দক্ষিণ এশিয়া

রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার আশায় ভোট দিচ্ছে নেপাল

কাঠমান্ডু, ২০ নভেম্বর – রোববার (২০ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়েছে নেপালের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোটগ্রহণের জন্য ১০ হাজার ৮৯২টি পোলিং স্টেশন এবং ২২ হাজার ২২৭টি পোলিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে দেশজুড়ে। একই সঙ্গে অস্থায়ী ১৪১টি বুথ বসানো হয়েছে। ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন, দেশটির প্রায় ৩ লাখ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।

দেশটির ১ কোটি ৮০ লাখ ভোটার ২৭৫ সদস্যের পার্লামেন্ট ও ৩৩০ সদস্যের ৭ টি প্রাদেশিক পরিষদের জন্য ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট (এফপিটিপি) এবং প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন- এই দুই পদ্ধতির সংমিশ্রণে ভোট দিচ্ছেন।

রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার আশায় ভোট দিচ্ছে নেপাল

আশা করা হচ্ছে, এবারের নির্বাচনের পর দেশটিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

৫২ বছর বয়সী এক ভোটার বলছিলেন, ‘আমি ভোট দেবো অর্থনৈতিক উন্নয়ন, চাকরির নিশ্চয়তা, খাদ্য, পোশাক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের জন্য।’

প্রকাশ থামা নামে ২৫ বছর বয়সী আরেকজন ভোটার বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সরকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার।

এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে নেপালের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দল। এসব দল হলো নেপালি কংগ্রেস, দ্য কমিউনিস্ট ইউনিফাইড মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট (ইউএমএল) পার্টি এবং মাওবাদী সেন্টার। প্রতিটি পার্টিই অতীতে ভিন্ন ভিন্ন কোয়ালিশনের নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং দলীয় কোন্দলের কারণে কোনও পার্টিই ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।

রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার আশায় ভোট দিচ্ছে নেপাল

তবে ভোট নিয়ে কোনও জরিপ হয়নি দেশটিতে। যদিও এবারের নির্বাচনে দেশটির নেপালি কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন কোয়ালিশন জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। তবে ফলাফল ঘোষণা হতে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

এদিকে, রোববার দেশটিতে কর্মদিবস হলেও সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে ভোটগ্রহণের জন্য।

করোনা মহামারির কারণে অর্থনৈতিক গোলযোগের মধ্যে পড়ে নেপাল। এরপর থেকেই দেশটিতে জিনিসপত্রের দাম বাড়া শুরু হয়। দুই বছর পর আবারও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে অন্যান্য দেশের মতো নেপালেও বেড়েছে সব পণ্যের দাম। নেপালে ৬ বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চে ৮ শতাংশের বেশি।

এ ছাড়া গত কয়েক বছরে পর্যটকদের আনাগোনা কমেছে দেশটিতে। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে দেশটি ভ্রমণ করেছেন সাড়ে চার লাখ পর্যটক। এই সংখ্যা ২০১৯ সালে করোনা মহামারি শুরুর আগে পর্যটকদের প্রায় অর্ধেক। দেশটির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ মানুষ ২ ডলারের চেয়ে কম আয়ের মধ্যে জীবনযাপন করছে। এমন পরিস্থিতিতে জিনিসপত্রের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতিই ভোটারদের কাছে মূখ্য হয়ে উঠেছে।

সূত্র: জাগোনিউজ
আইএ/ ২০ নভেম্বর ২০২২

Back to top button