তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ সিরাজ খান
কলকাতা, ২৬ নভেম্বর- শুভেন্দু অধিকারী এখনও দল ছাড়েনি। তবে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান যোগ দিলেন বিজেপিতে। নতুন দলে যোগ দিয়ে তিনি জানান, শুভেন্দু অধিকারীর আশীর্বাদ পেয়েছেন তিনি। এই মন্তব্যে নতুন জল্পনা উসকে দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজ্য সরকার উর্বর জমিকে নষ্ট করছে। শুভেন্দুকে দলে রাখতে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। শুভেন্দু যে দাবিদাওয়া জানিয়েছেন, তা নিয়েও আলাদা করে বৈঠকে বসেছেন তৃণমূলের সাংসদরা। এখনও বাকি তৃতীয় দফার বৈঠক।
বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কৈলাস ফের ‘ভাইপো’ প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘যদি কাউকে ধরে জিজ্ঞাসা করেন যে পশ্চিমবঙ্গে কয়লা চোর কে? বলবে ভাইপো। যদি জিজ্ঞাসা করেন প্রশাসনিক পদে বদলি করেন কে? বলবে ভাইপো। এই ভাইপোটি কে, তা সবাই জানেন। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের চরিত্র সবার কাছে পরিষ্কার। তিনি ১০ বছর ধরে বাংলাকে ধ্বংস করছেন। এখন লোক তাঁকে ছেড়ে চলে যাবে।’
এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে শুভেন্দু–ঘনিষ্ঠ সিরাজের দাবি, তাঁকে আশীর্বাদ করেছেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, যেমন চেয়েছি কাজ করতে পারছি না। শুভেন্দুকে মেসেজ করি, তিনি আশীর্বাদ করেছেন আমায়। বিজেপি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় তাঁকে দলে স্বাগত জানান। যে মঞ্চে সিরাজ গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেন, সেখানে তাঁর সামনেই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ওঠে।
এরপর তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘আমি একজন মৎস্যজীবী। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে সেখান থেকে কেন আমি হঠাৎ করে বিজেপি দলে এলাম? কাজ করব বলে। রাজ্যজুড়ে অকৃষি জমিতে মাছ চাষ হবে। উর্বর কৃষি জমি নষ্ট করছে রাজ্য সরকার। সংখ্যালঘু ভাইদের টুপি পরাচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারী আমাদের নেতৃত্ব ছিলেন, ফোনে এসএমএস করেছি, আশীর্বাদ দেবেন। নিরাপত্তা কর্মী তুলে নিলে নেবে। ভালভাবে কাজ করলে মানুষ নিরাপত্তা দেবে। আমার দফতরে কাজ খারাপ হচ্ছিল। ছদ্মবেশে ধরিয়ে দিয়েছি। তারপরেও কোনও কাজ হয়নি।’
উল্লেখ্য, শুভেন্দুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছে বিজেপিও। দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় দরজা খোলা আছে, উনি আসতেই পারেন বলে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন। যদিও প্রবল জল্পনার মধ্যেই শুভেন্দু জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন। তার মধ্যেই তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এই নেতা গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন। আর কে কে এই শিবিরে (শুভেন্দু–ঘনিষ্ঠ) নাম লেখান এখন সেটাই দেখার। তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
আর/০৮:১৪/২৬ নভেম্বর