জাতীয়

জীবনে একটি টাকাও হারাম খাইনি

ঢাকা, ৭ ডিসেম্বর – ঢাকা ওয়াসায় ডিজিটাইজেশন করায় এবং দাপ্তরিক কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় এবং দুর্নীতির দায়ে অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াতে কিছু মানুষ আমার বিপক্ষে সব সময় প্রমাণ ছাড়া মিথ্যা অভিযোগ করে আসছে। অথচ কোনো সময় একটা অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি।

আজ বুধবার কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‌আলাপকালে ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন।

ওয়াসার দায়িত্ব আমি নেওয়ার আগে কী পরিস্থিতি ছিল আর বর্তমানে কী পরিস্থিতি সেটা সবার জানা। ২০০৯ সালের আগে বছরের একটা সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনাবাহিনীকেও দায়িত্ব দেওয়া লাগত। ২০১০ সালের পর আর এমন পরিস্থিতি হয়নি। ’
‘দায়িত্ব পাওয়ার পর ঢাকা ওয়াসা পানির সিস্টেম লস বা অপচয় রোধের দিকে নজর দিই’ জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, ‘আর সিস্টেম লস দূর করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়েছে। কারণ আগে রাজধানীর বস্তি এলাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঞ্চলে ওয়াসার পাইপলাইন সহজেই লিকেজ হয়ে যেত। সেই লিকেজ পাইপলাইন দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানি অপচয় হয়েছে। ’

ওয়াসা এমডি বলেন, ‘এই সিস্টেম লস ঠেকাতে পানির বিতরণ কার্যক্রম বা নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করা হয়। ফলে বর্তমানে পানির অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়েছে, যেখানে এশিয়ার অন্যান্য দেশে গড়ে ৪০ ভাগ পানি সিস্টেম লস হয়। এখন ঢাকা ওয়াসায় মাত্র ৫ ভাগ পানি সিস্টেম লস হচ্ছে। এমন ব্যবস্থাপনা ইউরোপের দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে নেই। ’

তিনি আরো বলেন, ‘ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পে তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য। প্রজেক্ট সংক্রান্ত অভিযোগ সবই অসত্য। যদি দুর্নীতি হয়েই থাকে, অনুসন্ধান করে কী করলেন? এই অভিযোগটি ২০১৫ সালের। গত সাত বছরে কোনো তদন্ত ও অনুসন্ধান অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। কোনো মামলাও হয়নি। কোনো প্রজেক্টের সঙ্গে ওয়াসার এমডির সম্পর্ক থাকে না। দাতা সংস্থা সব দেখভাল করে। ’

‘২০০৯ সালে দেওয়া আমার নিয়োগপত্রে কোনো ঘষামাজা ছিল না’ জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, ‘সেখানে নিয়োগের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কিছু অনুশাসন আর নির্দেশনা ছিল। এ‌মডি হিসেবে নিয়োগে কোথাও কোনো ঝামেলা নেই। ২০২০ সালেও এ রকম একটি রিট করা হয়েছিল, তা খারিজ করে দেন আদালত। ওয়াসার আইনজীবী বিস্তারিত তুলে ধরেছেন আদালতের সামনে। ’

‘জীবনে একটি টাকাও হারাম খাইনি’ উল্লেখ করে তাকসিম এ খান বলেন, ‘আমি আমার জীবনে একটি টাকাও হারাম খাইনি। গর্বের সাথে আনন্দের সাথে বলতে পারি। যত অভিযোগ আছে এতে ভয়ের বা লজ্জার কিছু নেই। আপনারা বুঝবেন, এগুলো ওয়াসার অসাধু কর্মকর্তারাই করছেন। ’

প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, ‘যদি কোনো বিষয়ে আইনের ব্যত্যয় হয়ে থাকে তবে আইনের মাধ্যমে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না? যদি গতকালের ঘটনায় কোনো আইনের ব্যত্যয় হয়ে থাকে তবে আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাঁচ বছরের মধ্যে যদি আইন ভাঙা হয়ে থাকে তাহলে ব্যবস্থা কেন নেওয়া হলো না? আইন সঠিকভাবেই মানা হচ্ছে। কোথাও আইন ভাঙা হয়নি। ’

ওয়াসার কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১০ সালের রোডম্যাপে আমাদের ছিল জিরো টলারেন্স অ্যাগেনেস্ট করাপশন। বহু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। যারা অবৈধ কাজ করতেন তাদের এই কাজের সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছি। তারা কি আমার ওপর সন্তুষ্ট থাকবেন? অসাধু কর্মকর্তারাই চেষ্টা করছেন আমাকে হেয় করতে ও ওয়াসার পদ থেকে সরিয়ে দিতে। ’

এর আগে দুদকের দেওয়া এ প্রতিবেদন দেখে ওয়াসার এমডির নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে করা রিট মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।

সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ৭ ডিসেম্বর ২০২২

Back to top button