‘রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে ব্যাংকিং সিস্টেমকে আরো আন্তরিক করতে হবে’
ঢাকা, ২৩ ডিসেম্বর – রেমিট্যান্স বাড়াতে ব্যাংকিং সিস্টেম আরও আন্তরিক করতে হবে এবং দূতাবাসগুলোকে শ্রমিক বান্ধব হতে হবে। প্রবাসী মিশনগুলোর কাজ শ্রমিকদের স্বার্থ দেখা। কিন্তু দুঃখজনক হলো, শ্রমিকরা সেখানে ঢুকতেই পারেন না। এমনকি তাদের সাথে ভালো আচরণও করে না কর্মকর্তারা বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) ডিবেটে ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা জানান।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাসগুলোর যেভাবে প্রবাসী শ্রমিকদের সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসা উচিৎ বাস্তবে তা হচ্ছে না। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ত্যাগের মূল্যায়নের মাধ্যমে তাদের উপযুক্ত সম্মান ও প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার কর্তৃক যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা তাদের দেয়া হয় অনেকে তা জানেই না। আমলাতান্ত্রিক বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে সেগুলো তাদের জন্য আরও সহজ করতে হবে। কারো প্রতি অবিচার করে উন্নয়ন করা যাবে না।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং সিস্টেম ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসী শ্রমিকরা কম উৎসাহিত হয়। অন্যদিকে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তাদেরকে বুকে টেনে নেয়, তাদের সঙ্গে গড়ে তোলে বন্ধুত্বের বন্ধন। সরকার প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসী শ্রমিকদের প্রেরিত অর্থের বিনিময় হার বাড়ালেও হুন্ডি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কায়দা কৌশলে তা আরও বাড়িয়ে দেয়। বৈধপথে যেসব রেমিট্যান্স যোদ্ধা দেশে টাকা পাঠাবে এ বছর থেকেই তাদের ইউনিভার্সেল পেনশন স্কিমের আওতায় আনা হবে। বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের উপযুক্ত সম্মান দেওয়ার বিষয়েও ভাবছে সরকার।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আরও বলেন, শুধু সরকারি কর্মকর্তা, ভিআইপি, সিআইপিদের জন্যই নয় রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্যও সরকারিভাবে প্লট বরাদ্দ রাখা উচিৎ। প্রবাসী কর্মীদের জন্য আইনের সংখ্যা কমাতে হবে এবং আইন আরও সহজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, অব্যবস্থাপনার কারণে প্রবাসী আয় থেকে উপার্জিত অর্থ বৈধ চ্যানেলে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে কিছুটা অনাগ্রহ দেখাচ্ছে অভিবাসী কর্মীরা। হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করলে প্রতি ডলারে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি পেলে কেন একজন প্রবাসী কর্মী বৈধ চ্যানেলে ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাবে। তাছাড়া হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করলে প্রয়োজন অনুযায়ী তা প্রবাসীদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয় হুন্ডি ব্যবসায়ীরা।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, আমাদের অষ্টম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনায় রেমিট্যান্সকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরির মাধ্যমে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অভিবাসন খাতকে এগিয়ে নিতে হবে।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২৩ ডিসেম্বর ২০২২