পশ্চিমবঙ্গ

বিশ্বভারতী ও মমতার মধ্যে ভয়ংকর তরজা

কলকাতা, ০২ ফেব্রুয়ারি – এবারের বিবাদটা শুরু হয়েছে অমর্ত্য সেনের জমিবিবাদকে কেন্দ্র করে। বিশ্বভারতীর অভিযোগ, অমর্ত্য সেনের বাড়ি প্রতীচীতে ৩৩ ডেসিবেল জমি বেশি নেয়া আছে। তারা এখন সেই জমি ফেরত চাইছে। কিন্তু অমর্ত্য সেনও তার দাবিতে অনড়। তিনি বলছেন, তার বাবার আমলে কেনা জমির উপর বাড়ি হয়েছে। একটুও জমি বেশি নেয়া হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে মাঠে নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, তার কাছে তথ্যপ্রমাণ আছে। তিনি সেই প্রমাণ অমর্ত্য সেনকে দেখিয়েছেন। মমতার দাবি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশ মানছে না। ওদের কথা তিনি আগে শুনবেন। তারপর নিজেদের কথা বলবেন।

মমতা বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন। ঠাকুর পরিবারের শেষ বংশধর সুপ্রিয় ঠাকুরের বাড়ির সামনেও বিশ্বভারতী পাঁচিল তুলে দিয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার প্ল্যান তৈরি।

বিশ্বভারতীর জবাব

বুধবার রাতেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মমতাকে জবাব দেন। জবাবটা উপাচার্য দেননি। দিয়েছেন মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক। সেখানে বলা হয়েছে, ”বিশ্বভারতীর উপর আপনার আশীর্বাদ না থাকলেই আমাদের সুবিধা। বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলি।”

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন। তাঁর স্তাবকেরা যা শোনান তিনি তাই বিশ্বাস করেন এবং টিপ্পনি করেন।”

আরো বলা হয়েছে, ”মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বভারতীতে দেওয়াল তোলার ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করেছেন।…ওনার বাসস্থান, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে কি দেওয়াল নেই।”

প্রশ্ন করা হয়েছে, আপনার মনোনীত মন্ত্রী, উপাচার্য কী করে জেলের গরাদের ভিতর আছেন? আপনার প্রিয় শিষ্য যাকে না হলে বীরভূম ভাবতে পারতেন না, সেও জেলে। কবে তিনি ছাড়া পাবেন? জনসমক্ষে ভুল তথ্য দিয়ে তিনি বিশ্বভারতীকে আক্রমণ করছেন।

প্রতিক্রিয়া

শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার টিভি৯-কে বলেছেন, “বিশ্বভারতী যদি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো সংবাদ বিবৃতি জারি করে থাকে, তাহলে আমি বলব ব্যাপারটা আদালত মীমাংসা করুক। অমর্ত্য সেনের জমির বিষয়টাও আদালত মীমাংসা করুক। আমি উপাচার্যকেও অনুরোধ করব, তিনি যেন নিজে কোনও ব্যাখ্যা না করেন।”

আবার তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, বিশ্বভারতী বলছে, তারা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলব। তাদের তো রবীন্দ্রনাথের দেখানো পথে চলা উচিত।

এই বিতর্ক নিয়ে দুই ভাগ হয়ে গেছেন বাংলার সুশীল সমাজ। কেউ বলছেন, বিশ্বভারতীর গৈরিকীকরণ হচ্ছে। যে ভাষায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন, তা মেনে নেয়া যায় না।

অন্যপক্ষের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীও রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী নিয়ে যা বলেছেন, তা তার মুখে মানায় না।

সূত্র: ডয়চে ভেল
আইএ/ ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

 

 

Back to top button