জাতীয়

২৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত হাসপাতাল

আব্দুল হামিদ

ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর – স্বাধীনতার ৫১ বছরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই মারা গেছেন। যারা এখনও বেঁচে আছেন, তাদের জন্য নানা রাষ্ট্রীয় সুবিধা চালু রেখেছে সরকার। সরকারি সব হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ সুবিধা আছে। সব সরকারি হাসপাতাল ও সেবা কেন্দ্রে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হাফ থেকে ফ্রি সার্ভিস চালু রয়েছে। তবে শুধুই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত একটি হাসপাতাল এখন ‘মৃতপ্রায়’ অবস্থায় আছে। শুধু তাই নয়, এরকম একটি হাসপাতাল যে ছিল তাই জানেন না অনেকে।

রাজধানীর মিরপুর চিড়িয়াখানা সড়কে ১৯৯১ সালে ‘ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতাল’ নামে একটি হাসপাতালের যাত্রা শুরু হলেও কয়েকবছর পর সেটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতালের কিছু সরঞ্জাম এখনও থাকলেও প্রায় ২৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় থেকে সেগুলোও এখন নষ্ট হওয়ার পথে। অ্যাম্বুলেন্স দুটি দীর্ঘদিন পরে থাকায় সেগুলো অকেজো। হাসপাতালটি বন্ধের পর একাধিক সরকার ক্ষমতায় আসলেও এটি চালুর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

কী অবস্থা হাসপাতালটির

গত ১৩ ডিসেম্বর চিড়িয়াখানা রোডের ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতাল ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ৩১ বছর আগে আধুনিক মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতালে করা হলুদ রং এখনও কিছুটা বোঝা যায়। চালু হওয়ার চার বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালটি। এরপর ২৭ বছর এভাবেই দাঁড়িয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি। ভবনের দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে রং আর আস্তরণ।

মুক্তিযোদ্ধ কমপ্লেক্সের নামে বরাদ্দকৃত জায়গায় বসবাস করা বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতাল সম্পর্কে কথা হয়। তারা এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি। এটা যেন তাদেরও জানার বাইরে। কালের বিবর্তনে স্মৃতি থেকে যেন হারিয়ে গেছে হাসপাতালটি। ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতালের সামনেই রিকশা গ্যারেজ, ট্রাস্টের গাড়ি রাখার গ্যারেজ, বাস ও মোটরসাইকেল ওর্য়াকশপসহ বিভিন্ন দোকান ও হোটেলসহ ভ্রামমাণ টি-স্টোর। এছাড়া হাসপাতালের দেয়ালে লেখা নামটিও মুছে গেছে। বেশ কয়েকটি কাঁঠাল গাছও যেন নুয়ে এসে স্মৃতি মুছে দিচ্ছে ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতালের।

হাসপাতালের সামনে পড়ে আছে সেই সময় ফ্রান্স সরকারের দেওয়া দুটি অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমাণ ইউনিট অ্যাম্বুলেন্স, একটি খোলা অ্যাম্বুলেন্স ট্রাক, দুইটি প্রাইভেটকার, একটি ছোট পিকআপ ও একটি বেবিট্যাক্সি। সেখানে দায়িত্বে থাকা এক নিরাপত্তাকর্মী জানান, এই অ্যামবুলেন্স দুটিতে ছিল ভ্রাম্যমাণ অপারেশন থিয়েটার। সময়ের ব্যবধানে অত্যাধুনিক অ্যামবুলেন্স দুটি নষ্ট হওয়ার পথে।

হাসপাতালে প্রবেশ করার আগে ডান পাশে রয়েছে অভ্যর্থনা কেন্দ্র। হাসপাতাল ভবনে প্রবেশ করেই ডান হাতে নামফলকে লেখা ‘জরুরি বিভাগ’। রুমের ভেতরে দেখা গেছে তিনটি বেডসহ বেশ কিছু আসবাবপত্র। জরুরি বিভাগে রয়েছে বিদ্যুৎ ও নেট সংযোগ। ভবনের বাইরে কেচিগেট লাগানো অবস্থায় রয়েছে ডাক্তারদের পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি পরিত্যক্ত প্রাইভেটকার। আর বামে হাসপাতালে প্রবেশ করতেই সারি সারি রয়েছে হিসাব, মেডিসিন ও টিকাদান কেন্দ্রসহ বিভিন্ন দফতারের কক্ষ। শেষ প্রান্তে রয়েছে আলট্রাসনোগ্রাম, প্যাথলজি, এক্স-রে, ইসিজি, ও এন্ডোস্কপি বিভাগ।

পুরো পাঁচ তলা ভবনটি ঘুরে হাসপাতালের জিনিসপত্র বিশেষ কিছু দেখা যায়নি। আর যাও বা আছে, সেগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। ভবনটির নিচ তলায় এখনও আছে পানি ও বিদ্যুৎতের সুবিধা। সন্ধ্যা হলেই ‘ভুতুড়ে’ হাসপাতালের কয়েকটি কক্ষে জ্বলে উঠে আলো।

দুই তলা থেকে পাঁচ তলা পর্যন্ত ওঠার সময় চোখে পড়ে, দুই পাশের দেয়াল থেকে খসে পড়ছে রং ও প্লাস্টার। এর মধ্যেও দেখা যায়, দেয়ালে ঝোলানো নামফলকে লেখা বিভিন্ন বিভাগের নাম। হাসপাতালের কোন তলায়, কোন পাশে, কী কী সুবিধা রাখা হয়েছে এগুলো লেখাই আছে কেবল। কনফারেন্স হলসহ বিভিন্ন ধরনের হলরুম রয়েছে। সিলগালা করা আছে বিভিন্ন দরজা।

হাসপাতালের বিষয়ে বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেও কিছু জানা সম্ভব হয়নি। অবশেষে ঠিকানা পেয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানা রোডের মুখে হাসপাতালে গেলে মোকবুল হোসেন নামে এক নিরাপত্তাকর্মী এগিয়ে আসেন। তিনি জানতে চান, কার কাছে আসছেন। হাসপাতালের খোঁজেই এসেছি বলার পর তিনি বলেন, এখানে আপনাকে তথ্য দেওয়ার মতো কেউ নেই। আমরা এই হাসপাতালের লোক না।

মোকবুল দাবি করেন, মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টের আরেকটি প্রতিষ্ঠান তাবানি বেভারেজ কোম্পানির (এক সময়ের কোকাকোলা ফ্যাক্টরি) নিরাপত্তাকর্মী। ওই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ওখানকার কাগজপত্রসহ বেশকিছু জিনিসপত্র এখানে রাখা হয়েছে। সেই সব জিনিসপত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন তিনিসহ ছয় জন নিরাপত্তাকর্মী। তার কথার সত্যতা মেলে ডিউটির হাজিরা বইয়ে স্বাক্ষর দেখে।

হাসপাতালের ইতিহাস

মিরপুর এক নম্বরে জাতীয় চিড়িয়াখানার পাশে বিসিআইসি কলেজের উল্টো পাশে রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে কয়েকটি বাস। তার আড়ালেই পড়ে আছে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত চার তলা বিশিষ্ট ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতাল। ভবনের নাম ফলকে দেখা যায়, ১৯৮০ সালের ২৫ মার্চ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধ কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমান। তার ১১ বছর পর ১৯৯১ সালের ১ ডিসেম্বর কমপ্লেক্সের পাশেই ‘ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতাল’এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

এই হাসপাতাল চালু হওয়ার পর দুই বছর চালায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট। আর দুই বছর চালায় অন্য একটি সংস্থা। এরপর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় ৩০ শয্যা ভ্রাম্যমাণ ও ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতালটি। এরপর থেকে গত ২৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে স্থাপনাটি।

মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের জারি করা বিভিন্ন নোর্টিশ ঝুলে আছে হাসপাতালের দেয়ালে। এছাড়া প্রতিষ্ঠান প্রধান খোরশেদ আলম থেকে শুরু করে অফিস সহায়ক সেলিম, এমন ২৪ জন কর্মীর মোবাইল নম্বরসহ নামের একটি তালিকাও শোভা পাচ্ছে জরুরি বিভাগের দরজায়। কিন্তু কোনও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ নেই তাতে।

ট্রাস্টের এক নথিতে দেখা যায়, চিড়িয়াখানা রোডে মুক্তিযোদ্ধ কমপ্লেক্সে নামে ১৩ দশমিক ৭২ একর জায়গা ছিল। পরে চিড়িয়াখানের পাশে গার্ডেন জন্য ১ দশমিক ৩২ একর নিয়ে যায়। বর্তমানে ১২ দশমিক ৩৯ একর জমির এরমধ্যে ৪ একর জায়গা ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতালের নামের বরাদ্দ আছে। আরেক নথিতে দেখা যায়, এই ১২ দশমিক ৩৯ একর জমিতে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের পরিবারবর্গ ঘরবাড়ি নির্মাণ করে ভোগ দখল করছেন। ওখানে ২৮০টি পরিবার বসবাস করছে। এরমধ্যে ১০৩টি পরিবার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসেবে গেজেট দাখিল করেছেন। বাকিদের তথ্য পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, ফ্রান্স সরকারের আর্থিক অনুদানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে বিএনপি সরকার। পরে ওই সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালটি। এরপর আবার ক্ষমতায় আসার পরেও আর প্রতিষ্ঠিত হাসপাতাল পুনরায় চালু করতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশেই হাসপাতালটির ভেতরের অংশে গাছপালা ঘেরা জায়গায় চলছে মাদক সেবন। আর হাসপাতাল থেকে হাত ২০ দূর থেকেই উঁচু ভূমি কেটে সমতল করে দখল করে বসবাস শুরু করেছে স্থানীয়রা। আর রাস্তার পাশের অংশ দখলে চলে গেছে বিভিন্ন গাড়ির গ্যারেজ এবং ওয়ার্কশপসহ অবৈধ দোকনপাটের দখলে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট নিজেও হাসপাতালের নিচে একটি টিনেশেডের গ্যারেজ তৈরি করেছে। সেখানে অফিসারদের গাড়ি রাখা হয়। আর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে খালি জায়গায় রাখা হয় ট্রাস্টের এমডির গাড়ি।

মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের এক কর্মকর্তারা জানান, সেই সময় ফ্রান্স সরকারের অর্থায়নে দুই বছর চলে হাসপাতাল। এর জন্য অনুদান হিসেবে প্রায় ৪ কোটি ১৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা পায় বাংলাদেশ। ফ্রান্স থেকে অর্থের যোগান বন্ধ হলে গেলে হাসপাতালও বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থা দেখে কর্তৃপক্ষ ১৯৯৩ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে হাসপাতালটি ইজারা দেয়। ইসলামি উম্মাহ মেডিক্যাল কলেজ নামে এক প্রতিষ্ঠান দুই বছর চালায় হাসপাতালটি। বেশি দিন ধরে রাখতে পারেনি তারাও। পরে ১৯৯৫ সাল তারা ছেড়ে চলে গেলে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতাল।

নিরাপত্তা সুপারভাইজর মোকবুল হোসেন বলেন, এখানে আমিসহ ছয়জন আছি। দুই শিফটে নিরাপত্তাকর্মীরা ডিউটি করে। রাতে এখানে সারদের গাড়ি রাখা হয়। এজন্য রাতেও এখানে ডিউটিতে থাকে আমাদের সদস্যরা। এখানে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র রয়েছে। সেগুলোর নিরাপত্তায় রয়েছি।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এক চা বিক্রেতা রেজাউল করিম বলেন, আমি কখনও দেখি নাই হাসপাতাল চালু আছে। কয়েক বছর ধরে দেখছি বিভিন্ন জন আসে মাপঝোঁক করে নিয়ে যায়। বলে কাজ শুরু হবে। পরে দেখি কিছুই না। বর্তমানে এখানে বেশ কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী ডিউটি করেন। পুরাতন জিনিসপত্র রয়েছে সেগুলো দেখাশোনা করেন। আর রাতে এই হাসপাতালের মধ্যে কয়েকটি গাড়ি থাকে।

বীর মুক্তিযোদ্ধারা যা বলছেন

ট্রাস্ট আধুনিক হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা সোনা মিয়া খান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান করে গেছেন। কিন্তু এই হাসপাতালটা ধরে রাখতে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্টের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ ঠিক মতো খোঁজখবরও রাখে না। এছাড়া আয়ের চেয়ে ব্যয় করে বেশি। এখানে যারাই চাকরি করেছে, তারাই চুরি করেছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বাকি মোল্লা যুদ্ধের সময় হারিয়েছেন এক পা, কানেও শোনেন না ঠিক মতো। সরকার থেকে দেওয়া অটো হুইল চেয়ারে চলাফেরা করেন। পকেটে করে নিয়ে বেড়ান বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর করা সনদপত্র। তাতে লেখা আছে- প্রিয় বাকি মোল্লা, বিগত স্বধীনতা সংগ্রামে তুমি যে ত্যাগ, তিতিক্ষা, সাহসিকতা ও নির্ভীকতা দেখিয়েছ তা দুনিয়ার ইতিহাসে দেশ প্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই দেশ আজ তোমাদের জন্য গর্বিত। দেশকে স্বাধীন করার যে মহান দায়িত্ব তোমরা পালন করেছ, সেজন্য বাঙালিরা তোমাদের কাছে চিরঋণী। তাই বাংলাদেশ সরকার, জনগণ ও আমার নিজের পক্ষ থেকে আমি তোমাকে জানাচ্ছি আন্তরিক ধন্যবাদ—শেখ মুজিবুর রহমান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বাকি মোল্লা বলেন, হাসপাতালটি বন্ধ হওয়ার পরে কিছু মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হাসপাতাল বসবাসের জন্য দখলে নেয়। পরে তাদের অবৈধ সব পরিবারকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। ধারণা ছিল, অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করার পরে হয়তো ফের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হাসপাতালে চালু করবে সরকার। কিন্তু সেটা আজও হয়নি, পড়ে আছে অযত্নে অবহেলায়। এছাড়া হাসপাতালের যন্ত্রাংশ কে বা কারা বিক্রি করেছে, সেটা জানা যায়নি।

বাকি মোল্লার মেয়ে শাহীনা আক্তার বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হাসপাতালটি আমরা ছোটবেলায় দেখেছি চালু করতে। তবে কীসের জন্য যে বন্ধ হয়ে যায়, এটা বলতে পারি না। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এমন একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আসলেই গৌরবের। এছাড়া মিরপুরের এখানে বেশ কয়টি বেসরকারি হাসপাতাল আছে। কিন্তু এই এলাকায় কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বসবাস করেন। তাদের জন্য একটি হাসপাতাল খুবই জরুরি। কমপ্লেক্সে কেউ অসুস্থ হলে তাদের নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পিজিসহ ঢাকা মেডিক্যালে দৌড়াতে হয়। যদি এখানে হাসপাতাল থাকতো তাহলে অনেক অংশে ভোগান্তি কমতো।

মন্ত্রীর বক্তব্য

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মাত্র একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না। এছাড়া এই হাসপাতালটি আবার নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা, ডাক্তার, নার্স ও স্টাফ নেওয়া এটা অনেক ব্যয়বহুল। আমরা এই টাকা দিয়ে সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছি।

হাসপাতাল চালু করার কোনও পরিকল্পনা আছে কিনা সেবিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, হাসপাতাল চালু করার কোনও পরিকল্পনা নেই। এটা এখন আর কোনও কাজে আসবে না। এছাড়া সারাদেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এখানে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসবে না বলেও মনে করেন তিনি।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আইএ/ ২০ ডিসেম্বর ২০২২

Back to top button