জমি বিতর্কের মধ্যেই শান্তিনিকেতন ছাড়লেন অমর্ত্য সেন! যাওয়ার সময় ঝরল একাধিক আক্ষেপ
কলকাতা, ২৪ ফেব্রুয়ারি – প্রয়াত আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী সম্পূর্ণ জমি অমর্ত্য সেনের নামে রেকর্ড করে দিয়েছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর৷ গত কয়েক মাস ধরে শান্তিনিকেতনে ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। আজ বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতন ছাড়েন তিনি। তবে শান্তিনিকেতনে থাকাকালীন জমি নিয়ে একাধিক বিতর্কের মধ্যে পড়তে হয়েছে নোবেলজয়ীকে। এমনকি কু-কথায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আক্রমণ পর্যন্ত শানান।
তবে জমি মিমাংসা কি হল?
এই অবস্থায় আজ শান্তিনিকেতন ছাড়েন অমর্ত্য সেন। আর তার আগে সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন, যে ভাবে এবার এসে হেনস্থা হলেন তাতে কি মনে ব্যাথা নিয়ে ফিরছেন? প্রতুত্তরে অমর্ত্য সেন জানিয়েছেন, “মনে ব্যাথার অবকাশ নেই।” তবে জমি মিমাংসা কি হল? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমার বাবার নামে জমি ছিল, আমার নামে হওয়া উচিত ছিল। তাই হল। বিএলআরও অফিস থেকে করে দিয়েছে অর্থাৎ, ‘প্রতীচী’ বাড়ির ১.৩৮ ডেসিমেল জমিই অমর্ত্য সেনের নামে নথিভুক্ত করল রাজ্য সরকার।
১ মাসের বেশি সময় থাকলেন শান্তিনিকেতনে
প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারি শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’ বাড়িতে আসেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এবার তিনি প্রায় ১ মাসের বেশি সময় থাকলেন শান্তিনিকেতনে। এই সময় কালে অমর্ত্য সেন জমি দখল করে রেখেছেন, এই অভিযোগ তুলে ৩ টি চিঠি দিয়ে জমি ফেরত চেয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক হয়। আর এই অবস্থায় শান্তিনিকেতন ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে জমির যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে তিনি সেখানে যান। এবং নথি দেখিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, নোবেলজয়ী সম্পত্তি ঠিক আছে। অর্থাৎ জমি নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। এরপরেও বিতর্ক থাকলে আইনি পথে হাঁটার হুঁশিয়ারিও দেন প্রশাসনিক প্রধান।
এরপরেও জমি বিতর্ক শেষ হয়নি।
কিন্তু এরপরেও জমি বিতর্ক শেষ হয়নি। আর এর মধ্যেই এই বিষয়ে অমর্ত্য সেনের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে প্রয়াত আশুতোষ সেনের একটি উইল পেশ করেন৷ তাতে উল্লেখ রয়েছে, ‘প্রতীচী’ জমি তাঁর মৃত্যুর পর স্ত্রী অমিতা সেন পাবেন, তার পরবর্তীতে পাবেন ছেলে অমর্ত্য সেন৷ এই উইলের প্রেক্ষিতে বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাসও একাধিক নথি জমা দেয় বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের। যা নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সঞ্জয় দাসের সামনে শুনানি হয়৷
শান্তিনিকেতন ছাড়লেন অমর্ত্য সেন।
আর এই বিতর্কের মধ্যেই শান্তিনিকেতন ছাড়লেন অমর্ত্য সেন। উড়ে গেলেন আমেরিকাতে। তবে জানা গিয়েছে, আগামী জুলাই মাসে তিনি ফের একবার শান্তিনিকেতন আসবেন। তবে যাওয়ার আগে তিনি জানিয়েছেন, আমার বাড়ি এটি। এখানেই আমি থাকি। আমার বাড়িটা বিশ্বভারতী নিয়ে নিতে চায় বলে এদিন আক্ষেপ করেন নোবেলজয়ী। ছাত্রদের মতো আমার সঙ্গেও ব্যবহার বলে আক্ষেপ তাঁর। তবে কেন এমন ব্যবহার তা জ্ঞানী মানুষ বলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অমত্য সেন।
সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
আইএ/ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩