জাতীয়

অব্যাহতি পেতে পারেন আওয়ামী লীগের ২০ জেলার সভাপতি

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর- আওয়ামী লীগে এখন শুদ্ধি অভিযান চলছে। প্রচলিত ধারায় যে শুদ্ধি অভিযান সেরকম ভাবে এই শুদ্ধি অভিযান নয় বরং থেমে থেমে স্বাভাবিক গতিতে এই শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত করা হচ্ছে। এই শুদ্ধি অভিযানে ইতিমধ্যে ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী আটক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে মানি-লন্ডারিংয়ের অভিযোগ সহ নানা অভিযোগে মামলা চলছে। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদককে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।

এই সমস্ত অব্যাহতি এবং শুদ্ধি অভিযানের প্রধান কারণ আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, দলের কোন্দল বন্ধ করা এবং দলের ভেতরে থেকে যারা দলের জন্য ক্ষতি করার চেষ্টা করছে, বদনাম করছে তাদের প্রতিহত করা। আর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২০টি জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা লাল তালিকাভুক্ত হয়েছেন, যাদেরকে পর্যায়ক্রমে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে। এদের বিরুদ্ধে কোন্দল সৃষ্টির, দুর্বৃত্তদের জায়গা দেওয়া এবং দলের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা রকম অপকর্ম করার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, ওই সমস্ত জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা এখন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখছেন। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের অভ্যন্তরিন কোন্দল এবং দলের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা দুর্বৃত্তায়ন করছেন, তাদের ব্যাপারে শূণ্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেছেন। কাজেই যারা এই অনিয়ম করবে যারা দলের পদ-পদবী ব্যবহার করে দলকে ক্ষতিগ্রস্থ করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে আওয়ামী লীগের ৩৩ টি সাংগঠনিক জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ( ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ মহানগরীসহ)। এই ৩৩ টি জেলার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪ টি জেলার কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি কমিটিগুলো চলতি মাসের মধ্যে ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।

যে জেলাগুলোতে এখন পর্যন্ত সম্মেলন হয়নি সেই জেলাগুলোর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের একটি বিরাট অংশের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এখন যে ২০ জনকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে, সেগুলো সব সম্মেলন না হওয়া এই জেলাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই একই কমিটি বহাল আছে এবং সম্মেলনের সভাপতি-সাধারন সম্পাদক তাদের ইচ্ছেমতো দল পরিচালনা করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি ছাড়াই অনেক অনুপ্রবেশকারীকে জেলা কমিটিতে বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন। অঙ্গসংগঠনগুলোতেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা প্রভাব বিস্তার করেছেন এবং তাদের পছন্দের মত লোকজনকে স্থান দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন হয়নি সেই জেলাগুলোতে সমস্যা বেশি এবং মাইম্যান রাজত্ব কায়েম হয়েছে। এক ব্যক্তি বা দুই ব্যক্তি তার ইচ্ছামত সংগঠন পরিচালনা করছেন, এটা হতে দেয়া যায় না। আর একারণেই ওই জেলাগুলোতে যারা দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন, দলের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করছে তাদের অব্যহতি দেয়া হতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেছেন, শুধুমাত্র বিভক্তি বা বিশৃংখলা নয়, অনেক সময় অন্তত ৬টি জেলায় আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নিষ্ক্রিয়, অসুস্থ বা অন্যকোন গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার পরে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। আর এ কারণেই ওই জেলাগুলোতেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দিয়ে নতুন সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নেয়া হবে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে, দলকে শক্তিশালী করার জন্যই এগুলো করা হচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার
আডি/ ২৮ নভেম্বর

Back to top button