জাতীয়

কূটনীতিকদের মধ্যে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করতে চায় সরকার

ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর – মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে রাজধানীর শাহীনবাগে যে ঘটনা ঘটেছে তা গভীর উদ্বেগের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, একজন কূটনীতিবিদ একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। সেখানে সরকারি দলের মদদে আরও কিছু লোক আরেকটি প্রতিষ্ঠানের নামে (মায়ের কান্না নামে একটি সংগঠন) উপস্থিত হওয়াটাই আইন বিরোধী। এটা পরিষ্কার এখানে সরকারের মদদে, তাদের সহযোগিতায় এ ঘটনা ঘটছে। সরকারের মন্ত্রীদের কথাবার্তায় তো পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, এ ধরনের একটি ঘটনাকে তারা ইনডাইরেকলি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তাদের মদদ ব্যতীত এ ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটি চেয়ারম্যান আমীর খসরু বলেন, সরকার চাচ্ছে এ ধরনের ঘটনা ঘটুক। এর মাধ্যমে একটা ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হোক। দেশের মানুষকে যেমন ভয়ভীতির মাধ্যমে দমিয়ে রাখতে চাইছে- এখন কূটনীতিকদেরও ভয়ভীতি সৃষ্টি করে, অর্থাৎ ভিন্ন পরিবেশ সৃষ্টি করে এই অবৈধ, দখলদার সরকার অব্যাহতভাবে ক্ষমতায় থাকার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। এটাই প্রমাণ করে।

তিনি বলেন, একদিকে বাংলাদেশের মানুষ যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, অন্যদিকে কূটনীতিকদের নিরাপত্তাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো। তাদের সঙ্গে আমাদের বড় বাণিজ্য আছে, বহুবিধ সুসম্পর্ক আছে। তাদের সঙ্গে সম্পর্কটা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এখানে যে দেশের মানুষের নিরাপত্তাহীনতা, কূটনীতিকদের নিরাপত্তাহীনতা, এটা কি প্রতিফলন ঘটে। এটা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আমীর খসরু বলেন, কেউ যদি নিজেদের অনুষ্ঠান করতে চায় সে অধিকার আছে কিন্তু আরেকটি অনুষ্ঠানে গিয়ে সেখানে বাধাগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া এবং সেটাকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া অগণতান্ত্রিক। আর এটা প্রথমবার নয়। এর আগেও দেখেছি সরকারি দলের মদদে মোহাম্মদপুরে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে আক্রমণ করেছে। এর আগে বিএনপির একটি মানবাধিকার বিষয়ক অনুষ্ঠানকেও বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। তারা একই লোক। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে বাধাগ্রস্ত করার যে একটা চেষ্টা সরকারের মদদে, এটা তো আওয়ামী লীগের চরিত্রে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, শাহীনবাগের ঘটনায় বলা হচ্ছে যে, সরকারকে বলা হয়নি। তার মানে এটার অর্থ সরকারকে না বলে কোন অনুষ্ঠানে যাওয়া যাবে না। এটা কোথায় আছে? রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও তো পুলিশের বহর আছে। তার মানে সরকার অবগত আছে। যদি বলাও না হয় এটার অর্থ এই যে, আপনি সরকারকে না বলে কোথাও গেলে সে মানুষগুলো নিরাপত্তা পাবে না। এটা কি হতে পারে নাকি। তাদের বলে গেলে নিরাপত্তা পাবেন, না বলে গেলে পাবেন না- এটাও তো একটা দেশের নিরাপত্তার চরিত্র সেটার কী প্রতিফলন ঘটছে না এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। এর আগে নৈশভোজে গেলে মার্শা বার্নিকাটের বহরে হামলা হয়েছে, তারও কোনো বিচার হয়নি। সেখানেও বুঝা গেছে এর পেছনে কারা ছিল।

আমীর খসরু বলেন, এর আগে বিএনপির প্রোগ্রামে মায়ের কান্না নামে একই লোক বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। তারা তাদের অনুষ্ঠান করতে পারে, কিন্তু অন্যের অনুষ্ঠানে গিয়ে বাধাগ্রস্ত করা আইন বিরোধী। তাদের (মায়ের কান্না নামে একটি সংগঠন) বিরুদ্ধে অ্যকশনে যাওয়ার কথা, সেটা তো দেখছি না। বার্নিকাটের বহরে হামলার ঘটনায়ও দেখেছি, কোনো রকমের বিচার হয়নি। দেশের মানুষের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশিদের নিরাপত্তা, কূটনীতিকদের নিরাপত্তা যদি একটি দেশে প্রশ্নবিদ্ধ হয়, সে দেশের সত্যিটার চরিত্র তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতিফলন ঘটছে।

তিনি বলেন, একটি অনুষ্ঠান যেখানে হচ্ছে সেখানে আর কেউ গিয়ে অন্য কিছু করার চেষ্টা করাটাই তো আইন বিরোধী কাজ। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সূত্র: যুগান্তর
আইএ/ ১৫ ডিসেম্বর ২০২২

Back to top button