মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা স্বীকার করলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট
জাকার্তা, ১২ জানুয়ারি – ইন্দোনেশিয়ায় অতীতে ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে’ বলে স্বীকার করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। ভবিষ্যতে এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধের অঙ্গীকারও করেছেন তিনি। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে উইডোডো বলেছেন, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি আন্তরিকভাবে স্বীকার করছি যে, অতীতের অনেক ঘটনায় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
প্রেসিডেন্ট উইডোডো ১৯৬৫ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে ঘটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদ্ধৃতি দিয়ে এই দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর সময়ে গণবিক্ষোভ থেকে গণতান্ত্রিক কর্মীদের অপহরণের বিষয়টিও রয়েছে। ধারণা করা হয়, ৬০-এর দশক থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় অন্তত ৫ লাখ মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে।
এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য এর আগে ২০০০ সালে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট আবদুর রহমান ওয়াহিদ প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এরপর উইডোডো হলেন দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট, যিনি ষাটের দশকের রক্তপাতের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে উইডোডো পাপুয়া অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, পাপুয়া নিউগিনির সীমান্তবর্তী পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘকাল ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে। একই সঙ্গে সুমাত্রা দ্বীপের উত্তরে আচেহ প্রদেশেও বিদ্রোহ চলছে। এসব অঞ্চলেও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে উইডোডো আরও বলেছেন, বিচারিক রেজল্যুশন প্রত্যাখ্যান না করে নায্যভাবে ও বিজ্ঞতার সঙ্গে ভুক্তভোগীদের অধিকার পুনরুদ্ধার করা হবে। ভবিষ্যতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করার জন্য আমি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করব। তবে কীভাবে করা হবে, সে ব্যাপারে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী পরিচালক উসমান হামিদ এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা না করে নিছক স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ক্ষততে লবণ দেওয়া। সহজভাবে বলতে গেলে, জবাবদিহি ছাড়া প্রেসিডেন্টের বক্তব্য অর্থহীন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য গত বছর একটি কমিশন গঠন করেছিলেন উইডোডো। সম্প্রতি সেই কমিশন উইডোডোর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ১২ জানুয়ারি ২০২৩