জাতীয়

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশটাকে গিলে খাবে

চট্টগ্রাম, ০৪ মার্চ – বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায় বলেই নির্বাচনে আসতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘এখন বিএনপির আন্দোলনের গতি কমেছে, গলার জোর বেড়েছে। আন্দোলনের গতি কমিয়ে বিএনপি নীরব পদযাত্রা করেছিল। নীরব পদযাত্রা থেকে নিরীহ মানববন্ধন করছে তারা। বিএনপি মূলত নির্বাচনকে ভয় পায়। তাই তারা নির্বাচনে আসতে চায় না।’

শনিবার সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দীন আহমেদের শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর কাজীর দেউরী এলাকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সেন্টারে এই শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তিনি বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশকে গিলে খাবে বলেও উল্লেখ করেন। ক্যান্সার আক্রান্ত মোছলেম উদ্দিন গত ৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির বিভিন্ন সমালোচনার জবাব দেন সড়কপথ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলে আমরা লুট করছি, দুর্নীতি করছি। আরে হাওয়া ভবনে বসে লুটপাট কি আমরা করেছি, নাকি তারেক জিয়া করেছে। বিদেশে টাকা পাচার করেছে কারা? এই বিএনপি বর্গীর চেয়ে ভয়ঙ্কর। ওরা ক্ষমতায় গেলে পুরোদেশটাকে গিলে খাবে।’

চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভক্তি নিয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। আ জ ম নাছির উদ্দিন ও ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের তরুণ তুর্কীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। যখন পত্র-পত্রিকায় দেখি দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা হবে। পত্র-পত্রিকায় দেখে আমরা লজ্জা পাই।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। যারা অপরাধী তাদের শাস্তি দিচ্ছেন। আবরার হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শাস্তি হয়েছে। শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেন না।

এ সময় তিনি প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমদ দলের একজন নিবেদিত প্রাণ ছিলেন উল্লেখ করে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে না আসলে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে বিএনপি। তবে বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উকিল আব্দুস সাত্তারের মতো বিএনপির কত শত আব্দুস সাত্তার তৈরি হয়ে আছে নির্বাচনে আসার জন্য। বিষয়টিও মাথায় রাখার জন্য গয়েশ্বর বাবুসহ বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানাই।’

তিনি বলেন, ‘কাগজে দেখলাম বিএনপির স্থায়ী কমিটির অস্থায়ী সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আগামী নির্বাচনে নাকি বিএনপি না আসলে আওয়ামী লীগ অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচনে আসে নাই, আওয়ামী লীগ অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে নাই, বিএনপিই অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনী ট্রেনের পা দানিতে চড়ে নির্বাচনে গিয়েছিল, এবং মাত্র ছয়টি সিট পেয়েছিল। আওয়ামী লীগের কোনো অসুবিধা হয় নাই, বরং বিএনপিই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সব সদস্য অস্থায়ী শুধুমাত্র বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান স্থায়ী। আর সব সদস্য অস্থায়ী।’

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র এম রেজাউল চৌধুরী, সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াশিকা আয়েশা খান, ত্রাণ সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সভায় উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলামসহ দলের তিন সাংগঠনিক জেলার সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন।

সূত্র: সমকাল
আইএ/ ০৪ মার্চ ২০২৩

Back to top button