জাতীয়

বিএনপি সমাবেশের নামে পিকনিক করছে

ঢাকা, ২০ নভেম্বর – বিএনপি সমাবেশের নামে আসলে বড় বড় পিকনিক করছে এবং সেজন্য চাঁদাবাজি করছে। এমন মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি বিএনপির সমাবেশগুলো আসলে বড় পিকনিক। সিলেটের সমাবেশে তারা তিনদিন আগে গেছে, হোটেলে খাওয়া দাওয়া, তাস খেলা আবার মাঠের মধ্যে তাঁবু টানিয়ে রান্নাবান্না করে খেয়েছে। এটা একটা বড় পিকনিক। শীতের সময় আমরা যেমন পিকনিকে যেতাম, বিএনপির নেতাকর্মীরাও শুধু সিলেট অঞ্চল থেকে নয়, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, ঢাকা থেকেও গেছে এবং সেখানে গিয়ে সমাবেশের নামে বড় পিকনিক করেছে। এগুলোর জন্য সারাদেশে চাঁদাবাজি করছে। অনেক ব্যবসায়ী আমাদের অভিযোগ দিয়েছেন, বিএনপি ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে বা করার চেষ্টা করছে।

সাংবাদিকতার নামে কারও রাজনীতি করা উচিত নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, গতকাল সিলেটে বিএনপির এবং ঢাকার গাজীপুরে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ হয়েছে। উপস্থিতির বিচারে দুটি সমাবেশেই সমপরিমাণ লোক সমাগম হয়েছে। বরং গাজীপুরের সমাবেশে কারও কারও মতে বিএনপির সিলেটের সমাবেশের চেয়ে বেশি মানুষ হয়েছে। যদিও সেটি কোনো বিভাগীয় বা জেলা সমাবেশ নয়, সেটি ছিল মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। কিন্তু কোনো কোনো কাগজে, অনলাইনে দেখলাম যে গাজীপুরের সমাবেশের ছবিটা দিয়েছে মঞ্চের এবং দর্শকের একটা অংশ মাত্র। আর বিএনপির সমাবেশের ছবিটা দূর থেকে নিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে মনে হয়, অনেক লোক হয়েছে। অবশ্যই বিএনপির সমাবেশ হবে, সেটি পত্রপত্রিকায় প্রচার পাবে। কিন্তু এ ধরনের উপস্থাপনা সমীচীন কি না, আপনাদের কাছে প্রশ্ন।

এক্ষেত্রে বিএনপির প্রভাব বা অর্থায়ন আছে কি না, এমন প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের কোনো ইনভেস্টমেন্ট আছে কি না কিংবা বিরোধী দল যে জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিরোধী দলের হয়ে সেই জঙ্গিদের কোনো অর্থায়ন আছে কি না, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। তবে আমি আশা করবো যে, শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের এ ধরনের অপসাংবাদিকতা করা উচিত নয়। সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা সমীচীন নয়। অনেক সময় দেখা যায় সাংবাদিকরা হাউজে যে রিপোর্ট, যে ছবি দিয়েছেন সেটি এডিটিং প্যানেলে গিয়ে পরিবর্তন হয়ে যায়। এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া হলে বিএনপি পুরো ঢাকা শহরে সমাবেশ করবে, এ মন্তব্যের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি যে ধরনের গণসমাবেশ করতে চায়, সেজন্য উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে পূর্বাচল। এছাড়া মিরপুর ও বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়েও জায়গা আছে, সেগুলোও অনেকে বলছে। বিএনপি যে সভা সমাবেশ করছে, সরকার তাদের সর্বোতভাবে সহায়তা করছে। গতকাল সিলেট শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশ ছিল, যাতে তারা নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ করতে পারে। আর আমরা যখন সভা-সমাবেশ করতাম, তখন পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিপেটা করতো, কাঁদানেগ্যাস নিক্ষেপ করতো। বিএনপি আমাদের সমাবেশে বোমা ছুড়তো। এটিই হচ্ছে পার্থক্য।

বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হবে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না, নিয়ন্ত্রণ করি না, করাও হবে না। কিন্তু সমাবেশের নামে যদি কেউ বিশৃঙ্খলা করে তাহলে সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের স্বার্থে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। আমরা অতীতেও দেখেছি বিএনপি সমাবেশের নামে নানা জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। বাস ট্রাক পুড়িয়েছে, মানুষ পুড়িয়েছে। আর ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। বিজয়ের মাসে ১০ ডিসেম্বর যদি পাকিস্তানপন্থি বিএনপির লোকজন, মির্জা ফখরুলরা ঢাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায়, জনগণ তাদের পাকিস্তানিদের মতোই আত্মসমর্পণ করাবে।

বিএনপি মহাসচিবের আরেক বক্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, তারেক রহমানের কথা বললেই মানুষ আঁতকে ওঠে। এদেশের মানুষের কাছে তারেক রহমান হচ্ছে দুর্নীতির প্রতীক, সন্ত্রাসের প্রতীক, নৈরাজ্যের প্রতীক। তারেক রহমান দেশকে পরপর দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন করার প্রতীক, হাওয়া ভবনের লুটপাটের প্রতীক এবং দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে উনারা দেশে আন্দোলন করবেন অর্থাৎ তারা আবার জ্বালাও-পোড়াও শুরু করবেন, আবার মানুষ পোড়াবেন। জনগণ এগুলো হতে দেবে না। তারা যতই তারেক রহমানের কথা বলেন, ততই জনগণ দূরে সরে যায়।

সূত্র: জাগোনিউজ
আইএ/ ২০ নভেম্বর ২০২২

Back to top button