পশ্চিমবঙ্গ

সোমা কে? প্রশ্নের উত্তরে কুন্তল বললেন ‘চিনি না’! সব কিছুর জন্য আবারও দায়ী করলেন দলপতিকেই

কলকাতা, ০৪ মার্চ – সোমা-রহস্য আরও ঘনীভূত হল। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে খবর, নিয়োগ মামলায় ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের নথি যাচাই করতে গিয়ে আর এক ‘রহস্যময়ী’ সোমা চক্রবর্তীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তবে শুক্রবার সোমা নামে কাউকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন কুন্তল। উল্টে দাবি করেছেন, হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়কে বাঁচানোর জন্য গোপাল দলপতি তাঁর নামে উল্টোপাল্টা রটিয়ে বেড়াচ্ছে। সোমা নামের ওই ‘রহস্যময়ী নারী’কে কুন্তল গাড়ি, ফ্ল্যাট, টাকা ইত্যাদি দিয়েছেন। শুক্রবার সেই অভিযোগও খারিজ করে কুন্তল বলেন, “আমার নিজেরই ফ্ল্যাট নেই তো কাকে ফ্ল্যাট দেব।” হৈমন্তীর কাছে নিয়োগ দুর্নীতির আর এক অভিযুক্ত তাপস মন্ডলের টাকা রয়েছে বলে আরও এক বার দাবি করেন কুন্তল। শুক্রবার আলিপুর আদালতের বিচারক কুন্তলকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে হুগলির বলাগড়ের যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলের ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন ইডি আধিকারিকরা। আর সেই নথি খতিয়ে দেখতে গিয়েই সোমার নাম উঠে এসেছে। ইডি সূত্রে খবর, ২০২০ সাল থেকে সোমা নামে জনৈক ওই মহিলার সঙ্গে কুন্তলের বেশ কয়েক বার অর্থ লেনদেন হয়েছিল। কুন্তল প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা সোমাকে দিয়েছিলেন বলেও ইডি সূত্রে খবর। কুন্তলের ব্যাঙ্কের নথি খতিয়ে দেখার পর সোমাকে ইডির তরফে তলব করা হয়েছে বলেও ইডি সূত্রে খবর। সূত্রের খবর, তিনি ইতিমধ্যেই সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে হাজিরা দিয়েছেন।

২০২২ সালের জুলাই মাস নাগাদ ইডি স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয় পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। যদিও অর্পিতাকে ‘রহস্যময়ী’ বলা যায় না। কারণ টলিউডের প্রথম সারির নায়কদের কয়েকটি ছবিতে মুখ দেখিয়েছিলেন অর্পিতা। অভিনয় করেছেন কয়েকটি ওড়িয়া ছবিতেও। পার্থর পুজো বলে পরিচিত নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের দুর্গাপুজোর পোস্টারেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। পার্থ-অর্পিতার গ্রেফতারির পর থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা বিভিন্ন খাতে গড়িয়েছে। উঠে এসেছে একের পর এক অভিযোগ আর নতুন নতুন নাম।

সম্প্রতি কুন্তল দাবি করেছেন, গোপাল দলপতি ওরফে আরমান গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী হৈমন্তী নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত। এর পরই হৈমন্তীকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়। তিনি প্রকৃত অর্থেই ‘রহস্যময়ী’ হয়ে ওঠেন যেমনটা উল্লেখ করেছিলেন কুন্তল। তবে পরে দেখা যায় টুকটাক মডেলিং এবং অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত আছেন গোপাল-জায়া। যদিও গোপাল এবং হৈমন্তী দাবি করেছেন, তাঁদের বিচ্ছেদের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি দু’জনেই দাবি করেছেন, তাঁরা কোনও রকম দুর্নীতিতে যুক্ত নন। হৈমন্তীকে নিয়ে সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই সোমা নামে আরও এক ‘রহস্যময়ী’র প্রসঙ্গ উঠে এল নিয়োগকাণ্ডে। আর হৈমন্তীর মতো তাঁকে নিয়েও কৌতূহলের অন্ত নেই।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন
আইএ/ ০৪ মার্চ ২০২৩

Back to top button