উত্তর আমেরিকা

চীনের বিরুদ্ধে কানাডার নির্বাচনে ‘আগ্রাসী’ হস্তক্ষেপের অভিযোগ

অটোয়া, ০৯ নভেম্বর – কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করে বলেন, দেশটির স্থানীয় নির্বাচনে চীন হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে। গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে ‘আগ্রাসী গেম’ খেলা এবং কানাডার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বেইজিং লক্ষ্যবস্তু করেছে।

কানাডার স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল গ্লোবাল নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার সাম্প্রতিক নির্বাচনে বেইজিং-সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে একটি ‘গোপন নেটওয়ার্ক’ কাজ করেছে। কানাডীয় গোয়েন্দারা বেইজিংয়ের এই গোপন নেটওয়ার্ককে শনাক্ত করেছেন।

দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে বলেছেন, ২০১৯ সালের ফেডারেল নির্বাচনেও চীন কমপক্ষে ১১ জন প্রার্থীকে সহায়তা করেছে। অজ্ঞাত গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গ্লোবাল নিউজ বলেছে, নির্বাচনে ওই প্রার্থীদের অর্থায়ন করেছে বেইজিং এবং চীনা কর্মীরা অনেক প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা শিবিরের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।

অন্টারিও-ভিত্তিক প্রাদেশিক এক সংসদ সদস্যের কার্যালয়ের মাধ্যমে ফেডারেল নির্বাচনে অংশ নেয়া এক প্রার্থীকে চীন আড়াই লাখ কানাডীয় ডলার (বাংলাদেশি ১ কোটি ৮৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকার বেশি) সহায়তা করেছে। টরন্টোতে নিযুক্ত চীনা কনস্যুলেটের মাধ্যমে এই অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া নীতিগত দিক থেকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে সংসদ সদস্যদের কার্যালয়ে গোপন নেটওয়ার্কের সদস্যদের নিযুক্ত করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল বলে দাবি করেছে গ্লোবাল নিউজ। দেশটির এই সংবাদমাধ্যম বলেছে, রাজনৈতিক মহলের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের জন্য কানাডার সাবেক কর্মকর্তা ও তাদের সহযোগীদের অর্থের প্রলোভন দেখানোর চেষ্টাও হয়েছে।

কানাডার প্রধান দুই রাজনৈতিক দল জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টি এবং বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টিকে লক্ষ্যবস্তু করে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই অভিযান সফল হয়েছে কিনা তা পরিষ্কার নয়। অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে গ্লোবাল নিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও কানাডায় নিযুক্ত চীনা কর্মকর্তারা কোনো সাড়া দেননি।

ট্রুডো বলেছেন, আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা নিয়েছি। কানাডার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, নির্বাচন ও প্রতিষ্ঠানে যেকোনো ধরনের বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্রীয় ক্রীড়ানকদের— সেটা চীন অথবা অন্যান্য দেশ হোক না কেন, আমাদের গণতন্ত্র, আমাদের প্রতিষ্ঠান নিয়ে আগ্রাসী গেম খেলতে দেখছি।

কানাডার ভূখণ্ডে চীন গোপনে পুলিশ স্টেশন স্থাপন করেছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। গত মাসে রয়্যাল কানাডীয় মাউন্টেড পুলিশ জানায়, তথাকথিত পুলিশ স্টেশনের সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনা তারা তদন্ত করছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশে চীনের এই গোপন পুলিশ স্টেশন রয়েছে বলে সেই সময় কানাডার পুলিশ জানায়।

আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস-সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কয়েকটি দেশটির ইতোমধ্যে চীনকে গোপন পুলিশ স্টেশন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। বিদেশে অবস্থানরত ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন-পীড়ন এবং দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য চীন সরকার এই গোপন পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৯ নভেম্বর ২০২২

Back to top button