বলিউড

২০২২ সালে মুনাফা ১০ হাজার ৬০০ কোটি রুপি

মুম্বাই, ২৮ ফেব্রুয়ারি – ভারতের বক্স অফিস ২০২২ সালে লাভের মুখ দেখেছে। মুক্তি পেয়েছিল কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু, আরআরআর, বিক্রম, ব্রহ্মাস্ত্রের মতো সিনেমা। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে মুক্তি পায় হলিউডের সিনেমা অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার। সিনেমাটি সারা বিশ্বের মতো ভারতের বক্স অফিসেও ভালো ব্যবসা করেছে। সব মিলিয়ে ২০২২ সালে ভারতের বক্স অফিস আয় করেছে ১২৮ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ১০ হাজার ৬০০ কোটি রুপি। বক্স অফিস বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান ওরম্যাক্স মিডিয়া এ তথ্য দিয়েছে।

অতিমারীর সময়ের তুলনায় এ ব্যবসা আশাজাগানিয়া। ২০২০ সালে ভারতের বক্স অফিস আয় করেছিল মাত্র ২ হাজার ৬০ কোটি রুপি। পরের বছর শুরুটা ভালো হয়েছিল। কিন্তু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চাপে সেটাও কঠিন হয়ে গেল। ২০২১ সালে আয় ছিল ৩ হাজার ৭৭০ কোটি রুপি। ২০২১ সালের হিসাবে ২০২২ সালে আয় বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। গত কয়েক বছরের তুলনায় বলিউডের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু দর্শক আগমনের পরিমাণ কমেছে। ২০২২ সালে সিনেমা দেখতে থিয়েটারে দর্শক এসেছিল ৮৯ কোটি ২০ লাখ জন। ২০১৯ সালে থিয়েটারে দর্শক আগমনের পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি ৩০ লাখের কাছাকাছি। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে, অতিমারীর আগের পাঁচ বছরে দর্শক আগমনের পরিমাণ ৯০ কোটির কম কখনো হয়নি। দর্শক কম হওয়ার পেছনে টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব রয়েছে। ওরম্যাক্স জানাচ্ছে, অতিমারীর পূর্বের তুলনায় টিকিটের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১২ শতাংশ।

ভারতীয় সিনেমার ক্ষেত্রে গত বছর বক্স অফিসে সবেচেয়ে ভালো ব্যবসা দিয়েছিল কন্নড় ভাষার সিনেমা কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু। সিনেমাটি আয় করেছে ৯৭০ কোটি রুপি। আরআরআরের আয় ৮৬৯ কোটি রুপি। কম বাজেটে নির্মিত কানতারাও আয় করেছে ৩৬২ কোটি রুপি। পোনিয়িন সেলভানের আয় ৩২০ কোটি রুপি। লোকেশ কনগরাজের বিক্রম আয় করেছে ২৮৫ কোটি রুপি। তালিকার বেশির ভাগ সিনেমাই দক্ষিণ ভারতীয়। তবে বলিউডের অংশগ্রহণও আছে। অয়ন মুখার্জীর ব্রহ্মাস্ত্র আয় করেছে ৩৬০ কোটি রুপি। দৃশম টু, ভুল ভুলাইয়া টু ও দ্য কাশ্মীর ফাইলসের আয় যথাক্রমে ২৮৫ কোটি, ২১৭ কোটি ও ২৯২ কোটি রুপি।

২০১৯ সালের পরবর্তী সময়ে ভারতের বক্স অফিস নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন থিয়োটারের মালিক থেকে শুরু করে সিনেমার প্রযোজকরাও। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা করতে পারে, এমন সিনেমাও মার খেয়ে গিয়েছিল। বহু সিনেমা পিছিয়েও গেছে। এর মধ্যে রোহিত শেঠির সূর্যবংশী অন্যতম। সিনেমাটির মুক্তি মহামারীর কারণে পিছিয়েছিল। এ কারণে এর ব্যবসাও কম হয়েছে। ১৬০ কোটি রুপিতে নির্মিত সিনেমাটি মোট আয় করেছে আনুমানিক প্রায় ৩০০ কোটি রুপি। কিন্তু মুক্তির আগে এটি নিয়ে যে পরিমাণ আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, তাতে সিনেমাটির আয় করার কথা ৫০০ কোটি রুপির মতো। কিন্তু তা হয়নি। এরপর বয়কট ও অন্যান্য কারণে বলিউডের আরো অনেক সিনেমা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২২ সালে এসে ভালো আয়ের মুখ দেখতে শুরু করে বলিউডসহ ভারতের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির সিনেমা। সে আয়ের হিসাবই করেছে ওরম্যাক্স।

সিনেমাগুলোর এ আয় মূলত ভারতের বক্স অফিস থেকে এসেছে। ভারতের বাইরেও ভালো আয় করেছে। ভারতের বক্স অফিসে মোট আয়ের ক্ষেত্রে বলিউডের সিনেমা এখনো প্রধান ভূমিকা পালন করে, তবে ২০১৯ সালে সে পরিমাণ ৪৪ শতাংশ থাকলেও ২০২২ সালে হয়েছে ৩৩ শতাংশ। এদিকে জেমস ক্যামেরনের অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অব ওয়াটার ভারতের বক্স অফিসকেও দিয়েছে দারুণ মুনাফা। এ সিনেমা আয় করেছে ৪৭০ কোটি রুপি।

২০২৩ সাল ২০২২-এর চেয়ে ভালো হবে বলে আশা করেন সবাই। শুরুটা হলো পাঠানের মাধ্যমে। দক্ষিণে ৩০০ কোটির ব্যবসা দিয়ে বছর শুরু করল বিজয়ের ভারিসু। বলিউড ও দক্ষিণ ভারতের লাইনআপে আছে আরো অনেক দারুণ সিনেমা। বাণিজ্য বিশ্লেষক ও বক্স অফিস আশা করছে, গত বছরের অংককে এ বছর ছাড়িয়ে যাবে ভারতের বক্স অফিস।

আইএ/ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Back to top button