জেল থেকে বেরিয়ে ফের মাদক কারবারে স্বামী-স্ত্রী
ঢাকা, ১৪ নভেম্বর – কক্সবাজারভিত্তিক মাদক সিন্ডিকেটের হোতাসহ একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (দক্ষিণ)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-চক্রের হোতা মো. শফিক, তার সাবেক স্ত্রী মরিয়ম বেগম ওরফে সুমি ও চক্রের সদস্য মো. সুমন ফকির। তাদের মধ্যে সুমি নিজেকে ক্রাইম রিপোর্টার ও টিভি আর্টিস্ট দাবি করেন।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুব্রত সরকার শুভ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোববার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে মতিঝিল সার্কেল পরিদর্শক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও সূত্রাপুর সার্কেল পরিদর্শক দেওয়ান মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে দুটি দল ডেমরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। ডেমরা থানার পশ্চিম বক্সনগর ও স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে ইয়াবা ও আইস জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, অভিযানে মো. শফিক, মরিয়ম বেগম ওরফে সুমি ও মো. সুমন ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্প্রতি ব্যবহৃত বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের উৎস অনুসন্ধানে তৎপর হয়ে গোপন সংবাদে ইয়াবা-আইস-এলএসডিসহ বিভিন্ন মাদক উদ্ধার করেছে। গত সপ্তাহে আইস পাচারকারী চক্রের হোতা চন্দন রায়কে আটক করার পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার কেন্দ্রিক একটি ইয়াবা-আইস পাচারকারি নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া যায়। যার হোতা মো. শফিক। যাকে এর আগে ১০ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তবে গত আগস্ট মাসে জামিনে বের হয়ে তার সাবেক স্ত্রী ‘অনলাইন জেএননিউজ ডটকম এর সাংবাদিক, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটির সদস্য এবং বাংলাদেশ টিভি ও ফ্লিম আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পরিচয় প্রদানকারী সুমিকে সাথে নিয়ে পুনরায় চক্রকে সক্রিয় করে। প্রথমে ক্রেতা সেজে চক্রের সদস্য সুমনকে ৫০০ পিস ইয়াবাসহ যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শফিক ও সুমির অবস্থান নিশ্চিত করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শফিক জানায়, ২০১৭ সালের দিকে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা পৌঁছানোর কাজ করতো। ২০২০ সালে মরিয়ম বেগম ওরফে সুমিকে ২য় বিয়ে করার পর তাকে নিয়ে ডেমরা এলাকায় ইয়াবা-আইসের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। ইয়াবা পাচার ও বিক্রির জন্য স্ত্রীর সাংবাদিক ও টিভি আর্টিস্ট পরিচয় ব্যবহার করতো তারা। ২০২১ সালের প্রথমদিকে ১০ হাজার ইয়াবাসহ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা বিভাগের হাতে গ্রেপ্তার হয়। ২০২২ এর আগস্টে জামিনে বের হয়ে পুনরায় সক্রিয় হয়। শফিক ইয়াবা ও অত্যন্ত উচ্চমূল্যের মাদক আইস (ক্রিস্টাল মেথ) তার স্ত্রীর মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতো। জিজ্ঞাসাবাদে নারায়ণগঞ্জের চনপাড়া এলাকার মাদকের গডফাদারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র: রাইজিংবিডি
এম ইউ/১৪ নভেম্বর ২০২২