আগুন নিয়ে কারা খেলেছে আমরা জানি
ঢাকা, ০৯ নভেম্বর – বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গণজাগরণ শুরু হয়েছে, জনগণের জোয়ার উঠেছে। জনগণ আমাদের গণসমাবেশে কীভাবে অংশ নিচ্ছেন তা সবাই জানেন। আমরা তো কাউকে কিছু দিচ্ছি না। তবুও মানুষ দু-তিনদিন ধরে রাস্তায় খেয়ে না খেয়ে পড়ে থাকছেন। নারী-পুরুষ সবাই আসছেন।
তিনি বলেন, এটা হলো দেশের প্রতি, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি ভালোবাসা। এখন আমাদের আন্দোলন বিপ্লবের পর্যায়ে চলে গেছে। আমরা সেই বিপ্লব নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।
বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ‘বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস উপলক্ষে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির জন্ম গণতন্ত্রকে মাথায় রেখে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের আস্থায় রেখে পথ চলায়। বিএনপি কেন আগুন নিয়ে খেলবে? বিএনপির সঙ্গে তো মানুষ আছে। কিন্তু অতীতে কারা আগুন নিয়ে খেলেছে, কীভাবে খেলেছে সবই আমরা জানি।
তিনি বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক সরকার ও আইনের শাসন ফিরে আসলে আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার হবে। যারা গুম, খুন ও ক্রসফায়ার বা পুলিশ হেফাজতে হত্যা করেছে, তাদেরও বিচার হবে। যারা ১০ লাখ কোটিরও বেশি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে পঙ্গু করেছে, তাদের বিচার হবে। শেয়ার বাজার লুটেরাদেরও বিচার হবে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অতি অল্পসময়ের মধ্যেই জিয়াউর রহমান দেশের বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব সংস্কার ও উন্নয়ন করেছেন। এটাই জিয়াউর রহমানের বড় বৈশিষ্ট্য। তার সঙ্গে কোনো রাজনীতিবিদের তুলনা হয় না। তার মতো সংস্কার দেশের কোনো শাসক করেনি। সব শাসক এখন করলেও তার সমান হবে না। তাকে জর্জ ওয়াশিংটনের সঙ্গে তুলনা করা চলে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, জিয়াউর রহমান সম্মুখসমরে যুদ্ধ করেছেন। সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তার সঙ্গে তো আর কারও তুলনা হয় না।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বাদ কিন্তু জিয়াউর রহমান দিয়েছেন। যে চিন্তা ও আকাঙ্ক্ষা থেকে যুদ্ধ হয়েছিল, তার স্বাদ ৭ নভেম্বরের পর জাতি পেয়েছে। এরপরই বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই দেশের উন্নয়নের সূচনা লাভ করে। মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন। দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। তার মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিল দেশের সবচেয়ে মেধাবীদের সমন্বয়ে। তিনিই দেশে মেধাবী রাজনীতি শুরু করেছিলেন।
আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের পরবর্তীসময়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে অবশ্যই মেধাভিত্তিক রাজনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে। এজন্যই বিএনপি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের কথা বলছে। যারা পেশিশক্তি দিয়ে রাজনীতি করতে পারে না। অর্থ নেই কিন্তু মেধা আছে, তারা তো সমাজেরই অংশ। তাদের নিয়েও আমরা আপার হাউজ (উচ্চকক্ষ) এবং লোওয়ার হাউজ (নিম্নকক্ষ) সংসদ গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতিতে মেধাবীদের সমন্বয় ঘটবে। এক্ষেত্রে পেশাজীবীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যেখানে নিয়ে গেছেন, সেখান থেকে বের হতে হলে নতুন নতুন চিন্তা করতে হবে।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আপনি নিজেকে কেন এত গণতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক বলছেন এটা মানাচ্ছে না। আপনি একা কর্তৃত্ববাদী শাসক না। আমরা আগেও কর্তৃত্ববাদী শাসন দেখেছি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে কর্তৃত্ববাদী শাসন আমরা দেখেছি। আপনি তার ধারাবাহিক।
জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, জেডআরএফের অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. আবুল কেনান, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সায়েম মনোয়ার, প্রকৌশলী কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নু প্রমুখ।
সূত্র: জাগোনিউজ
আইএ/ ০৯ নভেম্বর ২০২২