জাতীয়

কৃষিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে মডেল হয়ে উঠেছে

ঢাকা, ০১ মার্চ – বাংলাদেশ ছিল অন্নদাশ। দীর্ঘ সময় নানান নির্ভরতা থাকায় সহ্য করতে হয়েছে বিদেশিদের অপমান। বলা হতো, বাংলাদেশ হলো তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ। সেদিন এখন গুছেছে। ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশপাশি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে বাংলাদেশ। উৎপাদনও বেড়েছে আগের চেয়ে কয়েক গুণ। ফলে কৃষিতে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ মডেল হয়ে উঠেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি ও ফসলের দিকে নজর দিতে হবে। তবেই ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএসটি (বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট) আয়োজিত নাগরিক সংলাপে এসব জানান আলোচকরা। সংলাপের বিষয় ছিলো ‘এলডিসি হতে উত্তরণে বাংলাদেশর কৃষি : অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা।’

সংলাপের প্রধান আলোচক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বর্তমানে আমরা কৃষিখাতে মোটামুটি ভালো অবস্থানে আছি। দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগামীতে দেশের ১ কোটি পরিবার সল্পমূল্যে খাদ্য পাবে। তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন আমাদের দেশের বড় সম্পদ হলো কৃষি।’

বর্তমান সরকার কৃষিখাতের উন্নয়নে ভর্তুকি বাড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিখাতের উন্নয়নে ব্যাপক ভর্তুকি দিয়েছেন। এই খাতে আগের চেয়ে ২৭ গুণ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদেরকে নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি ও ফসলের দিকে নজর দিতে হবে। তাহলে ২০২৬ সালে আমরা এলডিসির লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।’

প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাদের শ্রমের বিনিময়ে দেশে আজ সফলতা মিলেছে। প্রধানমন্ত্রীর দুরদর্শি নেতৃত্বে অনেক এগিয়েছেন আমাদের কৃষকরা। তারা প্রমাণ করেছেন, কৃষকরা যা শেখে তা কাজেও প্রয়োগ করতে পারে।’

কৃষিখাতের উন্নয়নের কিছু চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এখন দেশের সব কোল্ডস্টোরেজ সারাবছর পূর্ণ থাকে। যা আগে বছরের অর্ধেক সময় খালি পড়ে থাকত। সরকারি উদ্যোগে ভুট্টার ব্যবহার সার্বজনীন হয়েছে।’

কৃষির যে খেত্রে ভূমিকা রাখলে বেশি উপকারে আসবে তা বিবেচনা করে সরকার কাজ করছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘এজন্য সারাদেশে একসঙ্গে কৃষি কর্মযজ্ঞ চলছে। বাংলাদেশে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। এই পরিবর্তনের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা ছিলাম অন্নদাশ। তাই বিদেশিরা আমাদের নানাভাবে অপমানিত করেছে। সেই অপমানের জবাব দিয়েছেন শেখ হাসিনা।’
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী। তিনি বিভিন্ন গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান মথাপিছু আয় ২ হাজার ৪৪৪ ডলারের বেশি। হিউম্যান এসেট ইনডেক্সে বর্তমানে বাংলাদেশের অর্জন ৭৫ দশমিক ৩। মাতৃমৃত্যু হার কমানোয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আমরা এখন মডেল। শিক্ষা ও নারী শিক্ষায় অর্জন আমরা শতভাগ সফলতার পথে। কৃষির ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। যা ৪৮ বর্তমানে বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’

বিএসটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে সংলাপে আরও আলোচক ছিলেন ছিলেন সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক টি এইচ এম জাহাঙ্গীর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু গবেষণা সংসদের সভাপতি ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ড. মাহবুবুর রহমান লিটু।

সূত্র: ঢাকাটাইমস
আইএ/ ০১ মার্চ ২০২৩

Back to top button