সিলেট

সিলেটবাসীকে যে স্বপ্নের স্পর্শ দিতে চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সিলেট, ০২ ফেব্রুয়ারী – ঢাকার পর এবার মেট্রোরেলের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে সিলেট। আর কেউ নন- স্বপ্নটি দেখাচ্ছেন সিলেটেরই কৃতী সন্তান, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নস্বপ্নের সারথি- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি।

তিনি জানিয়েছেন- খুব বেশিদিন নয়, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মূল শহর পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। এ ছাড়া হবে ‘সিলেট সিটি সার্কুলার রিং রোড’।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের দেওয়া এ-সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ ও সওজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নের পর সিলেট মহানগরে যানজট কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে সিলেট নগরীর যানজট নিরসনে দীর্ঘদিন ধরে নানা পরিকল্পনা চলছে। রাস্তা প্রশস্তকরণসহ বিভিন্ন প্রকল্পও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারি ভোলাগঞ্জের পাথরবাহী ট্রাক ও ওসমানী বিমানবন্দরের যাত্রীদের যানবাহনের কারণে শহরে দিনভর যানজট লেগেই থাকে। এ দুর্ভোগ থেকে মহানগরবাসীকে মুক্তি দিতে বিমানবন্দর-তেমুখী বাইপাস ও বিমানবন্দর-আম্বরখানা সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের উদ্যোগ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

ইতোমধ্যে বিমানবন্দর-তেমুখী বাইপাস চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান। আর বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে বিমানবন্দর-আম্বরখানা সড়ক চার লেন প্রকল্পটি।

জানা গেছে, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রহণ করা হয়েছে মাস্টারপ্ল্যান। ওই মাস্টার প্ল্যানে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সিলেট শহর পর্যন্ত মেট্রোরেল ও মহানগরে সার্কুলার রিং রোড নির্মাণের প্রস্তাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

প্রায় তিন মাস আগে দেওয়া প্রস্তাবটি সম্প্রতি সওজের মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সওজ সূত্র জানায়, মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মহানগরের আম্বরখানা এলাকা থেকে যাত্রীরা সহজে চলে যেতে পারবেন ওসমানী বিমানবন্দরে। ফলে ব্যস্ততম এ সড়কে প্রাইভেট যানবাহন চলাচল কমবে। এ ছাড়া চা বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া মেট্রোরেল সিলেটের পর্যটনেও নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া নগরীর ভিতর দিয়ে যাতে ট্রাক চলাচল করতে না হয় সে জন্য বিমানবন্দর-তেমুখী বাইপাস সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। সড়কটির কাজ শেষ হলে ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর নিয়ে ট্রাক ওই বাইপাস হয়ে শাহজালাল সেতু-২ হয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে উঠতে পারবে।

এদিকে, মাস্টার প্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত হওয়া সার্কুলার রিং রোডের পরিকল্পনায় রয়েছে বিমানবন্দরের পেছন (উত্তর দিক) থেকে খাদিমনগর পর্যন্ত, বিমানবন্দরের সামনের দিক থেকে টিবিগেট পর্যন্ত ও দক্ষিণ সুরমার তেতলী থেকে শাহপরাণ সেতু পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ। এ সড়কগুলো নির্মিত হলে সিলেট মহানগরের উপর থেকে যানবাহনের চাপ কমবে। শহরে প্রবেশ না করেই যানবাহন বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সার্কুলার রিং রোড হলে সিলেটের পর্যটন সম্ভাবনা আরও বাড়বে।

সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে ২০ বছর মেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্ল্যানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের দেওয়া দুটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন থেকে যোগাযোগব্যবস্থার পরিকল্পনাগুলো যাতে বিজ্ঞানসম্মত হয় সেদিকেই নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যে কারণে প্রজেক্ট প্ল্যান নিয়ে অনেক যাচাই-বাছাই ও গবেষণা হচ্ছে। সিলেটের মেট্রোরেল ও সার্কুলার রিং রোডও হবে বিজ্ঞানসম্মত। আগামী জুনে মাস্টারপ্ল্যানটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার কথা। এরপর গুরুত্ব বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে।

সূত্র: সিলেটভিউ২৪
আইএ/ ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

Back to top button