার চলমান প্রক্রিয়া থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশন ও বাংলাদেশ চিনিশিল্প করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন নামে দুটি সংগঠন। ছয়টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ করার প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে দেশের ১৫টি চিনিকল চালু রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।

শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচার স্বাধীনতা হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানায় সংগঠন দুটি।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন চিনিকলে লোকসান কমিয়ে আনতে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১৫টি চিনিকলের মধ্যে নয়টি চিনিকলে উৎপাদন পরিচালনা করা হবে। আর বাকি ছয়টি চিনিকলে উৎপাদিত আখ নিকটস্থ চিনিকলে সমন্বয়পূর্বক মাড়াই করার বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে। আখ মাড়াই স্থগিত করা চিনিকলগুলোর মধ্যে রয়েছে, পাবনা সুগার মিল, কুষ্টিয়া সুগার মিল,পঞ্চগড় সুগার মিল, শ্যামপুর সুগার মিল, রংপুর সুগার মিল ও সেতাবগঞ্জ সুগার মিল।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দুটির পক্ষে জানানো হয়, চিনিকল বন্ধ করার ঘোষণা আমাদের হতাশ করেছে। এটা করা হলে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী চাকরি হারাবে এবং লাখ লাখ আখচাষি আখচাষ করা থেকে বঞ্চিত হবে।

চিনকল খুলে দেয়ার দাবিতে আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন দেশের সব চিনিকলের মিল গেট এলাকায় দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।

বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বাদশা লিখিত বক্তব্যে বলেন, সরকারের কাছে আগামী মাড়াই মৌসুমে ১৫টি চিনিকলের মাড়াই অব্যাহত রাখার দাবি জানাচ্ছি। লোকসানের নামে ছয়টি মিলের আখ মাড়াই বন্ধ করার চলমান প্রক্রিয়া আমাদের হতাশ করেছে। এটা করলে হাজার হাজার শ্রমিক চাকরি হারাবে ও লাখ লাখ চাষী আখচাষ করা থেকে বঞ্চিত হবে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সংগঠন দুইটি কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে শাহজাহান আলী বাদশা বলেন, ৭ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন প্রত্যেক মিলগেটে আখচাষি ও শ্রমিক-কর্মচারীদের সমন্বয়ে দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। ৯ ডিসেম্বর প্রতিটি চিনিকল এলাকার মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএন) মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠিসহ স্বারকলিপি দেয়া হবে। ১৫ ডিসেম্বররের মধ্যে দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।

এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছয়টি চিনিকল বন্ধ না রেখে সকল চিনিকল চালু রাখার আবেদন জানান।

পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সভাপতি মজাহারুল হক প্রধান বলেন, ছয়টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ করলে কৃষকরা আখ চাষ করবে না। আর আখ না থাকলে এমনিতেই এ মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। বেকার হয়ে পড়বে হাজার হাজার শ্রমিক। আমরা এটা হতে দিতে পারি না। একবার কোনো মিল বন্ধ হলে সেটা আর চালু হয় না।

আরও পড়ুন : প্রবাসীদের জন্য আলাদা আদালতের দাবি ব্যারিস্টার সুমনের

চিনিশিল্প করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, আধনিকতার নামে চিনিকল বন্ধ হতে দেয়া যাবে না। চিনিকল চালু রেখেই একে আধুনিক করতে হবে। পুরোনো যন্ত্রপাতি মেরামত ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হলে এসব কারখানার উৎপাদন ব্যয় কমবে। আখে চিনি আহরণের মাত্রাও বাড়বে। এ সময় তিনি কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মতো প্রতিটি চিনিকলেই ভিনেগারসহ অন্য পণ্য উৎপাদনে জোর দেয়ার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে চিনিশিল্প করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক, সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখন।

সূত্রঃ জাগো নিউজ
আডি/ ০৫ ডিসেম্বর

Back to top button