আফ্রিকা

কঙ্গোতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলায় নিহত ২৭০

ব্রাজাভিল, ০৬ ডিসেম্বর – ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় কিশিশে গ্রামে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলায় ২৭০ জনের বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকার। গত সপ্তাহে এই হামলায় ৫০ জন মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল।

সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী জুলিয়েন পালুকু বলেন, নিহত ব্যক্তিরা সকলেই কিশিশের সাধারণ বাসিন্দা, যাদের সাথে মিলিশিয়াদের কোন ধরনের সম্পর্ক ছিল না।

হামলার ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে জানিয়ে সরকারি মুখপাত্র প্যাট্রিক মুয়ায়া বলেন, এই মুহূর্তে হামলার বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারছি না। অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা তদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছি।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা যা জানতে পেরেছি তা হলো, হামলায় একটি অ্যাডভেন্টিস্ট গির্জা এবং একটি হাসপাতালে শিশুদেরও হত্যা করা হয়েছে।

গত অক্টোবর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী ও এম২৩ বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাতের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। নভেম্বরের ২৯ তারিখে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার পর সর্বশেষ এই হামলা ও হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হল।

এই হামলায় জন্যও এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের দায়ী করেছে কঙ্গো সরকার। তবে সরকারের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এমনকি, বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের সংখ্যাও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে এম২৩ গ্রুপের নেতারা।

তাদের অভিযোগ, সরকারি সৈন্য এবং তাদের সহযোগী গোষ্ঠী দেশের অন্য অঞ্চলে যেসব নৃশংসতা চালিয়েছে তা থেকে মনোযোগ সরানোর জন্য এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি করা হচ্ছে।

গ্রুপের চেয়ারম্যান বার্ট্রান্ড বিসিমওয়া বলেন, সরকার দুটি উদ্দেশ্যে এটা করছে। প্রথমত, সরকারি বাহিনী কিশিশে সংঘর্ষে যে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তা ধামাচাপা দিতে চায়। দ্বিতীয়ত, সরকারের সহযোগী গোষ্ঠীরা যে নৃশংসতা চালিয়েছে তা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়া। তদন্ত ছাড়াই সরকার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে বলে দাবী করেন বিসিমওয়া।

এদিকে হামলা ও গণহত্যার ব্যাপারে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে কঙ্গোতে জাতিসঘের শান্তিমিশন।

এর আগে জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ দল বছরের শুরুতে জানিয়েছিল, চলমান লড়াইয়ে এম২৩ বিদ্রোহীদের সাথে রুয়ান্ডার সৈন্যরা মিলিত হয়েছে এবং বিদ্রোহী গ্রুপকে তারা যে অস্ত্র ও সহায়তা প্রদান করছে তার প্রমাণ রয়েছে। যদিও রুয়ান্ডা এটা অস্বীকার করেছে।

এই সমস্যার একটি সমাধান খুঁজতে কঙ্গো ও রুয়ান্ডার নেতারা বেশ কয়েকবার সভা করেও লাভ হয়নি। তাদের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল লুয়ান্ডায়, যেখানে দুপক্ষই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। তবে তা সংঘাত থামাতে পারেনি।

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এই হত্যাকাণ্ডকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের সামিল বলে অভিহিত করেছেন।

অন্যদিকে, মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যারা জীবিত আছে তাদের সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘের সেনা মোতায়েন করার আহ্বান জানিয়েছে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৬ ডিসেম্বর ২০২২

Back to top button