‘কোটি টাকা আত্মসাৎ’, নরসিংদীর সাবেক সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা
গাজীপুর, ১৪ মার্চ – দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোমবার নরসিংদী সদরের সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার নিহার রঞ্জন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়, গাজীপুর-এ মামলা হয়েছে।
দুদকের ওই কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন।
নিহার রঞ্জন বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত ও মহাপরিদর্শক নিবন্ধন-ঢাকা কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর থানার কারফা এলাকায়। পিতার নাম নরেন্দ্র বিশ্বাস।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, নরসিংদী সদরের সাব-রেজিস্ট্রার থাকাকালে নিহার রঞ্জন ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নরসিংদী সদর অফিসে দলিল সম্পাদনকালে উৎস কর বাবদ আদায়কৃত অর্থ সংশ্লিষ্ট ফি বহিতে প্রদত্ত যোগফল প্রকৃত যোগফল অপেক্ষা কৌশলে কম দেখিয়ে দুই কোটি ৭০লাখ ১২হাজার ৯৮২টাকা সরকারি কোষাগারে না জমা দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
মামলার বাদি বলেছেন, নিহার রঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর যথানিয়মে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-২-এর উপ-পরিচালক মো. জহাঙ্গীর আলম, সহকারি পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালাম ও ওয়াহিদ মঞ্জর সোহাগ গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম গত বছরের ৩০ মার্চ অভিযান চালিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নরসিংদী সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল সম্পাদনকালে রেজিস্ট্রি খরচ/সরকারি রাজস্ব আদায় বাবদ অর্থ অর্থাৎ উৎস কর, স্থানীয় সরকার কর, রেজিস্ট্রেশন ফি ও স্ট্যাম্প ডিউটি ফি বাবদ আদায়কৃত অর্থ/ পে-অর্ডার সমূহ দিনভিত্তিক পৃথক রেজিস্ট্রার মোতাবেক আদায়/লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু দিনশেষে প্রকৃত আদায়কৃত অর্থ/পে-অর্ডার সমূহের অর্থ ব্যাংকে কম জমা প্রদান করে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এতে দেখা গেছে দিনশেষে ফি বহিতে প্রদত্ত যোগফল প্রকৃত যোগফল অপেক্ষা কম। এভাবে ২০২১ সালের জানুয়ারি হতে নভেম্বর মাস পর্যন্ত উৎসকর বাবদ আদায়কৃত টাকা সংশ্লিষ্ট ফি বহিতে প্রকৃত আদায়ের যোগফল অপেক্ষা কম দেখিয়ে নরসিংদী সদরের সাব-রেজিস্ট্রার নিহার রঞ্জন বিশ্বাস ২ কোটি ৭০ লাখ ১২ হাজার ৯৮২টাকা আত্মসাত করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে নিহার রঞ্জন ২০২১সালের জানুয়ারিতে ২০ লাখ ১৪ হাজার ৩৭৯ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ২৫ লাখ ৫৫ হাজার ১৫২ টাকা, মার্চে ২৭ লাখ ৭ হাজার ৫৪৩ টাকা, এপ্রিলে ১৩ লাখ, ৮ হাজার, ৭৫০ টাকা, মে মাসে ১৭ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৫ টাকা, জুনে ৪৯ লাখ ৮৬ হাজার ৫৫০টাকা, জুলাইয়ে ১৫ লাখ ৩৯ হাজার ৪১০ টাকা আগস্টে ৩০ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৯ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৩০ লাখ ৯৯ হাজার ৮২২ টাকা, অক্টোবরে ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৮৮ টাকা এবং নভেম্বরে ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৭৪ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় গাজীপুর (নরসিংদী)-এর উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার জানান, বাদীর টাইপকরা এজহারটি দুদকের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে পেয়ে তা দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা হিসেবে রুজ্জু করা হয়েছে। মামলার নম্বর হলো-০১। তদন্তের পর এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ১৪ মার্চ ২০২৩