জাতীয়

স্বাধীনতার ৫১ বছরেও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে পারিনি

ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর – মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জিত হয়েছে ৫১ বছর আগে, যা জাতির জন্য গৌরবের। কিন্ত দুঃখজনক হলো বিজয়ের চেতনা এখনো পুরাপুরি সফল হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও জঙ্গিবাদের উত্থান আমাদের জাতীয় অগ্রগতির পথে আজ সবচেয়ে বড় বাধা। এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী, যারা ধার্মিক নয়, ধর্মের মিথ্যাচার করে ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকানি দিয়ে সমাজে বিদ্বেষ সৃষ্টি করছে।

 

তারা সমাজ ও দেশের শত্রু। বর্তমান প্রেক্ষাপটে জামায়াত ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী কোনো দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকা অনুচিত। এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াত-ই-ইসলামী জাতির কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায়নি।
আজ রবিবার রাজধানীর এফডিসিতে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত বিজয় দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

মন্ত্রী বলেন, দেশের অনেক অগ্রগতি থাকলেও দুঃখজনক ও সত্য হচ্ছে স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও আমরা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন করতে পারিনি। বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করলেও এখনো পুরাপুরি ভাবে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। রাষ্ট্র সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা অধিকারের কথা বলি কিন্তু স্ব স্ব ক্ষেত্রে দ্বায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করি না।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তিতে আজ আমাদের বক্তব্য, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশকে যারা তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিল, তাদের তাক লাগিয়ে প্রিয় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। ৫১ বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩০ গুণ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১২৯ ডলার। যা বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার ডলার। তবে গত ৫১ বছরে দেশের অনেক অগ্রগতি হলেও এখনও বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি প্রতিরোধ করে সুশাসন ও সম্পদের সুষম বণ্টন করা। বাংলাদেশের এখনো বড় সমস্যা আর্থিক বৈষম্য। দেশের ৫২ শতাংশ সম্পদের মালিক ৫ শতাংশ মানুষ।

‘বিজয়ের চেতনা বৃথা যায়নি’ শীর্ষক এই বারোয়ারী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম শ্রেষ্ঠ বক্তা হবার গৌরব অর্জন করে ঢাকা ক্যান্ট. গার্লস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শায়লা নুশমা, দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ বক্তা সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আবরার ফাইয়াজ এবং তৃতীয় শ্রেষ্ঠ বক্তা যৌথভাবে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাদিয়াহ তাসনিম খান ও বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের এইচ এম নাঈম সানজিদ।

প্রতিযোগিতায় আরো অংশগ্রহণ করেন তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার ইয়াকুব ইসলাম শাহেদ, শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের আশফাকুল ইসলাম ইফাদ, সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার মাহমুদুল হাসান মাহমুদ, রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের সুমনা চাকমা ও আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের জিন্নিউন হক জীবা। প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম, সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয় ও উন্নয়ন কর্মী অনিতা ইসলাম।

সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ১৮ ডিসেম্বর ২০২২

Back to top button