শরীর চর্চা

ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্ত হতে করুন এই ৪ টি ইয়োগা

সাবেরা খাতুন

কেউ কেউ নিয়মিতই ঘাড়ে ব্যথায় ভুগে থাকেন। স্ট্রেস, ভুল অঙ্গভঙ্গি, দুর্ঘটনা, কম্পিউটারে কাজ করা ইত্যাদি কারণে ঘাড়, কাঁধ ও পিঠের উপরের অংশে ব্যথা হতে পারে। এই ধরণের ব্যথা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ঔষধ গ্রহণের প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু এমন কিছু যোগব্যায়াম আছে যা করলে ঘাড়ের ব্যথা থেকে মুক্ত হওয়া যায়। আজ আমরা এমনই কয়েকটি যোগব্যায়ামের কথা জেনে নিব এই ফিচারে।

১। ত্রিকোনাসন
ত্রিকোনাসন যোগব্যায়ামটি করলে মেরুদন্ডে আড়াআড়ি টান পড়ায় মেরুদন্ড নমনীয় ও কমনীয় থাকে এবং মেরুদন্ডে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। এটি পিঠের পেশীর শিথিলিকরণে সাহায্য করে। এটি করলে পিঠের মাংসপেশী মজবুত হয়। ফলে পিঠে ব্যথা-বেদনা হতে পারেনা।

এই যোগব্যায়ামটি করার জন্য সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার দুপা আড়াই থেকে তিন ফুট পরিমাণ  ফাঁক করুন। এরপর হাতদুটো শরীরের দুপাশে কাঁধ বরাবর উঁচু করুন। হাতের তালু নিম্নমুখী করে রাখুন।

এরপর পা থেকে কোমর পর্যন্ত শরীর সোজা রেখে সামনে বা পেছনে না ঝুঁকে আস্তে আস্তে ডান দিকে বাঁকিয়ে পায়ের পাতা স্পর্শ করতে চেষ্টা করুন। সহজভাবে যতটুকু হাত যায় ততটুকুই রাখুন।  কিছুদিন অভ্যেস করলে আসনটি সঠিক ভঙ্গিমায় করতে পারবেন। এভাবে প্রথমে ডানদিকে ও পরে বামদিকে করুন।

২। মৎস্যাসন
ঘাড়ের পেছনের দিক ও পিঠের গভীর প্রসারণে সাহায্য করে মৎস্যাসন। এর ফলে পেটের অঙ্গগুলোর ও মৃদু ম্যাসাজ হয়। ঘাড়, কাঁধ, মেরুদন্ডের দুপাশের পেশী ও স্নায়ুর খুব ভালো ব্যায়াম হয়।

প্রথমে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুপা জোড়া লেগে থাকবে এসময়। হাতের তালু মেঝেতে লেগে থাকবে। নিতম্ব মেঝেতে লাগানো অবস্থায় হাতদুটোর উপর ভর দিয়ে বুক উঁচু করে মাথার তালু মেঝেতে লাগান। দম স্বাভাবিক থাকবে। এভাবে ১০-১৫ মিনিট থাকুন। অভ্যস্ত হলে ১-২ মিনিট অবস্থান করতে পারবেন।

৩। বালাসন বা শিশুর মত ভঙ্গি
এই যোগব্যায়ামটি করলে ঘাড় ও কাঁধের রিলাক্সেশন হয় এবং তন্দ্রা ও মাথাব্যথা মুক্ত হতে সাহায্য করে। এটি করলে মন শান্ত হয়।

প্রথমে হাঁটু মুড়ে বসুন। তারপর আপনার মাথাটি সামনের দিকে নুইয়ে হাঁটুর সামনের মেঝে স্পর্শ করুন। এই অবস্থায় হাত দুটো সামনের দিকে সোজা করে মেঝেতে লাগান।

৪। উস্ট্রাসন বা উটের মত ভঙ্গি
এই যোগব্যায়ামটি করলে বুক, কাঁধ ও ঘাড়ের প্রসারণ হয়। এর মাধ্যমে শরীরের নীচের অংশেরও চমৎকার প্রসারণ ঘটে।

প্রথমে দুই হাঁটুর উপর ভর দিয়ে দাঁড়ান। হাঁটু ও পা পরস্পর লেগে থাকবে। মেরুদন্ড সোজা থাকবে। এবার দম স্বাভাবিক রেখে দু হাত দিয়ে দু পায়ের গোড়ালি ধরুন। বুক ও পেট যতোটা সম্ভব সামনের দিকে এবং ঘাড় ও মাথা পেছন দিকে বাঁকিয়ে ধনুকের মত করুন। ১০-১৫ সেকেন্ড এ অবস্থায় থেকে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসুন।

প্রথম দিকে পা জোড়া লাগিয়ে না করতে পারলে পা ফাঁক করে করলে সহজে করতে পারবেন। দু হাত একত্রে না রাখতে পারলে এক হাত দিয়ে ধরুন অন্য হাত দিয়ে দেয়ালে ধরুন। এভাবে হাত পাল্টে একবার ডান হাত দিয়ে ডান পা আবার বাম হাত দিয়ে বাম পা ধরতে চেষ্টা করুন। এভাবে কিছুদিন করলে সঠিক ভঙ্গিমায় আসনটি করতে পারবেন। এ আসনটিতে শরীরের মধ্যভাগ উটের মত উঁচু হয়ে থাকে বলে একে উস্ট্রাসন বলে।

তবে যোগব্যায়াম শুরু করার পূর্বে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে করা উচিৎ।

আডি/ ৩০ নভেম্বর

Back to top button