পশ্চিমবঙ্গ

শুভেন্দুকে বাদ রেখেই বিধানসভার ঘুঁটি সাজিয়ে ফেললেন মমতা

কলকাতা, ২৭ নভেম্বর- সামনেই বিধানসভা ভোট! আর ভোটের আগে কার্যত ‘বিদ্রোহ’ দলের মধ্যে। একের পর এক বিধায়ক মুখ খুলছে। দলে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই অবস্থায় আরও অস্বস্তি বাড়িয়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলে থাকলেও একের পর এক পদ থেকে ইস্তফা তাঁর।

এবার বাংলাকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। গোটা কোর টিমকে বাংলার মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহ। পাঁচ ভাগে গোটা বাংলা চষে বেড়াচ্ছে পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতা। এই অবস্থায় শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব ত্যাগ যে কিছুটা চাপ বাড়াবে সেই আঁচ পড়েছে কালীঘাটেই। তাই দলের প্রথম সারির নেতৃত্বকে জরুরি বৈঠকে ডাকেন তৃণমূল নেত্রী।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কালীঘাটে জরুরি বৈঠক ডাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জরুরি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব। ছিলেন সুব্রত বক্সি, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম। এছাড়াও পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ আরও কিছু মন্ত্রীকে জরুরি ওই বৈঠকে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জানা যাচ্ছে, জরুরি এই বৈঠকে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে শুভেন্দুহীন দলের একুশের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংগঠনিক দায়িত্ববৃদ্ধি করলেন দলের শীর্ষ নেতাদের। সেইসঙ্গে পুরোদমে ভোটপ্রচারে নামছেন তিনি নিজেও।

জানা গিয়েছে, আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া , বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদহে যাচ্ছেন দলনেত্রী নিজে। একসময়ে এই পাঁচ জেলায় তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এক সময়ে বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহে তৃণমূলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

কয়েক মাস আগে পর্যবেক্ষকের পদটি তুলে দেওয়া হয়। তার বদলে তৈরি করা হয় স্টিয়ারিং কমিটি ও কো-অর্ডিনেশন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি শুভেন্দু। এই নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে শুভেন্দুর মতপার্থক্যের সূত্রপাত্র। যদিও সাম্প্রতিককালে দলের ব্যানার ছাড়াই বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতে পাঁচ জেলাতেই গিয়েছেন তিনি। আর সেই জায়গাগুলিতেই প্রথমে যাবেন তৃণমূল নেত্রী।

বোঝার চেষ্টা করবেন দলের রাশ কতটা হাতে রয়েছে তাঁর! অন্যদিকে, বিজেপির ‘ষড়যন্ত্র’কে রুখতে একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এদিন নিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, প্রশাসনের পাশাপাশি দল কীভাবে এগোবে, তাও ঠিক করে দেন মমতা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সির মতো শীর্ষ নেতাদের সংগঠনের কাজে আরও বেশি করে নামার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এছাড়াও ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাঠে নেমে একেবারে কাজের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। কোথাও একচুলও যাতে বিজেপি সুযোগ না পায় সেদিকে তাকিয়ে এখন থেকেই ২১ এর লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ নেত্রীর। বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি জেলার দায়িত্বও এদিন ভাগ করে দিয়েছেন নেত্রী।

জানা যাচ্ছে, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুব্রত বক্সির উপর। তাঁর পাশাপাশি নেতাদেরও জেলা সফর করতে হবে, কাছে থেকে বুঝতে হবে পরিস্থিতি। এছাড়াও এই মুহূর্তে যে জেলার দায়িত্বে যিনি রয়েছেন তাই থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্র: কলকাতা২৪x৭

আর/০৮:১৪/২৭ নভেম্বর

Back to top button