জাতীয়

‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ’

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর – বাংলাদেশ শিগগরিই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রেল নেটওয়ার্ক এবং চীনের বেল্ট ও রোড নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশীয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ এই অঞ্চলগুলোতে সরবরাহ ব্যবস্থায় আধিপত্য বিস্তারের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে। সেই হিসেবে বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে এই দেশগুলোর কেন্দ্রস্থলে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারত রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত।

খুব শিগগিরই এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রেল নেটওয়ার্ক এবং চীনের বেল্ট এবং রোড নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
আজ বৃহস্পতিবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ফরমুলেটিং ন্যাশনাল লজিস্টিকস ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট পলিসি ফর বাংলাদেশ : এক্সপেরিয়েন্স ফ্রম গ্লোবাল গুড প্র্যাকটিস’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের ভবিষ্যতে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক কার্গো পরিবহনব্যবস্থা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে, যা মাল্টিমডাল লজিস্টিক মেকানিজমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হবে।

রেলের অবকাঠামো উন্নত করতে বিশাল বিনিয়োগ প্রয়োজন উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে রেল ট্র্যাকের সক্ষমতা উন্নত করার জন্য কাজ করছে। একই সঙ্গে পায়রা ও মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেলসংযোগ উন্নত করার পরিকল্পনা করেছে। যেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেলওয়ে আরো অবদান রাখতে পারে।

সরকার দেশব্যাপী রেল যোগাযোগের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য একটি ৩০ বছরের কর্মসূচি নিয়েছে উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, দক্ষিণের জেলাগুলো এবং উপকূলীয় অঞ্চলগুলোকে বিদ্যমান নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। সারা দেশে ডুয়েলগেজ ও ডাবল ট্র্যাক রেল রোডের কাজ শেষ হলে বাংলাদেশ রেলওয়ে সামগ্রিক লজিস্টিক সিস্টেমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী তাঁর উপস্থাপনায় একটি মাল্টিমোডাল যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপনে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে বলেন, যদিও বাংলাদেশে একটি বৈশ্বিক মানের মাল্টিমোডাল যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন করা সম্ভব হয়নি, তবে ‘জাতীয় সমন্বিত মাল্টিমোডাল যোগাযোগব্যবস্থা নীতি ২০১৩’ অনুসরণ করে এটি স্থাপন করা সম্ভব হতে পারে, যেখানে নীতিমালায় সড়কপথ, রেল, আকাশপথ, সমুদ্র ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

এদিকে বিশ্বব্যাংকের রিজিওনাল কানেক্টিভিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস নলেজ গ্রুপের গ্লোবাল লিড মার্থা বি লরেন্স তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, লজিস্টিকস পারফরম্যান্স ইনডেক্সে ১৬০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। লজিস্টিকস ব্যয় ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনা গেলে দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব। তা ছাড়া যানজট কমিয়ে আনা ও ট্র্যাকিং ব্যবস্থা আধুনিকায়নের মাধ্যমে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা সমন্বয়করণের মাধ্যমে লজিস্টিকস ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব। একটি মাল্টিমোডাল লজিস্টিকস ব্যবস্থা উন্নয়নে রেল ও নৌপথ ব্যবস্থার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের এখনই উপযুক্ত সময়।

সূত্র: কালের কন্ঠ
আইএ/ ১৭ নভেম্বর ২০২২

Back to top button