রোহিঙ্গাদের পেছনে এনজিওগুলোর ব্যয় কত, হিসাব চাওয়া হবে
ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি – সরকার রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এনজিওদের ব্যয়ের হিসাব চাইবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, অভিযোগ আছে তারা (এনজিও) উগ্রবাদীদের অর্থায়ন করে।
সেটা তদন্তের জন্য এনজিওগুলোর ব্যয়ের হিসাব প্রয়োজন। এ বিষয়ে পরিষ্কার হতে তাদের কাছে আইনিভাবে যেটা দেওয়া সম্ভব সেটা চাওয়া হয়েছে।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, রোহিঙ্গরা এ দেশ থেকে যেতে চায় না। তারা যাতে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারে সেজন্য কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি ক্যাম্পে যে, মারামারি হানাহানি সৃষ্টি হয় সেসব বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আরও তৎপর হতে হবে। এজন্য এমটিএমসির সদস্যদের মিটিংয়ে থাকতে বলা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন এনজিও কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারা কতো টাকা পেলো তার স্টেটমেন্ট দিতে হবে। একই সঙ্গে কতো টাকা রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যয় করে আর কতো টাকা বিতরণের সময় কর্তকর্তাদের ব্যয় কতো সে হিসাবও দিতে হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য কতো টাকা এলো সেটা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে দেখি। সেখানে একজন রোহিঙ্গা ১২ ডলার করে পায়। এরপর কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা বাদে কিছু খরচ করে কিনা। কারণ অভিযোগ আসছে সেটা তদন্ত করার জন্য এটা লাগবে। কারণ অভিযোগ আছে তারা উগ্রবাদীদের অর্থায়ন করে। সেটা পরিষ্কার হওয়ার জন্য এটা লাগবে। আইনিভাবে যেটা সম্ভব তাদের হিসাবপত্র জানতে চাওয়া।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা এনজিওদের টাকা পয়সার হিসাব এর আগেও নেওয়ার উদ্যাগ নেওয়া হয়েছিল এখন আবার কেন? নাকি এটা ফলোআপ করা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, যারা ফান্ডিং করে তাদের কাছে হিসাব চাওয়া আমার এখতিয়ার নেই। আমাদের সচেতনার জন্য আমরা তাদের জানিয়েছি যে, যেসব টাকা দেওয়া হয় তার সঠিক ব্যবহার হলে সবাই উপকৃত হবে। যে ফান্ড আসে সেটা ১২ লাখ দিয়ে ভাগ দিলে বেরিয়ে যায়। এরমধ্য থেকে ২৫ শতাংশ তাদের (এনজিওগুলোর) বিভিন্ন ব্যয় রয়েছে সেটা যদি বাদ দেন তাহলে তো মূল কতো টাকা দেওয়া হচ্ছে বেরিয়ে যাবে। বাকি ৭৫ শতাংশ টাকা রোহিঙ্গাদের কাজে ব্যয় হয় কিনা সেটা তদন্ত করার জন্য হিসাব চাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে এখন আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক আছে। এজন্য আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষার জন্য মারমুখী হয়ে থাকবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলেছি এগুলোর প্রমাণসহ জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। এ বিষয়ে তাদের সচেতন করা হয়েছে। তারা এমন কোনো কিছু যেন না করে যাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।
কিছু দিন আগে ইউএন সরকারকে স্পষ্ট করে বলেছে যে, বাংলাদেশ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যে কাজগুলো করছে সেগুলো তদন্ত করে দেখার জন্য এবিষয়ে মতামত জানতে চাইলে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ইউএন কি বললো সেটার ওপর তো বাংলাদেশ চলবে না। আমরা পর মুখাপেক্ষী হই কেন। আমরা নিজেরা প্রমাণ করি না কেন?
তিনি বলেন, আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে আমরা খুব সচেতন। একই সঙ্গে খাদ্যে ভেজালরোধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যাতে অভাব না ঘটে এবং সরবরাহ যেন প্রচুর পরিমাণে থাকে সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে। পণ্যের দাম যেন ঠিক থাকে ও সরবরাহও যেন স্বাভাবিক থাকে সরকার সে বিষয়ে প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সুন্দরভাবে ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হবে। এখানে রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচার অনুসারে বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য সেফটি সিকিউরিটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য কমিশনারকে বলা হয়েছে। তারা যাতে সুন্দরভাবে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন।
সূত্র: বাংলানিউজ
আইএ/ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩