অপরাধ

কানাডায় হাজার কোটি টাকা পাচার করেও সাবেক সচিব নিয়াজ উদ্দিন ধরা ছোঁয়ার বাইরে

ঢাকা, ২৭ নভেম্বর – ২০০৯ সালে দ্বিতীয় বারের মতো ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এসময় আমলাদের মধ্যে আওয়ামী লীগার হওয়ার তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এই প্রতিযোগিতায় সফল হন এম এম নিয়াজউদ্দিন। তরতর করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ, লাভজনক পদ দখল করতে থাকেন ৮৩ ব্যাচের এই কর্মকর্তা। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে তিনি প্রথম আলোচনায় আসেন। তার সময়ে এই অধিদপ্তরের প্রায় ৪ হাজার নিয়োগে নজীর বিহীন বানিজ্য হয়। কোটি টাকার লেনদেনে আলোচিত হন এম. নিয়াজউদ্দিন।

সে সময় এনিয়ে তদন্ত তদন্ত খেলা হলেও, এম নিয়াজউদ্দিনের পদোন্নতি পেতে দেরী হয়নি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব হন। কিন্তু এরকম ছোট মন্ত্রনালয়ে এম. নিয়াজউদ্দিনের মতো প্রভাবশালী থাকবেন, তা কি করে হয়? অত:পর তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের সচিব হন। কথায় বলে, মানুষের লোভ সীমাহীন। একারনেই, নিয়াজউদ্দিন নিজের চাকরীর বয়স বাড়াতে মুক্তিযোদ্ধার জাল সার্টিফিকেট জোগাড় করেন। তখন সরকারী চাকরীতে মুক্তিযোদ্ধা হলে দু বছর বেশী চাকরীর সুযোগ ছিলো। কিন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনে গিয়ে নিয়াজ ধরা খান। দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে প্রমাণিত হয় তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ ভুয়া। দূদক চিঠি লেখে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে। এসময় ‘বরখাস্ত’ হওয়া থেকে বাঁচতে নিজেই চাকরী থেকে ইস্তফা দেন।

আরও পড়ুন : প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে শত কোটি টাকা খোয়া ব্যবসায়ীর

আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তাকে নেয়নি। পরে যোগদেন জাতীয় পার্টিতে।
জাতীয় পার্টির রাজনীতি করলেও, কানাডার কৃষি উন্নয়ন বিভাগের তালিকায় তিনি একজন কৃষক। এজন্য ৭৫ হাজার কানাডিয়ান ডলারে ১ হেক্টর কৃষি জমি লীজ নিয়েছেন। এই জমিতে গ্রীষ্মকালে নানা ফসল হয়। বাংলাদেশে থেকেই এই কৃষি জমি তদারকি করেন নিয়াজউদ্দিন।

বেগম পাড়ায় তার বিলাসবহুল এপার্টমেন্ট রয়েছে। যদিও কাগজে কলমে ঐ এপার্টমেন্টের মালিক কানাডা প্রবাসী বাঙালী আমিনুল হক। তিনি হলফ নামা দিয়ে বলেছেন, এম নিয়াজউদ্দিনের অর্থে তিনি ঐ বাড়ি ১২ মিলিয়ন ডলারে কিনেছেন। আইনী জটিলতায় নিয়াজউদ্দিন ঐ বাড়ির মালিক হননি। তবে, কাগজ পত্র ঠিক করে নিয়াজউদ্দিনই ঐ বাড়ীর মালিক হবেন।

চাকরীতে থাকা অবস্থায় অনেক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত নিয়াজউদ্দিন নির্বিঘ্নে জীবন যাপন করছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়েও কোথাও কোনো আলোচনা নেই। কোনো এক অদৃশ্য শক্তির জোরে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেলেন।

এন এ/ ২৭ নভেম্বর

Back to top button