জাতীয়

চলে গেলেন রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী রেজা আলী

বিডক, ১৩ ফেব্রুয়ারি – প্রবীণ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী রেজা আলী আর নেই। স্থানীয় সময় আজ সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রেজা আলী কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তিনি স্বজন–পরিবেষ্টিত অবস্থায় সবার মাঝ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে অনন্তযাত্রায় পাড়ি দিয়েছেন।

আগামীকাল মঙ্গলবার বাদ জোহর সিঙ্গাপুরের বিডেফোর্ড রোডের মসজিদ আল-ফালাহয় রেজা আলীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

রেজা আলীর মরদেহ ঢাকায় আনার পর আগামী বুধবার বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন বাদ আসর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী বৃহস্পতিবার বাদ জোহর ময়মনসিংহের ত্রিশালের নজরুল একাডেমিতে রেজা আলীর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন বাদ আসর ত্রিশালের ধনিখোলায় পঞ্চম জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

রেজা আলীর জন্ম ১৯৪০ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। বাষট্টির ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। বেশ কয়েক বছর জেলে ছিলেন। ১৯৬৩ সালে প্রাদেশিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে গঠিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি সহকারী সাধারণ সম্পাদক হন। ষাটের দশকের শুরু থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন ও বৃহত্তর গণ-আন্দোলনে তিনি যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন।

১৯৬৮ সালের দিকে রেজা আলী প্রথমে বিটপীকে একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৬৯ সালে বিটপীকে অ্যাডভারটাইজিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। আশির দশকে তিনি পোশাকশিল্পের সঙ্গেও যুক্ত হন।

সত্তর-আশির দশকে কোনো না কোনোভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রেজা আলী। তিনি পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি কুমিল্লায়। তাঁর বাবা তোফাজ্জল আলী সেখান থেকে প্রথমে সংসদ সদস্য, পরে মন্ত্রী হয়েছিলেন।

রেজা আলী ময়মনসিংহের ত্রিশালের ধানীখোলায় বড় মৎস্য খামার গড়ে তোলেন। সেখানে বেশ কিছু সামাজিক, রাজনীতিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হন।

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রেজা আলী এমন একটি জীবন যাপন করেছেন, যা প্রবাহিত হয়েছে বহু বর্ণিল নানা ক্ষেত্রের ভেতর দিয়ে, বিপ্লবী ও বৈপ্লবিক রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সৃজনশীলতা ও অভিনব উদ্যোক্তা হিসেবে। তিনি একজীবনে যাপন করেছেন বহু জীবন। কঠিন সময় যাঁরা পাশে ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছে পরিবার।

সূত্র: প্রথম আলো
আইএ/ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Back to top button