দক্ষিণ এশিয়া

আইএমএফের ঋণ পেতে প্রায় দেউলিয়া পাকিস্তানকে যা যা করতে হচ্ছে

ইসলামাবাদ, ২৩ ফেব্রুয়ারি – মিনি বাজেট হিসেবে পরিচিতি ফাইন্যান্স বিল-২০২৩ এ সাক্ষর করছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। আজ বৃহস্পতিবার তিনি এ বিলে সাক্ষর করছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম ডন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে এবং আইএমএফের শর্ত পূরণ করে ঋণ পেতে এ বিলে সাক্ষর করা ছাড়া উপায় ছিল না আরিফ আলভির।

দুই দিন আগে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এরপর গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বিলটি প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে পাঠান। প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মিডিয়া উইং আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, সংবিধানের ৭৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট বিলটির অনুমোদন দিয়েছেন।

ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনুচ্ছেদ ৭৫ (১) এর অধীনে অর্থবিল প্রত্যাখ্যান করার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই।

এ সপ্তাহে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বহুল প্রতীক্ষিত ঋণচুক্তি করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। ধারণা করা হচ্ছে, এতে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার পথ তৈরি হবে দেশটির।

এর আগে একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ডন বলেছিল, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান ও আইএমএফ স্টাফ লেভেলে চুক্তি করবে। এরপর মার্চের প্রথম সপ্তাহে আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের বৈঠক হবে।

আইএমএফ তাদের শর্তে বলেছিল, ঋণ পেতে হলে পাকিস্তান সরকারকে ১ কোটি ৭০ লাখ রুপি ট্যাক্স বাড়াতে হবে। এর মধ্যে ১ কোটি ১৫ লাখ রুপি ট্যাক্স ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রক আদেশের (এসআরও) মাধ্যমে কার্যকর করা হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্টের আনুষ্ঠানিক সম্মতির পরে অবশিষ্ট ৫ হাজার ৫০০ কোটি রুপি ট্যাক্স কার্যকর হবে।

ফাইন্যান্স বিল-২০২৩ এ শুল্ক বিষয়ক ৮৬০টি লাইন রয়েছে। সেখানে ৩৩টি পণ্যের ওপর জিএসটি ১৭ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে মোবাইল ফোন, আমদানি করা খাবার, সাজসজ্জা সামগ্রী ও বিলাসবহুল সামগ্রী রয়েছে।

এ ছাড়া সিমেন্টের ওপর আবগারি শুল্ক প্রতি কিলোগ্রামে দেড় রুপি থেকে বাড়িয়ে ২ রুপি করা হয়েছে। কার্বনেটেড অথবা এরেটেড পানীয়ের ওপর আবগারি শুল্ক ১৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সরকারের অতিরিক্ত ১ হাজার কোটি রুপি বাড়বে। অন্যদিকে ৪০০ কোটি রুপি অতিরিক্ত কর আদায় করতে আম, কমলা ইত্যাদির মতো জুস ও অন্যান্য পানীয়ের ওপর ১০ শতাংশ নতুন আবগারি কর প্রস্তাব করা হয়েছে। উড়োজাহাজ টিকিটের ওপরেও আবগারি শুল্ক বাড়িয়েছে পাকিস্তান সরকার। এতে অতিরিক্ত ১ হাজার কোটি রুপি বাড়বে।

তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ভোগা পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০০ কোটি রুপির নিচে নেমে এসেছে। আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি হলে পাকিস্তান ১২০ কোটি ডলার ঋণ পাবে। এতে পাকিস্তানের অর্থায়নের অন্যান্য উপায়ও খুলে যাবে বলে আশা করছে পাকিস্তান সরকার।

সূত্র: আজকের পত্রিকা
এম ইউ/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Back to top button