খুলনা

নড়াইলে জনতার মুখোমুখি হয়ে যা বললেন মাশরাফি

নড়াইল, ৩০ ডিসেম্বর – নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আপনারা (নড়াইলবাসী) সবসময় বলেছেন আমরা অবহেলিত। আমাদের প্রতিটা ইউনিয়নে টুকটাক ঝামেলা লেগেই থাকে। রাজনীতি তো পাশের জেলা যশোরও করে। কই তারা তো একবারও বলে না- ‘আমরা অবহেলিত’। ঝগড়া বিবাদ তারা আমাদের চেয়ে বেশি করে, কিন্তু জেলার উন্নয়নে তারা এক হয়ে যায়।

তিনি বলেন, উন্নয়ন যেসব জেলায় হচ্ছে, তা তাদের মানসিকতার জন্য হচ্ছে। কোন উন্নয়নমুলক কাজ আসলে, আমরা চিন্তা করি কীভাবে ওই এলাকার কাজ বন্দ করা যায়। ফলে কি দাঁড়ায়? আমাদের অবহেলিত জেলার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী।

বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ‘জনতার মুখোমুখি জনতার সেবক’ স্লোগানকে সামনে রেখে দ্বিতীয় পর্যায়ে লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এসব কথা বলেন তিনি।

মুন্সী আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে জনতার প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করেন নলদী ইউনিয়ন পরিষদ। অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যের কাছে চিকিৎসা সমস্যা, খাল খনন, কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থা, সার সংকট, নদী, রাস্তা-ঘাট, বাজার, খেলার মাঠ, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ঈদগাহ সংস্কার ও নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবি পেশ করেন সাধারণ জনগণ। এ সময় মাশরাফি জনগণের দাবি নোট নিয়ে ধারাবাহিকভাবে তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

তিনি বলেন, নলদী ইউনিয়নে চার বছরে ১৭টি রাস্তায় খরচ হয়েছে ২৬ লক্ষ টাকা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন ৯ লক্ষ টাকা, ১ হাজার ২২০ মিটার রাস্তা এইচবিবি করণ করা হয়েছে। মিঠাপুর একটি খালের উপর ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এই ইউনিয়নের দুটি স্কুলের চারতলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট একতলা ভবন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন মাশরাফি।

সার সংকট সমাধানে ব্যবস্থাগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে এমন সমস্যার কথা শুনেছি। বাকি ইউনিয়নের তথ্য নেওয়ার সময় আপনারা দেন আমাকে। আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে এর সমাধান করে দিবো।

বাধের কারণে ইছামতি বিলে কৃষি জমিতে সেচ সমস্যা সমাধান নিয়ে মাশরাফি বলেন, ব্রিজ নির্মানের জন্য এলজিডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড যে বাঁধ দিয়ে পানি আটকাইছে তাতে আপনাদের সেঁচে সমস্যা হচ্ছে। আপনারা দু’দিন সময় দিছেন এর মধ্যে এটা পারবো কি না জানি না। তবে বিশ্বাস রাখেন আমি চেষ্টা করবো কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করার। যাই হোক এটা নিশ্চিত থাকেন আমি আপনাদের পক্ষ নিয়েই কথা বলবো।

আপনার সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার কারণে অনেকে প্রভাব খাটায়- এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, আমার কথা যদি কেউ বলে তাকে নলদী বাজারে বেঁধে রাখবেন। তবে মারামারি করবেন না। প্রমান সাপেক্ষে ধরে রাখবেন প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। আমি কথা দিচ্ছি, এ ধরনের কোন প্রমান পেলে আমি উপযুক্ত বিচার আপনাদের দিবো।

মাশরাফি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন তিনি নড়াইলের। আমি কিন্তু তার একজন কর্মী মাত্র। নড়াইলের কোন কাজ নিয়ে গেলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে বলেন দিয়ে দাও। নড়াইলের উন্নয়নের ব্যাপার প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। আমরা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নে আন্তরিকতার সঙ্গে অংশ নিলে নড়াইলের উন্নয়ন আপনারা দেখতে পাবেন ইনশাআল্লাহ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যান সিকদার আ. হান্নান রুনু, কালিয়া উপজেলা বাবু কৃষ্ণ পদ, লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন, লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতারা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

সূত্র:আরটিভি নিউজ
আইএ/ ৩০ ডিসেম্বর ২০২২

Back to top button