সাহিত্য সংবাদ

অন্তর্জালে অনুষ্ঠিত হলো ৩য় বারের মত উত্তর আমেরিকা আবৃত্তি উৎসব

‘সীমানা ভেঙ্গে শব্দেরা মেলুক ডানা আকাশ পানে‘ এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে অন্তর্জালে অনুষ্ঠিত হলো ৩য় বারের মত উত্তর আমেরিকা আবৃত্তি উৎসব ১৭, ১৮ এবং ১৯শে ফেব্রুয়ারী, ২০২৩। অনুষ্ঠানগুলো একযোগে প্রচারিত হয় ফেইস বুক লাইভ, উৎসবের ইউটিউব চ্যানেল এবং কিছু কিছু অনুষ্ঠান কানাডা থেকে সম্প্রচারিত পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন দেশে বিদেশে থেকে।

চমৎকার গোছানো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের নাট্য ও আবৃত্তি পথিকৃত সৈয়দ হাসান ইমাম, প্রখ্যাত বাকশিল্পী ও অভিনেতা সরকার কবির উদ্দিন, প্রখ্যাত মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব ও বাকশিল্পী রোকেয়া হায়দার, প্রখ্যাত কবি ও ছড়াকার লুতফর রহমান রিটন, বিশিষ্ট নাট্য ও আবৃত্তি ব্যাক্তিত্ব লুতফুন নাহার লতা।

অনুষ্ঠানে বক্তারা শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান উত্তর আমেরিকা আবৃত্তি উৎসবের প্রয়াসকে।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর পরিবেশিত হয় উত্তর আমেরিকার আমন্ত্রীত আবৃত্তি শিল্পীদের পরিবেশনা।আমন্ত্রিত শিল্পীরা দর্শকদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন তাদের পরিবেশনা দিয়ে। এরপর অন্তর্জাল ভিত্তিক আবৃত্তি সংগঠন ‘পেইন্টেড পয়েমস’ একুশের নিবেদন দিয়ে শেষ হয় উদ্বোধনী সন্ধ্যা। এছাড়াও যে আবৃত্তি সংগঠনগুলো এই উৎসবে সামিল হয়েছিল, তারা হলো সমস্বর (ওয়াশিংটন ডি সি), অন্যস্বর টরন্টো, ক্রান্তি (ক্যালিফোর্নিয়া), ললিতকণ্ঠ (টরন্টো) এবং বাচনিক (টরন্টো)।

অনুষ্ঠানে উত্তর আমেরিকার মোট ছয়টি আবৃত্তি সংগঠন সহ প্রায় ১৫০ এর অংশগ্রহণকারী পরিবেশনায় যুক্ত ছিলেন তিনদিন ব্যাপী এই আয়োজনে।

উত্তর আমেরিকার আবৃত্তিশিল্পী ও আবৃত্তি প্রেমীদের আবৃত্তি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল আরো অন্যান্য পরিবেশনা। সবচেয়ে প্রাঞ্জল উপস্থাপণা ছিল পরবর্তী প্রজন্মকে নিয়ে দুই পর্বের অনুষ্ঠান। বাবা মায়ের অনুপ্রেরণায় যে সব সোনামনিরা বাংলার চর্চা করছে তেমনি বেশ কিছু ক্ষুদে শিল্পীর সমাবেশ ঘটেছিল এই পর্ব দুটিতে।

কবিদের অংশগ্রহণে দুই পর্বে যোগ দেন উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলার কবিরা, কবি সৌম্য দাশগুপ্ত, কবি সেজান মাহমুদ, কবি তাপস গায়েন, কবি তুষার গায়েন, কবি মৌ মধুবন্তী, কবি রেজা অনিরুদ্ধ, কবি রাকীব হাসান, কবি রওশন হাসান, কবি ও গবেষক হাসান মাহমুদ। কবিতার অন্য প্রকাশ পর্বে উপস্থাপন করা হয় জনপ্রিয় কবিতায় সুরারেপিত গান। উৎসবকে কেন্দ্র করে ঐন্দ্রজালিক ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয় আবৃ্ত্তি ও একুশ নিয়ে বিভিন্ন প্রাজ্ঞজনের লেখার সমন্বয় করে একটি স্মারক, যার পুরোটা সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন সংগঠকদের একজন নাঈমা সিদ্দিকা।

উৎসবের সমাপনী পর্ব আলোকিত করেন আঁকিয়ে এবং শিল্পী তাজুল ইমাম এবং প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক ডঃ পূর্বাশা বসু। এই পর্বে এই দুই গুণী ব্যাক্তিত্ব এই উৎসবকে কি করে আরো সমৃদ্ধ করা যায় সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনদিন ব্যাপী জমজমাট এই আয়োজনের অনুষ্ঠানগুলো সঞ্চালনা করেন এই উৎসবের নেপথ্যে যারা গত কয়েক মাস নিরলস কাজ করে গেছেন এক ঝাঁক স্বপ্নবাজ আবৃত্তিপ্রেমি তারা। এরা হলেন আফাজউদ্দিন তোতন আহমেদ, মারুনা রাহী, রাশেদ চৌধুরী, রিজোয়ান হৃদয়,নাঈমা সিদ্দিকা, তারেক ইয়াসিন তারেক উজ্জ্বল ও রুনি সরকার। উত্তর আমেরিকায় বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসারে প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক সীমারেখার বাইরে ক’জন সমমনা কর্মীর এই উদ্যোগ সত্যিই প্রসংশনীয়।

Back to top button