মাইগ্রেনে কাবু? মুক্তির উপায় জেনে নিন
মাইগ্রেন বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। মাথার যে কোনো একপাশ থেকে এই ব্যথা শুরু হয় এবং ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মস্তিষ্কের বহিরাবরণে যে ধমনিগুলো আছে, সেগুলো ক্রমে স্ফীত হয়ে যায়। অনেক সময় তীব্রতা শীতকালে অতিমাত্রায় বেড়ে যায়।
যে কারণে ব্যথা : মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ আজও অজানা। তবে এটি সাধারণত নারীদের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে নারীদের মাসিকের শুরুতে ও মাসিকের সময় এ ব্যথা বেশি দেখা দিতে পারে। চকোলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ওষুধ, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম, অনিদ্রা, অনেকক্ষণ টিভি দেখা বা কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইলে কথা বলা ইত্যাদির কারণে রোগটি বাড়ে। কোষ্ঠকাঠিন্য, দুশ্চিন্তা, অতিউজ্জ্বল আলো, মানসিক চাপ মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়ায়।
লক্ষণ : মাথাব্যথা ও বমিভাব এ রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তি বোধ করা ইত্যাদি ব্যথা শুরুর আগেই দেখা দিতে পারে। চোখের পেছনে ব্যথার অনুভূতি তৈরি হতে পারে। ক্লাসিক্যাল মাইগ্রেনের সঙ্গে দৃষ্টি সমস্যা, যেমনÑ চোখে উজ্জ্বল আলোর অনুভূতি, হঠাৎ অন্ধকার হয়ে যাওয়া, দৃষ্টিসীমানা সরু হয়ে আসা অথবা যে কোনো একপাশ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ইত্যাদি হতে পারে। ২০ মিনিট স্থায়ী এসব উপসর্গের পর বমির ভাব ও মাথাব্যথা শুরু হয়, যা সাধারণত একপাশে হয়। দৃষ্টির সমস্যা এক ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হলে ধরে নিতে হবে এটি মাইগ্রেন নয়।
যা করতে হবে : মাইগ্রেন চিকিৎসায় তাৎক্ষণিক ও প্রতিরোধক ওষুধের পাশাপাশি কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চললে সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে হবে। অতিরিক্ত বা কম আলোয় কাজ না করা, কড়া রোদ বা তীব্র ঠাণ্ডা পরিহার করা, উচ্চ শব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা, বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা। মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। বিশ্রাম নিন, ঠাণ্ডা কাপড় মাথায় জড়িয়ে রাখতে পারেন।
মাইগ্রেন প্রতিরোধী খাবার, যেমনÑ ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি। বিভিন্ন ফল, বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে। সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খেলে উপকার হয়। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আদার টুকরা, আদার রস বা জিঞ্জার পাউডার দিনে দুবার পানিতে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন : চা, কফি ও কোমল পানীয়, চকোলেট, আইসক্রিম, দই, ডেয়ারি পণ্য (দুধ, মাখন), টমেটো ও সাইট্রাস-জাতীয় ফল মোটেও খাওয়া ঠিক হবে না। গমজাতীয় খাবার, যেমনÑ রুটি, পাস্তা, ব্রেড ইত্যাদি খাওয়া যাবে না। আপেল, কলা ও চিনাবাদাম, অতিরিক্ত পেঁয়াজও খাওয়া যাবে না। মাইগ্রেন বিষয়ে আরেকটি কথা মনে রাখতে হবে আর তা হলোÑ ওষুধ খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই খেতে হবে।
আইএ