দক্ষিণ এশিয়া

মোদির পরে ত্রিপুরায় অমিত শাহ

আগরতলা, ১২ ফেব্রুয়ারি – সরব প্রচারের আর বাকি মাত্র দুইদিন। এই অবস্থায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ধুম লেগেছে নির্বাচনী প্রচারে। ক্ষমতাসীন বিজেপি থেকে শুরু করে বামপন্থি, কংগ্রেস থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় বিভিন্ন নেতারা এখন ভোটের প্রচারে ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থান করছেন।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ত্রিপুরা রাজ্যে গিয়েছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সন্ধ্যায় ভোট প্রচার শেষে তিনি রাজ্য ত্যাগ করতেই রাত ১০টা বেজে ৪২ মিনিটে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাতে মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাতে ছুটে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাসহ অনেকেই।

রাত গড়িয়ে সকাল হতেই রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দিনভর নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। সকালেই তিনি রাজধানী আগরতলা থেকে আকাশ পথে পাড়ি দেন মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের মন্দিরের উদ্দেশ্যে। ভক্তিভরে এদিন পূজোও দিয়েছেন মন্দিরে। এরপরই সোজা ছুটে যান ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের ডুলুগাওয়ে। সেখানেই তিনি ফটিকরায় এবং কৈলাসহর বিধানসভা কেন্দ্রের শাসক দলীয় দুই প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বছরের নির্বাচন অন্যান্যবারের তুলনায় অনেকটাই আলাদা। কারণ দীর্ঘদিন যেখানে রাজ্যে বাম এবং কংগ্রেস দুই মেরুতে থেকে ক্ষমতা দখলের লড়াই করে গিয়েছে সেখানে এ বছর সঙ্গবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে। সঙ্গে অঘোষিত তিপ্রা মথার জোট নিয়েও সন্দেহ ছিলো না তার। স্বাভাবিকভাবেই লড়াই যে কঠিন হচ্ছে তা এক প্রকার স্বীকারও করে নেন অকপটে।

অমিত শাহ বলেন, এককভাবে লড়াই করে কোনো অবস্থাতেই শাসক বিজেপির উন্নয়নের চাকা যে রোধ করা যাবে না তা তারা ভালো করেই জানেন। আর এ কারণেই হাতে হাত মিলিয়েছে তারা।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন রাজ্যে বাম শাসিত সরকার ক্ষমতার আসনে থাকলেও উন্নয়ন হয়নি গরিব মানুষের। কিন্তু গত পাঁচ বছরে অনেকটাই পাল্টে গেছে এই রাজ্যের ছবি। উন্নয়ন এসেছে রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, স্কুলগুলোতেও। এমনকি জনজাতি অংশের জনগণের জন্যও যে কল্যাণমুখী চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার তা আগে কখনোই করা হয়নি।

মোদীর ন্যায় এদিন তিনিও হীরা মডেলের কথা তুলে ধরেন। বলেন, মূলত এতেই এখন সমৃদ্ধ হয়েছে ত্রিপুরা। বাম কংগ্রেস এবং মথাকে তিনি ট্রিপল ট্রাবল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগে যেখানে রেশন কার্ড, চাকরি কিংবা যে কোনো ধরনের সুযোগ সুবিধা পেতে গেলে স্থানীয় নেতাদের সুপারিশের প্রয়োজন হতো সেখানে এসব থেকে অন্তত পরিত্রাণ পেয়েছে মানুষ। সুবিধাভোগীদের বিভিন্ন টাকাও এখন ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার (ডিবিটি) তার মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার এর রাজ্যে গত ৫ বছরে কার্যত শান্তি স্থাপনের কাজ করে গেছে।

অমিত শাহ বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য এবছর ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে বাজেটে। রাজ্যের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে নানা সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। আড়াই লাখ পাকা বাড়ি, পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা, কৃষকদের একাউন্টে সরাসরি ২৪৩ কোটি রুপি প্রদান, এসবই বিজেপি সরকারের কৃতিত্ব।

সমাবেশে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, ফটিকরায় বিধানসভা কেন্দ্রের শাসক দলীয় মনোনীত প্রার্থী সুধাংশু দাস, কৈলাসহর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মবস্বর আলীও উপস্থিত ছিলেন। এই সমাবেশ থেকেই হেলিকপ্টরে করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোজা চলে যান চরিলাম বিধানসভা কেন্দ্রে। পরে সেখানেও একটি সভা শেষে বিকেলে রাজধানী আগরতলায় একটি রোড শো-তে অংশ নেন। রোড শো-তে অন্যান্যদের পাশাপাশি আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Back to top button