আইন-আদালত

ত্রিশালের মুকুলসহ ৬ জনের রায় আজ

ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি – মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশালের মোখলেসুর রহমান মুকুলসহ পলাতক ছয় আসামির বিরুদ্ধে আজ রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ ছয়টি অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়।

মো. মোখলেসুর রহমান মুকুল (৬৫) ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন-মো. সাইদুর রহমান রতন (৫৬), সামসুল হক বাচ্চু (৭০), শামছুল হক ফকির (৭৫), নুরুল হক ফকির (৭০), সুলতান ফকির ওরফে সুলতান মাহমুদ (৫৮), এবিএম মুফাজ্জলহুসাইন (৭০) ও নকিব হোসেন আদিল সরকার (৬৫)।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করবেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।

এর আগে রোববার আসামিদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য আজ সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য যে কোনো দিন অপেক্ষমাণ (সিএভি) ঘোষণা করেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় এ রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন আদালত।

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। অন্যদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম।

ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল জানান, এ মামলায় মোট নয়জন আসামি ছিলেন। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন দুইজন। কারাগারে থাকা দুইজন ও পলাতক একজনসহ মোট তিনজন মারা গেছেন। আর বাকি ছয় আসামি পলাতক।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগে ২০১৮ সালের ১২ জুলাই দাখিল করার পর ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর ফরমাল চার্জ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।

এরপর ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি সাক্ষ্য শেষে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়ে ৫ ডিসেম্বর শেষ হয়। এরপর মামলায় রায় ঘোষণার জন্য সিএভি অপেক্ষমাণ রাখেন আদালত।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি তদন্ত শুরু হয়ে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছিলেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য মো. আনিছুর রহমান মানিকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছিল ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগ।

ওইদিন ধানমন্ডিতে অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান। এসময় তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এম সানাউল হক, মামলার (আইও) তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

সে সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার সাবেক প্রধান সমম্বয়ক মরহুম আব্দুল হান্নান খান বলেছিলেন, একাত্তর সালে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগে তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা দুজন ও পলাতক একজন মারা গেছেন। এখন মামলার বাকি সব আসামিই পলাতক রয়েছেন।

এদের মধ্যে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুলতান ফকির ও এবিএম মুফাজ্জল হুসাইন। তারা সবাই ১৯৭১ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ, আটক ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সানাউল হক বলেন, আসামি নয়জনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি মামলা করা হয়। ওইদিন থেকেই আমরা তদন্তকাজ শুরু করি। আসামিরা ১৯৭১ সালের জুন-জুলাই থেকে একই বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানাধীন আহম্মদাবাদ উচ্চবিদ্যালয় রাজাকার ক্যাম্প, কানিহারী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় এসব অপরাধ সংগঠিত করেছে বলেও তিনি জানান।

সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ২৩ জানুয়ারি ২০২৩

Back to top button