বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের দাম নির্ধারণ
নারায়ণগঞ্জ, ১৪ ডিসেম্বর – বিশ্ববাজারে তেলের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রাইজ নির্ধারণ করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল মেঘনা ডিপোর রিসিভার টার্মিনাল স্থাপনের কাজ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে পাইপলাইন দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে (৩টি ডিপোতে) জ্বালানি তেল সরবরাহ হবে বলে আশা করছি। দ্রুততম সময়ে মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল মেঘনা ডিপো পর্যন্ত পাইপলাইন স্থাপন করছে। এরই মধ্যে পাইপলাইনের অনেক কাজ এগিয়ে গেছে।
আগামী দুই বছরের মধ্যে পাইপলাইন দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে জ্বালানি তেল সরবরাহ হবে বলে আশা করছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। পাইপলাইনে তেল সরবরাহ করা হলে পরিবহন খাতে জ্বালানি তেলের দাম অনেক সাশ্রয়ী হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাইপলাইন স্থাপনের কাজ তদারকি করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ২৪ ও ৩৪ ব্রিগেড।
বাংলাদেশি ঠিকাদারের মাধ্যমে এই পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৬-২০১৭ সালে এই কাজ শুরু হলেও কোভিডের কারণে দুই বছর কাজ বন্ধ ছিল। যে কারণে নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে। পাইপলাইন স্থাপন সম্পন্ন হলে জ্বালানি সরবরাহে ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে পতেঙ্গা থেকে গভীর সমুদ্র বন্দরে পাইপলাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগে বড় মাদার ভেসেল থেকে ছোট ছোট লাইটার জাহাজে করে তেল নিয়ে পতেঙ্গাতে আসত। সেখান থেকে গাড়িতে বা ছোট ছোট জাহাজে করে বিভিন্ন ডিপোতে সরবরাহ করা হতো। মাদার ভেসেল বা বড় জাহাজ ১২-১৪ দিন বসে থাকার কারণে ডেমারেজ গুনতে হতো। ডিপ-সি পাইলাইন স্থাপনের কারণে খরচ কমে আসবে।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এছাড়া পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম পতেঙ্গা থেকে গোদনাইল এবং গোদনাইল ডিপো থেকে বিভিন্ন জায়গার সরবরাহ করা হবে। এতে তেল পরিবহনে খচর অনেক কমে আসবে। প্রাইজে সেভ হবে।
তিনি বলেন, রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ থেকে পাইপের মধ্যে নতুন বিমানবন্দর পর্যন্ত বিমানের জ্বালানি তেল কুর্মিটোলা ডিপোতে চলে আসবে। পাইপলাইনে তেল সরবরাহের জন্য স্কাটার্স সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। পাইপের মধ্যে জ্বালানি তেলের টেম্পারেচারে পরিবর্তন বা কোনো টেম্পারিং হলে টেকনোলজির মাধ্যমে তা মনিটরিং করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিপিসি একটি বড় প্রতিষ্ঠান। কিছু প্রশ্ন থাকে। সংসদীয় কমিটি বিসিপি আর্থিক বিষয় নিয়ে একটি প্রশ্ন তুলেছেন। আমরা বিপিসিকে বলেছি, একটি তৃতীয় অডিট প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ফাইনান্সসিয়ালসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি অডিট করানোর জন্য। প্রতি পাঁচ বছর পর পর প্রতিষ্ঠানের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা যেহেতু আগামীতে তেলের ওপেন মার্কেটে প্রবেশ করার চেষ্টা করছি, তাই আমাদের পলিসি লেভেলেও গুণগত পরিবর্তন প্রয়োজন। লেগুলেটরি বডির সঙ্গে আমরা কথা বলছি, আগামীতে তেলের দাম নির্ধারণ কি তিন মাস পরপর, নাকি দুই মাস পর নাকি এক মাস পরপর হবে সে বিষয়ে আগামী বছরের শুরুতেই সিদ্ধান্ত নেব।
পরে মন্ত্রী শিবু মার্কেট এলাকায় তেল সরবরাহেব পাইপলাইনের কাজ ও ফতুল্লার মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপো প্রস্তাবিত রিসিভ টার্মিনালের নির্মাণ কাজ জায়গা পরিদর্শন করেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিপিসির ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: যুগান্তর
আইএ/ ১৪ ডিসেম্বর ২০২২