যশোরে ৮১ পিস সোনার বার জব্দ, নারীসহ আটক ৪
যশোর, ০৭ নভেম্বর – যশোরের শার্শা ও বেনাপোল সীমান্তের আলাদা তিনটি স্থান থেকে ৮১ পিস সোনারবারসহ ১ নারী ও ৩ পুরুষ পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি, কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও শার্শার গোড়পাড়া ক্যাম্প পুলিশ।
উদ্ধারকৃতন সোনার বারের ওজন ৯ কেজি ২৫ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ৬ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
সর্বশেষ সোমবার দুপুরে ভারতে পাচারের সময় যশোরের শার্শার গোড়পাড়া থেকে ৭ কেজি ২৫ গ্রাম ওজনের ৬২ পিস সোনার বারসহ দুই সোনাপাচারকারীকে আটক করে গোড়পাড়া ক্যাম্পের পুলিশ।
সোমবার দুপুর ২টার সময় গোড়পাড়ার আমতলা নামক স্থান থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো, নাইম হোসেন ও আজহারুল ইসলাম। আটক আসামি ২ জনই শার্শা উপজেলার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানায়। তবে এ বিষয়ে থানা পুলিশ মঙ্গলবার যশোরে প্রেস বিফ্রিং করে বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলে জানান শার্শা থানার ওসি মামুন খান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে সোনার বড় এই চালানটি আটক করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে একইদিন সকালে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন থেকে ৯টি সোনারবারসহ সিদ্দিকুর রহমান (৪৬) নামে এক বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীকে আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের সদস্যরা। সকালে ভারতে প্রবেশের সময় তাকে আটক করা হয়।
আটক সোনা পাচারকারী সিদ্দিকুর রহমান বরগুনা জেলার বামনা থানার সিংড়াবুনিয়া গ্রামের আব্দুল গনি মোল্লার ছেলে।
বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে এক যাত্রী সোনার একটি চালান ভারতে পাচার করবে, এমন গোপন খবরে বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের সদস্যরা ইমিগ্রেশন এলাকায় অবস্থান নেয়। এবং সন্দেহভাজন সিদ্দিকুর নামে ওই যাত্রী তার পাসপোর্টের সকল কার্যক্রম শেষ করে ভারতে প্রবেশের সময় তাকে আটক করা হয়।
পরে তল্লাশি করে তার পরিহিত প্যান্টের ভেতর বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় ৯ টি সোনারবার উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত সোনার ওজন এক কেজি ৪৪ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ৮০ লাখ টাকা।
আটক সোনাসহ মামলা দিয়ে পাচারকারীকে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত রোববার রাতে ভারতে পাচারের সময় বেনাপোল সীমান্ত থেকে রত্না খাতুন (৩৪) নামে এক নারীকে ১ কেজি ১৬৬ গ্রাম ওজনের ১০ পিচ সোনারবারসহ আটক করে বিজিবি সদস্যরা।
রাত ৯ টার সময় বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পুটখালি সীমান্ত থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক রত্না খাতুন বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পুটখালি গ্রামের কামাল হোসেনের স্ত্রী।
এ বিষয়ে খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি পুটখালি গ্রামের আয়না খাতুনের কলাবাগানের মধ্যে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্য বিপুল পরিমাণ সোনা নিয়ে অবস্থান করছে।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে রত্না খাতুন নামে সন্দেহ ভাজন এক নারীকে আটক করা হয়। এসময় নারী বিজিবি সদস্য দিয়ে তার দেহ তল্লাশি করে গোপন স্থানে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা ১ কেজি ১৬৬ গ্রাম ওজনের ১০ পিচ সোনার বার উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ১ কেজি ১৬৬ গ্রাম সোনার আনুমানিক বাজার মূল্য ৮২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। আটক আসামির বিরুদ্ধে সোনার চোরাচালান আইনে মামলা দিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে খুলনা ব্যাটালিয়নের দায়িত্বাধীন সীমান্ত এলাকা থেকে ১৭টি চালানে ২১ জন আসামীসহ সর্বমোট ৪০ কেজি ৪শ গ্রাম সোনারবার আটক করা হয়েছে। যার মূল্য ২৮ কোটি ৯০ লাখ ৭৩ হাজার ৬৪৮ টাকা। চোরাচালান প্রতিরোধে খুলনা ব্যাটালিয়ন (২১ বিজিবি), শার্শা থানা পুলিশসহ সীমান্তের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সর্বদা তৎপর রয়েছে বলে জানান নাভারণ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৭ নভেম্বর ২০২২