পশ্চিমবঙ্গ

সহকর্মীকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢোকেন ASI আধিকারিক, তাতেই ১০০ কোটির রহস্যভেদ

কলকাতা, ১৪ জানুয়ারি – এএসআই আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, চন্দ্রকেতুগড়ের হদিশ মেলার সময় এই মূর্তি বা সামগ্রীগুলি নিয়ে নিজের কাছে রেখেছিলেন ওই। উপযুক্ত গ্রাহক পেলে বাইরে পাঠিয়েও দেন।

দেগঙ্গায় ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস উদ্ধার হয়েছে শুক্রবার। এদিন আর্কিওলজিক‍্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার একটি দল দেগঙ্গার হাদিপুরে পৌঁছয়। অত্যন্ত কৌশলে ঢোকেন আসাদুজ্জামান নামে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে। অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জেনারেল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টি বিপ্লব রায় ছিলেন সেই দলে। নিজেকে অ্যান্টিক জিনিসের সংগ্রহকারী হিসাবে পরিচয় দেন। গঙ্গাসাগরে এসেছেন বলে জানান। নিজেরই এক সহকর্মীকে পরিচয় দেন স্ত্রী বলে। প্রথমে আসাদুজ্জামানের বিশ্বাস জিতে নেন তিনি। এরপরই তাঁর গোডাউনে ঢুকে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয়। মৌর্য, কুষাণদের সময়ের সামগ্রী রাখা ছিল সেই গোডাউনে। শনিবার সকাল থেকেই ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে লোকজনের আনাগোনা। তবে তাঁর বাড়ির ধারেকাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না সংবাদমাধ্যমকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে হাদিপুরে থাকেন এই ব্যবসায়ী। আসাদুজ্জামানের ফুলের ব্যবসা। বিভিন্ন বিয়েবাড়িতে ফুল দেন তিনি। সঙ্গে পুতুলও বিক্রি করেন। স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, তাঁর অ্যান্টিক জিনিসপত্র সংগ্রহের আগ্রহের কথা এলাকার অনেকেই জানেন। তবে তাঁর বাড়িতে যে জিনিস পাওয়া গিয়েছে, তার মূল্য যে ১০০ কোটি হতে পারে তা ভাবতেও পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। দেগঙ্গা থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়।

অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জেনারেল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টি বিপ্লব রায় শুক্রবারই জানান, “চন্দ্রকেতুগড়ে এসে মানুষের সঙ্গে যখন কথা বলি একটা নাম উঠে আসে, আসাদুজ্জামান। যাঁর কাছে ১৫ হাজারেরও বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী আছে। যা চন্দ্রকেতুগড় থেকে উদ্ধার করা। ওর কাছে গিয়ে নিজেকে অ্যান্টিক জিনিসের সংগ্রহকারী হিসাবে পরিচয় দিই। বলি আমি দিল্লি থেকে এসেছি। গঙ্গাসাগরে এসেছি আমি। আমি আরও জিনিস চাই বলি ওনাকে। নানা কথার পর উনি আমাকে তাঁর গোডাউনে নিয়ে যান। পরিকল্পনা অনুযায়ীই সেখানে পুলিশ সুপার-সব বারাসত পুলিশের টিম পৌঁছয়। এরপর আমরা সমস্ত প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করি। আমাদের অফিসের এক মহিলা কর্মীকে আমার স্ত্রী সাজিয়ে আমরা এখানে আসি এই জিনিস কেনার জন্য।”

১০০ কোটি টাকার প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী উদ্ধার।

আসাদুজ্জামান অ্যান্টিক জিনিস সারাই করতে পারেন। আর্কিওলজিক‍্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার তরফে উদ্ধার করা জিনিসগুলির বেশ কয়েকটি সারাইয়ের প্রয়োজন। সূত্রের খবর, আসাদুজ্জামানকেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেগুলি সারাইয়ের। এর বিনিময়ে অর্থও পাবেন তিনি। তবে তিনি সে কাজ করতে রাজি হবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। জানা গিয়েছে, ১০-১৫টা জিনিসের কাগজ ছিল তাঁর কাছে। অথচ ১৫ হাজারের বেশি জিনিস উদ্ধার হয়েছে। এএসআই আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, চন্দ্রকেতুগড়ের হদিশ মেলার সময় এই মূর্তি বা সামগ্রীগুলি নিয়ে নিজের কাছে রেখেছিলেন ওই। উপযুক্ত গ্রাহক পেলে বাইরে পাঠিয়েও দেন।

সূত্র: টিভি নাইন
আইএ/ ১৪ জানুয়ারি ২০২৩

Back to top button