ডিভোর্সের পর ফের প্রেমে ৬৭ বছর বয়সী বিল গেটস, প্রেমিকা পওলা সম্পর্কে কিছু তথ্য একনজরে
‘রহস্যময়ী’— গত এক বছর তাঁকে এই নামেই জেনেছে দুনিয়া। এই এক বছরে বহু বার তাঁর ঝলক দেখা গিয়েছে ধনকুবের বিল গেটসের আশপাশে। ক্যামেরাবন্দি হয়েছে সেই সব মুহূর্ত। তবে পরিচয় জানা যায়নি।
সম্প্রতি রহস্যের পর্দা সরিয়ে আবছায়া থেকে প্রকট হয়েছেন ‘রহস্যময়ী’ বিল-সঙ্গিনী। দুনিয়া জুড়ে ঢিঢি পড়ে গিয়েছে তাঁকে ঘিরে। জানা গিয়েছে, ৬৭-র বিলের ‘নতুন প্রেম’ এর নাম পওলা। পওলা হার্ড।
জানুয়ারিতেই পাশাপাশি দেখা গিয়েছিল দু’জনকে অস্ট্রেলিয়ায়। মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন দেখতে গিয়েছিলেন। মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতার ঠিক পাশেই ছিল পওলার আসন।
ম্যাচ শেষের পর দু’জনে একসঙ্গে হাঁটতেও বেরিয়েছিলেন মেলবোর্ন শহরে। তাঁদের পাশাপাশি হাঁটার ভঙ্গি বলে দিচ্ছিল গাঢ় বন্ধুত্বের কথা। তা নিয়ে আলোচনাও হয়েছিল বিস্তর। কিন্তু পওলাকে তখনও চিনতে পারেনি সংবাদমাধ্যম। অবশেষে বিল-সঙ্গিনীর পরিচয় জানা গিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা ‘ডেইলি মেল’ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে পওলাকে নিয়ে। বিল এবং পওলার এক বন্ধুর কথা উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছেন, ‘‘দু’জনকে ইদানীং আলাদা করাই যাচ্ছে না।’’
বিল-পওলার ওই বন্ধুই বলেছে, ‘‘সংবাদমাধ্যম পওলাকে রহস্যময়ী বলছে ঠিকই, তবে একটা বিষয়ে এখন আর কোনও রহস্য নেই। ওঁরা দু’জনেই প্রেমের সম্পর্কে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছেন।’’
পওলা বয়সে বিলের থেকে ৭ বছরের ছোট। তিনি এখন ৬০। এককালে নামী সংস্থার প্রযুক্তি অধিকর্তা পওলা এখন একজন ইভেন্ট প্ল্যানার। বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অবসরে সমাজকল্যাণের কাজও করেন। অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন বহু সংস্থাকে।
বিল তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী মেলিন্ডা গেটসের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনেছেন ২০২১ সালে। পওলাও তাঁর স্বামীকে হারান ২০২১-এই।
ক্যান্সারে আক্রান্ত পওলার স্বামী মার্ক হার্ড ছিলেন ওরাকলের প্রাক্তন সিইও। ২০২১ সালে মার্ক মারা যান। যদিও মার্কের মৃত্যুর আগে থেকেই একে অপরকে চিনতেন বিল আর পওলা। নিউ ইয়র্কের উঁচু মহলের একই গণ্ডিতে ছিল তাঁদের যাতায়াত। ফলে বহু বার বিল-মেলিন্ডা মুখোমুখি হয়েছেন মার্ক-পওলার।
ওরাকলের আগে কম্পিউটার এবং প্রিন্টার প্রস্তুতকারী সংস্থা হিউলেট-প্যাকার্ডের সিইও ছিলেন মার্ক। তবে একটি যৌন হেনস্থার অভিযোগের জেরে ২০১০ সালে তাঁকে ওই সংস্থা ছাড়তে হয়। তবে তার পরও একসঙ্গেই ছিলেন মার্ক এবং পওলা।
অন্য দিকে, বিলের বিরুদ্ধেও যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন তাঁর সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ার। ২০২১ সালে মেলিন্ডার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের সময়েও বিল বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। এমনকি, একটি সূত্রে এমনও জানা যায় যে, বিল নিজের সংস্থার এক আর এক কর্মীকে তাঁর সঙ্গে একটা দিন কাটানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এ হেন বিল বিবাহবিচ্ছেদের বছর খানেক পরেই পওলার প্রেমে পড়েন বলে খবর।
পওলা আদ্যোপান্ত টেনিস ভক্ত। মার্কও তাঁর কলেজ জীবনে ছিলেন টেনিসের কৃতী খেলোয়াড়। রিপোর্ট বলছে, পওলার সঙ্গে বিলকেও বহু বার দেখা গিয়েছে টেনিস ম্যাচের গ্যালারিতে।
একটা সময় গ্যালারিতে তাঁদের দু’জনকে দেখা যেত আলাদা আলাদা সারিতে, তবে কাছাকাছি। সঙ্গে থাকতেন তাঁদের আলাদা আলাদা বন্ধু। কিন্তু ক্রমে আসনের দূরত্ব ঘোচে। বন্ধুরাও মিলে যায়। শেষ কয়েকটি ম্যাচের গ্যালারিতে দু’জনকে পাশাপাশি একান্তেই সময় কাটাতে দেখা গিয়েছে।
সম্প্রতি বেশ কয়েক বার দু’জনকে একসঙ্গে অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য দেশে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গিয়েছে। আপাতত এখানেই এসে থেমেছে ষাটোত্তীর্ণ দুই প্রেমিক-প্রেমিকার গল্প।
পওলা দুই কন্যার জননী। বিলও তিন সন্তানের পিতা। আবার বিল যেখানে ধনকুবের অর্বুদপতি, সেখানে পওলাও সম্পত্তির নিরীখে বিন্দুমাত্র পিছিয়ে নেই। মার্কের মৃত্যুর সময় তাঁর সম্পত্তির মূল্য ছিল ৫০ কোটি ডলার। তার পুরোটাই এখন পওলার নামে।
দু’জনেই পুরনো সম্পর্কের বন্ধন মুক্ত। এই বয়সে নির্ঝঞ্ঝাট জীবনে যদি দু’জনে প্রেম খুঁজে পেয়ে থাকেন তবে ক্ষতি কী! বিল-পওলার প্রেমের কথা জেনে শুভেচ্ছাই এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
আইএ/ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩