‘মমতাকে না সরানো পর্যন্ত মাথায় চুল রাখব না’
কলকাতা, ০৪ মার্চ – পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন কংগ্রেস নেতা আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচি। বারাকপুরের বাসা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টায় কৌস্তুভকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার গভীর রাতে কৌস্তুভের বারাকপুরের বাড়িতে যায় তারা। ৫ ঘণ্টা পর সকাল ৮টায় গ্রেফতার করা হয় তাকে।
কৌস্তভের মন্তব্যের ভিত্তিতে বড়তলা থানায় লিখিত অভিযোগের কারণেই এই গ্রেফতার বলে জানায় বাহিনীটি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৬, ৫০৯, ৩৫৪ এ এবং ১২০বি ধারায় আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এ দিন এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে কৌস্তুভকে জামিন দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত। এরপরেই আদালতের বাইরে এসে মাথা ন্যাড়া করেন তিনি। এ সময় কৌস্তুভের পাশে ছিলেন কংগ্রেস এবং বাম আইনজীবীরা।
এ বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। আমরা কৌস্তভের পাশে আছি। তার পরিবারকে রাত ৩টা থেকে ঘিরে রাখে পুলিশ। মনে হচ্ছিল কোনো উগ্রপন্থীকে গ্রেফতার করতে যাচ্ছে। পথে নেমে প্রতিবাদ করবে কংগ্রেস।’
শনিবার গ্রেফতারির সময় কোন ধারায় গ্রেফতার করা হচ্ছে তাকে, তা নিয়েও পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় কৌস্তভের।
গ্রেফতারের পর কৌস্তুভ বলেন, ‘বিনা কারণে আমাকে হয়রান করা হচ্ছে। এখানে আইনের শাসন নয়, শাসনের আইন চলছে। মাতৃসমা মুখ্যমন্ত্রী পুত্রসম কৌস্তুভ বাগচীকে গ্রেফতার করাচ্ছেন, এটাই আমায় জয়। মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়ে গিয়েছেন।’
বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নাম না করে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জবাবে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করে দীপক ঘোষের বইয়ের কথা তোলেন কৌস্তুভ। তা নিয়েই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের সাড়ে ৮ ঘণ্টার মধ্যে জামিনও পেলেন কৌস্তুভ।
জামিন পেয়েই আদালতের বাইরে এসে মাথা ন্যাড়া করেন কৌস্তুভ। এসময় তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারি শাসক এই ধরনের কাজ করে। তাই কোর্টের সামনে বসে চুল ন্যাড়া করলাম। যতদিন না পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাই, ততদিন পর্যন্ত মাথায় চুল গজাতে দেব না।’
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইবেন এমন প্রশ্নের জবাবে কৌস্তুব বলেন, ‘আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অধীর চৌধুরীর পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবে।’
তিনি বলেন, ‘যতদিন না পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎখাত করব, ততদিন মাথায় চুল গজাতে দেব না। কথা দিয়ে গেলাম। এর থেকে কঠিন লড়াই করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাতের ঘুম কেড়ে নেব।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আইএ/ ০৪ মার্চ ২০২৩