সচেতনতা

ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

শীতের প্রথম প্রহর শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন হলো। কারও কারও ঠোঁট ফেটে চৌচির হয়ে পড়ছে। তবে গরমকালে যে কারও কারও ঠোঁট ফাটে না ব্যাপারটি এমন নয়। কিন্তু শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক হয়ে পড়ে। ফলে বেশির ভাগ মানুষের মধ্যেই ঠোঁট ফাটা সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। যদি আপনার শীতকালে ঠোঁট বেশি ফেটে যায় ও রক্ত পড়ে, তা হলে ঠোঁটের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে।

সাধারণত শীতকালে আবহাওয়ায় জলীয়বাষ্প কমে যায়। এতে ত্বক শুকিয়ে যায়। ফলে ঠোঁট ফেটে যায়। এ সময় ত্বকের চেয়েও রুক্ষ হয়ে ওঠে ঠোঁট। ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে সাধারণত শীতকালে চ্যাপস্টিক, লিপবাম, পেট্রোলিয়াম জেলি ইত্যাদি ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করা যায়। এছাড়া ঘরোয়াভাবেও আপনি ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করতে পারেন। এক্ষেত্রে যা করতে হবে তা হলো-

নারিকেল তেলের ব্যবহার করুন : ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে দীর্ঘদিন ধরেই নারকেলের তেল করে আসছে মানুষ। এতে উপকারও ভালো পাওয়া যায়। নারিকেল তেলে আছে প্রচুর ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করে।

অলিভ অয়েলের ব্যবহার করুন : অলিভ অয়েলকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার বলা হয়। এতে যে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, তা ত্বকের শুষ্কতা দূর ও ঠোঁট ফাটা ঠেকাতে পারে। দিনে দুবার ঠোঁটে অলিভ অয়েল মাখলে ঠোঁট নরম ও মসৃণ হয়, দূর হয় ঠোঁট ফাটা সমস্যা।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন : বেশি বেশি পানি পান করলে আপনার ঠোঁট নরম থাকবে। কারণ পানি এ কাজটি করে থাকে। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এতে করে ঠোঁটের ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

ঠোঁট দিয়ে জিভ ভেজাবেন না : অনেকেই রুক্ষ ঠোঁট কিছুক্ষণ পর পর জিভ দিয়ে ভিজিয়ে থাকেন, যা একদমই করা উচিত নয়। কিন্তু নিমেষেই রুক্ষ ঠোঁটকে নরম করার এই সহজ উপায় আসলে ফাটা ঠোঁটের মূল কারণ। তাই ঠোঁট নরম রাখতে জিভ দিয়ে ভেজানোর মতো বাজে অভ্যাস দ্রুত পরিত্যাগ করুন।

ভিটামিন-বি ঘাটতি দূর করুন : ভিটামিন-বি’র অভাবও কিন্তু রুক্ষ ঠোঁটের কারণ হতে পারে। তাই বেশি বেশি শাকসবজি খেতে হবে। এখন বাজারে প্রচুর শীতকালীন শাকসবজি পাওয়া যায়। বেশি বেশি খান। ঠোঁট নরম রাখতে ভিটামিন-বি খেতেই হবে আপনাকে।

ঠোঁটে স্ক্রাবিং করুন : ঠোঁটে শীতকালে রুক্ষ্ম চামড়া জমে থাকে। মাঝেমধ্যে স্ক্রাবিং করে সেই চামড়া সরিয়ে ফেলা খুবই প্রয়োজন। ঠোঁট নরম রাখতে সপ্তাহে একদিন ঠোঁটে স্ক্রাবিং করুন।

লিপজেল, বাম হতে হবে ভালো ব্র্যান্ডের : মেয়েরা ঠোঁটে নানা ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করেন। ঠোঁটের ত্বকের ক্ষেত্রে যদি ভালো মানের প্রসাধনী ব্যবহার না করেন, তবে ঠোঁট শুকিয়ে গিয়ে তা ফেটে যায়। তাই ভালো কোনো ব্র্যান্ডের প্রসাধনী ব্যবহার করুন।

ঠোঁট জোরে ঘষাবেন না : হাত-মুখ ধোয়ার সময় বা দাঁত মাজার সময় কোনোভাবেই যাতে ঠোঁটে জোরে ঘষা-মাজা করবেন না। এদিকে খেয়াল রাখুন। এ সময় নরম ঠোঁটে আঁচড় পড়লে তা ভোগাতে পারে।

রাতের বেলায় ঠোঁটের যত্ন : রাতের বেলা একটা দীর্ঘ সময়। খেয়াল রাখবেন, কোনো পেট্রোলিয়াম জেলি বা বাম আপনার ঠোঁটের সঙ্গে ম্যাচিং বা ব্যবহারে আপনি কমফোর্ট ফিল করছেন কিনা। আপনি যদি রাতের বেলায় ঠোঁট ফাটার কারণে ঠোঁটে ব্যথা অনুভব করেন, তা হলে আপনি আপনার আরামদায়ক ও ম্যাচিং প্রসাধনী ঠোঁটে ব্যবহার করুন।

যখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন : যদি শীতকালে আপনার ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হয়, বাজারের সাধারণ প্রসাধন ও ঘরোয়া যত্নে ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধ করতে না পারেন, তা হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যাবেন।

আইএ

Back to top button